ইংরেজী নববর্ষ উযযাপনে আতশবাজি যেন এখন আকর্ষণের মূল কেন্দ্রবিন্দু। সেই আকর্ষণ থেকেই সারা বিশ্বের ন্যায় কিশোরগঞ্জের ভৈরবে ইংরেজি নববর্ষ উযযাপনে পৌর শহরের প্রতিটি অলিগলি ও পাড়া মহল্লায় ছোট-বড় বিভিন্ন রকমের আতশবাজি ও পটকার ব্যাপক আয়োজন করা হয়। ৩১ডিসেম্বর সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসতেই আতশবাজি ফুটানো হয় শহর জুরে। ইংরেজি নববর্ষ উযযাপনের আনন্দের মাঝে পৌর শহরের ভৈরবপুর উত্তরপাড়া এলাকার ঘটে এক হৃদয়বিদারক দূর্ঘটনা। আতশবাজির বিকট শব্দে আতঙ্কিত হয়ে মায়ের কাছে দৌড়ে যাওয়ার সময় গরম পানিতে পড়ে যায় দুই বছরের শিশু ইউসুফ! পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার দিবাগত রাতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে ইউসুফ। নিহত ইউসুফ স্থানীয় ডিস লাইন ব্যবসায়ী আলমগীর মিয়ার নাতি ও তার বাবার নাম হৃদয় মিয়া। নিহত ইউছুফ ছিল হৃদয় এর এক মাএ সন্তান। নিছক দূর্ঘটনায় শিশু ইউসুফের এমন মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে স্থানীয় এলাকাবাসীর মাঝে।
নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, থার্টি ফার্স্ট নাইট উযযাপন উপলক্ষে ভৈরবপুর উত্তরপাড়ার মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন ঘনবসতি এলাকায় সরু গলিতে সন্ধ্যা থেকে ছোট বড় আতশবাজি ও পটকা ফুটানো শুরু হয়। সন্ধ্যা ৬ টার দিকে বিরতিহীন ভাবে ফুটানো আতশবাজির শব্দে আতঙ্কিত হয়ে পড়ে শিশু ইউসুফ। এ সময় শিশুটির মা নিজেদের পারিবারিক রান্নাঘরে গৃহস্থালীকাজে ব্যস্ত ছিলেন। তখন শিশু ইউসুফ বিকট শব্দে ভয় পেয়ে তার মায়ের কাছে দৌড়ে যাওয়ার সময় পা পিছলে রান্নাঘরের পাতিলে রাখা গরম পানিতে পড়ে যায়। এতে তার সারা শরীর ঝলসে যায়। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে স্থানীয় একটি বেসরকারি ক্লিনিকে নিয়ে গেলে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। সেখানে পাচঁদিন চিকিৎসাধীণ থাকার পর বৃহস্পতিবার রাতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে শিশু ইউসুফ। শুক্রবার বাদ জুম্মাবার ভৈরবপুর ঈদগাহ মাঠে জানাযা শেষে পৌর কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
শিশু ইউসুফের এমন মর্মান্তিক মৃত্যুতে বিদেশী সংস্কৃতির দেশী চর্চাকে দায়ী করছেন স্থানীয় সচেতন মহলের বাসিন্দারা। তারা বলছেন, শুধু থার্টি ফার্স্ট নাইটেই নয় যেকোনো উৎসবেই আতশবাজি-পটকা ফুটানো এখন ফ্যাশন হয়ে দাড়িয়েছে যা বিদেশী সংস্কৃতির অংশ বিশেষ। আর এসব বিদেশী সংস্কৃতির দেশীয় চর্চাকে বিপদজনক উল্লেখ করে প্রশাসনিক নজরধারি বৃদ্ধির দাবি করেছেন সচেতন মহলের বাসিন্দারা।