সুগন্ধি ধানের সুবাসে শেরপুরের নালিতাবাড়ী
উপজেলার কৃষকের মুখে হাসি ফুটে উঠেছে। সুগন্ধি তুলসীমালা ও চিনিগুঁড়া
ধানচাষ করে খরচ কম এবং ভালো দাম পাওয়ায় মহাখুশি তারা। সুগন্ধি ধান এ
অঞ্চলের একটি ঐতিহ্য হিসেবে জেলা ভিত্তিক ব্র্যান্ডিং পণ্য তুলসীমালাকে
স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।
উপজেলা কৃষি অফিস ও কৃষকের সাথে কথা বলে জানা গেছে, চলতি আমন মৌসুমে
দেড়হাজার হেক্টর জমিতে তুলসীমালা ও একহাজার হেক্টর জমিতে চিনিগুঁড়া ধানের
আবাদ হয়েছে। উপজেলার নালিতাবাড়ী, কলসপাড়, যোগানীয়া, বাঘবেড়, কাকরকান্দি,
রামচন্দ্রকুড়া, রুপনারায়নকুড়া ও মরিচপুরান ইউনিয়নে এ ধানের আবাদ বেশি হয়ে
থাকে। এক একর জমিতে সুগন্ধি ধান চাষ করতে খরচ হয় ১৫-২০ হাজার টাকা। আর
ধান পাওয়া যায় ৩০-৩৫ মন করে। সে হিসাবে কৃষকের লাভ থাকে ২৫-৩০ হাজার
টাকা।
এ মৌসুমে খেতে পোকামাকরের আক্রমণ ও আবহাওয়া ভালো থাকায় অল্প খরচেই কৃষকরা
ফলন ঘরে তুলতে পেরেছেন। উপজেলায় একসপ্তাহ ধরে বাজারে এ ধান উঠতে শুরু
করেছে। বর্তমান বাজারে তুলসীমালা ও চিনিগুঁড়া ধান দেড় হাজার টাকার বেশি
বিক্রি হচ্ছে। সামনে এ ধানের দাম আরো বাড়তে পারে বলে ব্যবসায়ীরা জানান।
সুগন্ধি ধান নিজেদের সুগন্ধে মাতিয়ে ঐতিহ্য ধরে রেখেছে। তুলসীমালা চাল
দেশ জুড়ে বিখ্যাত। অভিজাত শ্রেণির অনুষ্ঠানে, অতিথি আপ্যায়নে পোলাও,
বিরিয়ানী, পায়েস, খিচুড়ি, পিঠা ও অন্যান্য খাবার তৈরিতে রসনার তৃপ্তি
মেটাচ্ছে তুলসীমালা ও চিনিগুঁড়া চাল। এ চাল চিকন ও সুস্বাদু।
বিন্নিবাড়ী গ্রামের মো. রেজাউল করিম (৬০) বলেন, আমি এ বছর ১৮ কাঠা জমিতে
তুলসীমালা ধান আবাদ করেছিলাম। ফলন ভালো হওয়ায় আগামীতে আরো বেশি করে আবাদ
করবো। বাজারে এ ধানের দামও ভালো, ১৬৫০ টাকা মন দরে বিক্রি করেছি।
পৌর শহরের ধান ব্যবসায়ী লিটন বিশ্বাস বলেন, বর্তমানে আমরা ভিজা ধান
তুলসীমালা ১৬৫০ টাকা দরে কৃষকের কাছ থেকে কিনছি। আর চিনিগুঁড়া কিনছি ১৫৫০
টাকা দরে। সামনে শুকনা ধানের বাজার আরো বাড়বে। সুগন্ধি এ ধানের চাহিদা
সারা দেশের সব যায়গাতেই থাকায় বিক্রি করতে সমস্যা হয় না।
নালিতাবাড়ী উপজেলা কৃষি অফিসার মো. আলমগীর কবীর বলেন, ফলন ভালো ও ধানের
বাজার দর ভালো হওয়ায় তুলসীমালা ধানে কৃষকের আগ্রহ বেড়েছে। কৃষি বিভাগ
তৎপর থাকায় রোগবালাই নেই বললেই চলে। সুগন্ধি ধানের আবাদ বাড়াতে কৃষি
বিভাগ সব সময়ই কৃষকদের পাশে আছে।