চতুর্থ ধাপের ইউপি নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা লক্ষ্মীপুরে পৃথক পৃথক স্থানে সংঘর্ষে ১৫ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়াগেছে। বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার ইউপি নির্বাচনী বেশ কয়েকটি ইউনিয়নে এ সংঘর্ষ হয়। এ সময় আহত হন ১৫ জন। স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে সদর হাসপাতালসহ ক্লিনিকে চিকিৎসা দিয়েছেন।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান,বৃহস্পতিবার (১৬ ডিসেম্বর) দুপুরে সদর উপজেলার চরশাহী ইউনিয়নে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলমের কর্মীদের সঙ্গে বিদ্রোহী প্রার্থী গোলজার মোহাম্মদের হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। এ সময় আহত হন ৫ জন। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এ ছাড়া শাকচর,ভবানীগঞ্জ, দত্তপাড়াসহ বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের হামলা সংঘর্ষের ঘটনায় আরো আহত হন আরো ১০ জন।
স্থানীয়রা জানান, ঘটনার সময় গোলজার দক্ষিণ নুরুল্লাপুর এলাকায় প্রচারণায় যান পাশেই নৌকার প্রার্থীর নির্বাচনী কার্যালয়ে কয়েকজন কর্মী বসা ছিলেন। তাৎক্ষণিক আওয়ামী লীগের কর্মী ও সমর্থকরা সেখানে জড়ো হতে থাকেন। এ সময় গোলজারের সঙ্গে তারা জড়িয়ে পড়েন। তবে ভিডিওতে দেখা যায় গোলজার হ্যান্ড মাইকে সবাইকে শান্ত করার চেষ্টা করছেন।
জানতে চাইলে বিদ্রোহী প্রার্থী গোলজার মোহাম্মদ বলেন, আমার প্রচারণার সময় নৌকার কার্যালয়ে সাউন্ডবক্সে উচ্চৈঃস্বরে গান বাজানো হয়। কিছুক্ষণের জন্য তা বন্ধ করতে বলে তারা আমার কর্মীদের সঙ্গে ঝামেলা সৃষ্টি করে। তবে আমি সবাইকে শান্ত করার চেষ্টা করেছি।
এ ব্যাপারে চরশাহী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের রির্টানিং কর্মকর্তা ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবু তালেব এ বিষয়ে এখনো কেউ লিখিতভাবে অভিযোগ করেন নাই বলে জানান।
প্রতিদ্বন্ধি নৌকা প্রতিকের প্রার্থী এমরান হোসেন নান্নু ও তার কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করেন ওই ইউনিয়নের স্বতন্ত্র প্রার্থী নজরুল ইসলাম। শুক্রবার (১৭ ডিসেম্বর) দুপুরে স্বতন্ত্র প্রার্থী তার নির্বাচনী কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে এ অভিযোগ করে বলেন, নৌকার প্রার্থীর লোকজন বিভিন্ন ভাবে তার আনারস প্রতিকের কর্মীদের ও তাকে হুমকি-ধামকী দিচ্ছে। এ ছাড়া প্রচার প্রচারণায় বাধাসহ নির্বাচনী পোস্টার ছিঁড়ে ফেলে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে।
রাতে সদর উপজেলার শাকচর ইউনিয়নের পূর্ব শাকচর গ্রামে নির্বাচনে নৌকা প্রতিকের প্রার্থীর উঠান বৈঠকে আওয়ামী লীগ নেতা মো. কামাল হোসেনকে (৪৮) দুর্বৃত্তরা কুপিয়ে জখম করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সময় চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। আহত কামাল ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি। তিনি নৌকা প্রতিকের প্রার্থী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহফুজুর রহমানের পক্ষে সক্রিয়ভাবে নির্বাচনী কাজ করছেন। আওয়ামী লীগের প্রার্থী মাহফুজুর রহমান বলেন, হামলাকারীদের কাউকে চিনতে পারেনি। যারা ঘটনাটি ঘটিয়েছে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রশাসনের কাছে তাদের উপযুক্ত বিচার দাবি করছি।
সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত (ওসি) জসিম উদ্দিন বলেন, কয়েকটি ঘটনা শুনেছি। তবে থানায় কোন অভিযোগ করা হয়নি। আহত ব্যক্তি হামলাকারীদের কাউকে চিনতে পারেননি। ঘটনাটি তদন্ত চলছে।