খুলনার পাইকগাছায় কপিলমুনি পঞ্চাশোর্ধ স’মিল মালিকের লালসার শিকার অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী অন্তঃসত্ত্বা অতঃপর ভ্রুণ নষ্টের ঘটনায় কিশোরীর মা বাদী হয়ে থানায় এজাহার দাখিল করলেও এখন পর্যন্ত তা রেকর্ড করেনি থানা পুলিশ। স্থানীয় পুলিশ বলছে, আসামি গ্রেফতার সাপেক্ষে মামলাটি রেকর্ড করা হবে। এদিকে ধর্ষণে অন্তঃসত্ত্বার বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর থেকে পলাতক রয়েছে লম্পট বখতিয়ার ঢালী। তবে তার স্ত্রী ঢাকা থেকে বাড়ী ফিরে তার কপিলমুনিস্থ স’মিলটি চালু করেছে। চাঞ্চল্যকর এ ঘটনায় ফুঁসে উঠেছে এলাকাবাসী। সর্বশেষ বখতিয়ার এলাকায় না ফেরা পর্যন্ত স’মিলটি বন্ধ রাখতে স্থানীয় প্রশাসনের প্রতি জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন স্থানীয়রা। এদিকে হতদরিদ্র দিনমজুর পিতার কিশোরী মেয়েকে ধর্ষণে অন্তঃসত্ত্বার ঘটনাটিকে ধামাচাপা দিতে স্থানীয় একটি মহলকে ম্যানেজ করে পার পাওয়ার চেষ্টা করছে বখতিয়ার ও তার পরিবার। প্রথমত বিষয়টি চাউর হলে কৌঁশলে অন্তঃসত্ত্বা মেয়েকে ফুসলিয়ে পাইকগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জনৈকা নার্সের ভাড়া বাসায় নিয়ে ভ্রুণ নষ্ট করিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দিলেও এলাকায় নানাবিধ চাপের মুখে গা ঢাকা দিয়েছে বখতিয়ার। তবে শনিবার থেকে বখতিয়ারের স্ত্রীর নেতৃত্বে তার মালিকানাধীন স’মিলটি ফের চালু করা হয়েছে। আর এ ঘটনায় নকুন করে ফুঁসে উঠেছে স্থানীয় বিক্ষুব্ধরা। কপিলমুনি পুলিশ ফাঁড়ির এসআই মো. আবদুল আলীম জানান, থানায় একটি এজাহার দাখিল হয়েছে। তবে আসামি গ্রেফতার সাপেক্ষে এজাহারটি রেকর্ড করা হবে। ঘটনায় থানায় এজাহার দাখিল ও তা রেকর্ড না হওয়ায়, স্থানীয় পুলিশের রহস্যজনক মন্তব্য ও ধর্ষক আত্মগোপণে থেকে স্ত্রীকে স’মিল চালুর ঘটনায় এলাকাবাসীর ক্ষোভ ক্রমশ দানা বেঁধে উঠছে। ধারণা করা হচ্ছে, ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর থেকে প্রতিটি ঘটনার একটির সাথে অপরটি সম্পৃক্ত। এ ছাড়া ভিকটিম’র পরিবার দিনমজুর অতি দরিদ্র পরিবারের হওয়ায় বিষয়টিকে ক্রমান্বয়ে ধামাচাপা দেওয়ার এটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। এজহারে উপজেলার হরিঢালী ইউনিয়নের নগরশ্রীরামপুর গ্রামের রেজাউল গাজীর স্ত্রী মর্জিনা বেগম উল্লেখ করেন যে, তার মেয়ে স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী দীর্ঘ দিন ধরে বাড়ির নিকটবর্তী জনৈক বখতিয়ারের স’মিলে কাজের সুবাদে যাতায়াত ছিল। যার একপর্যায়ে বয়স কম হওয়ায় তাকে বিয়ের প্রলোভনে তার সাথে প্রথমত প্রেম ও পরে জোরপূর্বক শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলে। বিভিন্ন সময় বখতিয়ার তাকে তার স’মিলের ইঞ্জিনরুমের মধ্যে নিয়ে ধর্ষণ করে এতে সে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে বলে এজাহারে জানায়। এজাহারে তিনি আরো উল্লেখ করেন যে, গত ১২ ডিসেম্বর তার মেয়ের পেট উঁচু দেখে তার সন্দেহ হলে তাকে জিজ্ঞাসাবাদে বখতিয়ার কর্তৃক কথিত প্রেমজ সম্পর্ক ও তার দ্বারা ধর্ষণে গর্ভবতী হওয়ার বিষয়টি জানায়। সে আরো জানায় যে, বখতিয়ার সর্বশেষ গত ২ অক্টোবর সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে তাকে ডেকে নিয়ে তার মিলের ইঞ্জিনরুমের মধ্যে ফেলে ধর্ষণ করে। এরপর তাকে নিয়ে প্রথমত স্থানীয় জনৈক ডাক্তারের কাছে নিলে তিনি প্রাথমিকভাবে অন্তঃসত্ত্বার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। ঘটনাটি বখতিয়ার জানতে পেরে তা ধামাচাপা দিতে গত ১৬ ডিসেম্বর সন্ধ্যা আনুমানিক ৬ টার দিকে তার মেয়েকে কৌশলে ফুসলিয়ে পাইকগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জনৈকা নার্সের ভাড়াবাসায় নিয়ে গর্ভপাত ঘটায়। সর্বশেষ ঘটনায় লোকলজ্জার ভয়ে অসুস্থ স্কুলছাত্রীসহ তার পরিবার বাড়ি থেকে বের হতে পারছেনা। সর্বশেষ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনার নায়ক বখতিয়ারকে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে জানতে চাইলে সে জানায়, বিষয়টি মিথ্যা। তার বিরুদ্ধে কারোর কোন অভিযোগ থাকলে থানায় মামলা করার জন্যও পরামর্শ দেন তিনি। তবে সর্বশেষ রোববার তার বিরুদ্ধে থানায় এজাহারের ব্যাপারে জানতে ফোন দেওয়া হলেও ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। এ ব্যাপারে স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. মুজাহিদ হাজরার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি শুনেছেন। তবে বখতিয়ার এলাকাছাড়া রয়েছে বলে জানান তিনি।