আগের ন্যয় পঞ্চম ধাপের নির্বাচনেও অনিয়ম, সহিংসতা, কেন্দ্র দখল ও সংঘর্ষের মধ্যে রাজশাহীর দুই উপজেলার ১৯ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নির্বাচন শেষ হয়েছে। এ নির্বাচনে রাজশাহীতে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের জয়জয়কার দেখা গেছে। এ ধাপে রাজশাহী জেলার ১৯টি ইউনিয়নের মধ্যে বেসরকারি ফলে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনিত নৌকা প্রার্থীরা জয় পেয়েছেন মাত্র ৬ টিতে। তবে বৃহৎ এ রাজনৈতিক দলটির মনোনয়নবঞ্চিত ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থীরা স্বতন্ত্র হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিজয়ী হয়েছেন আরো ৬ টি ইউনিয়নে। আর বিএনপি সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরাও জয় পেয়েছেন সমান ছয়টি ইউনিয়নে। তবে পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বর ইউনিয়ন পরিষদের একটি কেন্দ্রের ভোট স্থগিত করায় ওই ইউপির নির্বাচনী ফলাফল স্থগিত করা হয়েছে।
এ তথ্য নিশ্চিত করে রাজশাহী জেলার সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম বৃহস্পতিবার (৬ জানুয়ারি) জানান, বুধবার (৫ জানুয়ারি) সকাল ৮টায় রাজশাহীর তিন উপজেলার ১৯টি ইউনিয়ন পরিষদে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। এর মধ্যে বাগমারা উপজেলার ১৬টি, পুঠিয়ায় দুইটি এবং দুর্গাপুরের একটি ইউনিয়নে ভোটগ্রহণ করা হয়। তবে পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বর ইউনিয়ন পরিষদের একটি কেন্দ্রের ভোট স্থগিত করায় ওই ইউনিয়নের নির্বাচনি ফল স্থগিত করা হয়েছে। বাকি ইউপিগুলোতে বিকেল ৪টা পর্যন্ত একটানা ভোট নেওয়া হয়। আর ভোটগণনা শেষে বেসরকারিভাবে ফলাফল ঘোষণা করা হয়।
এদিকে ঘোষিত ফলে দেখা গেছে, বাগমারা উপজেলার ১৬টি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রার্থীরা জয় পেয়েছেন পাঁচটিতে। আর স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পাঁচটি ইউনিয়নে বিজয়ী হয়েছে বিএনপি নেতারা। বাকি ছয়টিতে জয় পেয়েছেন আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থীরা। বেসরকারিভাবে প্রাপ্ত ফলে এ উপজেলায় নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত হয়েছেন নরদাশ ইউনিয়নে গোলাম সারোয়ার আবুল, শ্রীপুরে মকবুল হোসেন মৃধা, বাসুপাড়ায় লুৎফর রহমান, গোয়ালকান্দিতে আলমগীর সরকার ও সোনাডাঙ্গায় অধ্যক্ষ আজাহারুল হক। আর এই উপজেলায় নৌকার ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী হিসেবে জয় পেয়েছেন দ্বীপপুর ইউনিয়নে বিকাশ চন্দ্র ভৌমিক, কাছারি কোয়ালিপাড়ায় মোজাম্মেল হক, মাড়িয়া ইউনিয়নে রেজাউল হক, ঝিকরায় রফিকুল ইসলাম, হামিরকুৎসায় আনোয়ার হোসেন ও যোগীপাড়ায় মাজেদুর রহমান সোহাগ। আর বাকি পাঁচ ইউনিয়নে জয় পেয়েছেন স্বতন্ত্র হিসেবে লড়াই করা বিএনপি প্রার্থীরা। তারা হলেন- গোবিন্দপাড়ায় হাবিবুর রহমান, বড়বিহানলী ইউনিয়নে মাহমুদুর রহমান মিলন, আউচপাড়ায় ডি এম শাফি, শুভডাঙ্গায় মোশারফ হোসেন ও গণিপুরে অ্যাডভোকেট মনিরুজ্জামান রঞ্জু।
এদিকে, পুঠিয়া উপজেলার বেলপুকুর ইউনিয়নে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী বদিউজ্জামান বদি। আর দুর্গাপুর উপজেলার মাড়িয়া ইউনিয়নে জয় পেয়েছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম স¤্রাট।
অন্যদিকে পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বর ইউনিয়নের ১১ ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ১০টির ফল ঘোষণা করা হয়েছে। এতে বিএনপি সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুর রাজ্জাক দুলাল ১১ হাজার ৯৪ ভোট পেয়ে এগিয়ে রয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ পেয়েছেন ৯ হাজার ৯৩ ভোট। আর স্থগিত হওয়া কেন্দ্রটিতে ভোটার সংখ্যা ২ হাজার ৮৪৪ জন। ফলে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী এগিয়ে থাকলেও ভোটের মাঠে নৌকা প্রার্থীরও জয়ের সুযোগ রয়েছে।