প্লাজমা ফিউশনে বড় এক রিশ্বরেকর্ড করেছে চীনের ‘কৃত্রিম সূর্য’ বলে পরিচিত টোকোমাক পারমাণবিক চুল্লি। সাত মাস আগে তারা এই পরীক্ষার ঘোষণা দিয়েছিল। অবশেষে তা সম্পন্ন করার ঘোষণা দিয়েছে চাইনিজ একাডেমি অব সায়েন্সেস। টোকোমাক চুল্লি ১০৫৬ সেকেন্ডে ১২ কোটি ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বজায় রেখে প্লাজমা লুপ সৃষ্টি করে। ইন্সটিটিউট অব প্লাজমা ফিজিক্স এক রিপোর্টে এ তথ্য দিয়েছে। এর ফলে আগের প্লাজমা ফিউশনের রেকর্ড ভঙ্গ হয়েছে। ২০০৩ সালে ফ্রান্সে টোরে সুপ্রা টোকামাক ৩৯০ সেকেন্ডের জন্য এমন রেকর্ড গড়েছিল। তাদের সেই ভেঙে দিয়েছে এক্সপেরিমেন্টাল এডভান্সড সুপারকন্ডাকটিং টোকামাক বা এইচটি-৭ইউ বা ইএএসটির চুল্লি।
পারমাণবিক ফিউশনের মাধ্যমে ব্যবহারযোগ্য বিদ্যুত উৎপাদনে সফলতা এলে তাতে বদলে যাবে বিশ্ব।
কিন্তু তা অর্জন করা অবিশ্বাস্যরকম চ্যালেঞ্জিং। একটি নক্ষত্রের ভিতরে যেসব প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়, এতে সেগুলোই অনুসরণ করা হয়। সেখানে অতি উচ্চ চাপ ও তাপমাত্রায় প্রচ- চাপে থাকে অনু-পরমাণু। এতটাই শক্তিশালীভাবে সেগুলো লেগে থাকে, যার ফলে নতুন পদার্থ সৃষ্টি হয়। প্রধানতম নক্ষত্রগুলোতে এগুলো হলো হাইড্রোজেন। এগুলো ফিউজ হয়ে হিলিয়াম গঠন করে। চারটি হাইড্রোজেন নিউক্লিয়াসের তুলনায় একটি হিলিয়াম নিউক্লিয়াস অনেক কম ভারি। অতিরিক্ত ভর তাপ ও আলোকশক্তি হিসেবে নিঃসরণ হয়। এর ফলে সৃষ্টি হয় অসীম পরিমাণ শক্তি। এই ঘটনাটি ঘটে নক্ষত্রের কেন্দ্রে। এখন বিজ্ঞানীরা সেই প্রক্রিয়া পৃথিবীতেই চালু করার চেষ্টা করছেন। স্পষ্টতই একটি নক্ষত্রে যে পরিমাণ তাপ পরিলক্ষিত হয় সেই পরিমাণ তাপ ও চাপ সৃষ্টি করা একটি উল্লেখযোগ্য চ্যালেঞ্জ। এ বিষয়টি নিয়ে আছে বিভিন্ন প্রযুক্তি।
টোকামাক চুল্লিতে প্লাজমাকে অতি উত্তপ্ত হয়। টোরাস বা একটি ডোনাটের মতো আকৃতি পায় শক্তিশালী বৈদ্যুতিক ক্ষেত্রের কারণে।