নীলফামারীর ৬ উপজেলায় চলছে গ্রামীণ উন্নয়ন রাস্তার মাটি কাটার কাজ। অতি দরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচির (ইজিপিপি) আওতায় প্রথম পর্যায় জেলার ৬ উপজেলায় ১৩ হাজার ৫শ ৫১ জন সুফলভোগি কাজ করছেন। তারা গ্রামের বিভিন্ন রাস্তাঘাট উন্নয়নে মাটি কাটার কাজ করছেন।
নীলফামারী সদরে ৩ হাজার ৩শ ৬৫ জন, ডোমারে ২ হাজার ১শ ২ জন,ডিমলায় ২ হাজার ৪শ ৯৯, জলঢাকায় ২ হাজার ৬শ ৪৫, কিশোরগঞ্জে ১ হাজার ৭শ ২৩ ও সৈয়দপুর উপজেলায় ১ হাজার ২শ ১৭ জন।
নীলফামারী সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. রিয়াজুল ইসলাম রিয়াজ বলেন, সদরের ১৫ ইউনিয়নে ৩ হাজার ৩শ ৬৫ জন অতিদরিদ্র কাজ করছেন। এর মধ্যে চওড়া বড়গাছায় ২শ ৫৯ জন, গোড়গ্রামে ২শ ৫১, খোকশাবাড়ী ২শ ২২, পলাশবাড়ীতে ১শ ৯৯, টুপামারী ২শ ৪৪, রামনগর ২শ ৫, কচুকাটা ২শ ১১, পঞ্চপুকুর ১শ ৮৫, ইটাখোলা ২শ ১৭, কুন্দুপুকুর ২শ ৬৩, সোনারায় ২শ ৫১, সংগলশী ১শ ৯৩, চড়াইখোলা ২শ ৪৬, চাপড়া সরমজানী ২শ ২৬, লক্ষিচাপ ইউনিয়নে ১শ ৯৩ জন।
তিনি আরো বলেন, ২০০৮ সাল থেকে সরকার সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনি কর্মসূচির আওতায় কাজ করে আসছে, এতে একদিকে যেমন গ্রামের রাস্তাঘাটের উন্নয়ন হচ্ছে, তেমনি সুফলভোগিরা আর্থিকভাবে উপকৃত (লাভবান) হচ্ছে। উপজেলার রামনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. ওবায়দুল ইসলাম জানান, এ ইউনিয়নে ২শ ৫ জন অতিদরিদ্র মানুষ ৪০ দিন কাজ করার সুযোগ পেয়েছেন। তারা প্রত্যেকে প্রতিদিন ৪শ টাকা হারে ৪০ দিনে ১৬ হাজার টাকা উপার্জন করবে। এ কর্মসূচির আওতায় ওই পরিবারগুলো লাভবান হবে ও ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন।
ওই ইউনিয়নের বাহালী পাড়া গ্রামের সুফলভোগি আবু বক্কর সিদ্দিক আবু (৪৫) বলেন, প্রায় ৫ বছর ধরে নানা রোগে শোকে বিনা চিকিৎসায় বিছানায় পড়ে আছি। এবার হামার চেয়ারম্যান আমার বউয়ের (স্ত্রীর) নামটা মাটি কাটার তালিকায় দিয়া ভালই করছে। এক প্রশ্নের জবাবে আবু বলেন, বহুদিন থাকি ভালমন্দ খাওয়াতো দূরের কথা, শরীরের চিকিৎসা দিবারও টাকা হাতে নাই। হামার এলার জন্যে সরকার ভালই করছে।
২০২১-২২ অর্থ বছরে প্রথম পর্যায়ে ৪০ দিনের ইজিপিপি কর্মসূচিতে কাচাঁ সড়কে মাটির কাজে জেলার ৬ উপজেলায় ১৩ হাজার ৫শ ৫১জন অতি দরিদ্র (সুফলভোগী) এ কাজের সুযোগ পেয়েছে। তারা প্রতিদিন ৪শ টাকা করে ৪০ দিনে মোট ১৬ হাজার টাকা পাবে। জেলা ত্রাণ ও পূর্ণবাসন কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) রমিজ আলম জানান, গরিব ও সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীকে আর্থিক সহায়তাসহ সম্ভাব্য সব ধরনের সহায়তা দিতে বর্তমান সরকার নিরলসভাবে কাজ করছেন। এজন্য জেলার অতিদরিদ্র, মৌসুমী বেকার, শ্রমিক পরিবারের জন্য এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। ত্রান ও পূনর্বাসন মন্ত্রনালয়ের সহযোগীতায় এটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।উল্লেখ্য, এ বছর ইজিপিপি কর্মসূচির মাটি কাটা শ্রমিকদের পারিশ্রমিক মোবাইল ব্যাংকিং রকেট এর মাধ্যমে পরিশোধ করা হবে।
সৈয়দপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আবু হাসনাত সরকার জানান এখানে ৫ ইউনিয়নের মধ্যে ২ ইউনিয়নে লটারী করে শ্রমিক নেয়া হয়েছে। তার মধ্যে বোতলাগাড়ী ইউনিয়নে ৩শ ১৮ জন ও বাঙ্গালীপুর ইউনিয়নে ১শ ৭৮ জন রয়েছে। বাকি ৩ ইউনিয়নে এখনও কোন লোক নেয়া হয়নি। তবে স্বল্প সময়ে ওই ইউনিয়নগুলোতেও লটারীর মাধ্যমে শ্রমিক নেয়া হবে।