পঞ্চগড়ে ছাত্রলীগ-যুবলীগসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতা বা কর্মী পরিচয়ে চাঁদাবাজীর সংখ্যা বাড়ছে। কার্ডধারী সাংবাদিক ও তাদের বানানো ভুঁইফোড় দু-একটি সাংবাদিক সংগঠনের সভাপতি, সম্পাদক পরিচয়েও চাঁদা আদায়ের অভিযোগ রয়েছে।
সভা-সেমিনার, খেলা-ধূলা, চা খাওয়াসহ নানান অজুহাতে চাঁদা আদায় করছে পরিচয়ধারী চাঁদাবাজরা। এই চাঁদা আদায়ের ক্ষেত্র হিসেবে বেঁছে নেওয়া হয়েছে, বিভিন্ন বেসরকারী এনজিও, সরকারী বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কল-কারখানা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, অবৈধভাবে গড়ে ওঠা ইটভাটাসহ সরকারী-বেসরকারী উন্নয়ন প্রকল্প প্রতিষ্ঠানগুলোকে। সরকারী বিভিন্ন দফতরও রয়েছে এই তালিকায়। কিছু ক্ষেত্রে দুর্নীতিমুক্ত থেকেও সু-কৌশলী পরিচয়ধারী চাঁদাবাজদের কথার বেড়াজালে কিছুটা সামাজিকতা রক্ষায় আপ্যায়ন করতে বাধ্য হলেও কিছু ক্ষেত্রে কিছু অফিসার বাধ্য হয়েই আপ্যায়ন করেন এই চাঁদাবাজদের। সামাজিকতা রক্ষায় আপ্যায়নের অর্থ নিজের পকেট থেকে দেওয়া হলেও বাধ্য হয়ে দেওয়া অর্থ, দেওয়া হয় জনগণের পকেট কেটে।
সরজমিনে জেলায় একাধিক ব্যবসা, শিল্প প্রতিষ্ঠান, বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প প্রতিষ্ঠানসহ কিছু সরকারী অফিসে এই নামধারী চাঁদাবাজদের সরব উপস্থিতি দেখা যায়। তবে ইটভাটা, কিছু ব্যবসা ও কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এর প্রভাব থাকে মৌসুমি। সম্প্রতি চাঁদাবাজদের মুখোমুখি হওয়ার তিক্ত অভিজ্ঞতা প্রকাশ করতে গিয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বন বিভাগের একজন কর্মকর্তা বলেন, অফিসে আমাদের মিটিং চলাকালীন দুইজন ছেলে এসে বলছে, ওদের কিসের যেন প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন করবে চাঁদা দিতে হবে। মিটিং চলাকালীন সময়ে বার বার কথা বলায় খুব বিরক্তবোধ করছিলাম। বললাম, আমি কিভাবে চাঁদা দিবো ? আমি কি দুর্নীতি করি ? আর যদি করেও থাকি তাহলে আমার জন্য করি, তোমাদের দেওয়ার জন্য নয়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে সড়ক ও জনপথ বিভাগের একজন কর্মকর্তা বলেন, প্রায় সময় বিভিন্ন অজুহাতে চাঁদা চাওয়ার প্রবণতা বেড়েছে। চাঁদা দিতে না চাইলে অনেক সময় তারা উগ্র মনোভাব দেখানোর পাশাপাশি হুমকি-ধমকিও দিয়ে যায়। একই চিত্র পঞ্চগড় সদর উপজেলা সেটেলমেন্ট অফিসে। ভুক্তভোগীরা জানান, চাঁদাবাজদের উপদ্রব বেড়ে যাওয়ায় বিভিন্ন অপ্রীতিকর ঘটনার পাশাপাশি সরকারি কাজেও বিঘœ ঘটছে প্রতিনিয়ত।
এ ব্যাপারে পঞ্চগড় পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান কাজী আল তারিক বলেন, পঞ্চগড়ে ছাত্রলীগ যুবলীগসহ সকল অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা অত্যন্ত সু-শৃংখল। চাঁদাবাজীতে ছাত্রলীগ, যুবলীগসহ আওয়ামী লীগের কোন নেতা-কর্মী জরিত নয়। চাঁদাবাজদের কোন দল নেই। তারা আওয়ামী লীগের নাম ভাঙ্গিয়ে চাঁদাবাজী করছে। এদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে।
এ ব্যাপারে পঞ্চগড় সদর থানার অফিসার ইনচার্জ আবদুল লতিফ মিঞ্চা মুঠোফোনে বলেন, এ ধরণের কোন অভিযোগ এখন পর্যন্ত আসেনি। অভিযোগ পেলে আবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে।