শিক্ষা কার্যক্রম চালু রাখতে জানুয়ারি মাসের মধ্যে বাংলাদেশ সরকার ১২ থেকে ১৮ বছর বয়সী ৭৫ লাখের বেশি শিক্ষার্থীকে করোনার টিকা দেওয়ার উদ্যোগ গ্রহন করে। এই টিকা দিতে শিক্ষার্থীদের টিকা নিবন্ধনের নিয়মও শিথিল করা হয় যাতেকরে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোর তৈরি তালিকা অনুযায়ী শিক্ষার্থীরা সহজেই নিতে পারে। বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষার্থীদের টিকাদান কর্মসূচীর অংশ হিসেবে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার মাধ্যমিক স্কুল, ,মাদ্রাসা, কারিগরি ও কলেজ মিলে মোট ৮৭ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা করোনা ভাইরাসের টিকা গ্রহন করে।উক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমূহ কর্তৃক প্রত্যায়ননকৃত শিক্ষার্থীদের টিকাদান শুরু হয় ২ জানুয়ারি ২০২২ তারিখ থেকে। প্রথম সরকারি নলডাঙ্গা ভূষণ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে টিকাদান কেন্দ্র ঘোষণা করে এই কার্যক্রম শুরু হয়। পরবর্তীতে আলহাজ¦ ফাইজুর রহমান মহিলা কলেজকেও শিক্ষার্থীদের করণা টিকা দানের কেন্দ্র ঘোষণা করে সেখানেও টিকাদান কার্যক্রম পরিচালিত হয়। কালীগঞ্জ উপজেলার ৮৭ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ১২ বছর থেকে ১৮ বছরের ১ দিন কম পর্যন্ত বয়সী সকল শিক্ষার্থী এই দুই কেন্দ্র থেকে করোনা ভাইরাস এর টিকা গ্রহন করে। কালীগঞ্জ উপজেলায় সর্বমোট ২২,২০০ জন শিক্ষার্থীকে করনা ভাইরাসের টিকা দেওয়া হয়। এর মধ্যে ছেলে শিক্ষার্থী ১৩৯২৯ জন এবং মেয়ে শিক্ষার্থী ৮২৭১ জন।আর সকল শিক্ষার্থীকেই ফাইজারের প্রথম ডোজের টিকা প্রদান করা হয়েছে। নিজ নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে আনা প্রত্যায়নপত্র ও জন্ম সনদ এর ফটোকপি জমা রেখে শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়া হয়। পরবর্তীতে জন্ম সনদ ও প্রত্যায়ন পত্রের কপি দেখে তাদের নাম অন্তভুর্ক্ত করা হবে। এক মাস পর দ্বিতীয় ডোজের টিকা হাতে পেলে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী শিক্ষার্থীরা পুনরায় টিকা গ্রহন করতে পারবে। শিক্ষার্থীদের টিকাদান কার্যক্রমের দায়িত্বে থাকা কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডাক্তার কৃষ্ণ গোপাল দাস এসকল তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের করোনা ভাইরাসের প্রথম ডোজের টিকাদান কার্যক্রম ২৬ জানুয়ারি সম্পন্ন হয়েছে। টিকা গ্রহসে শিক্ষার্থীদের তেমন কোনো পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার খবর এখনো পর্যন্ত পাওয়া যায়নি বলেও তিনি যোগ করেন। মোবারক আলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেনীর ছাত্র রোহান জানায়,আমি করোনা ভাইরাসের টিকা গ্রহন করেছি। প্রথমে একটু ভয় পাচ্ছিলাম, আবার মনের মধ্যে একধরনের আবেগও কাজ করছিল যে,টিকা নিলে তো এই ভাইরাসের আক্রমণ থেকে আল্লাহর রহমতে রক্ষা পাওয়া যাবে।আবার স্কুলে গিয়ে পড়তে ও বন্ধুদের সাথে খেলতেও আর কোনো বাধা থাকবে না।
এ ব্যাপারে কালীগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মধুসূদন সাহা জানান,আমার উপজেলায় ৮৭ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের করোনা ভাইরাসের টিকাদান কার্যক্রম সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে বলে আমি মনে করি। প্রথম দিকে শিক্ষার্থীদের টিকাদান নিয়ে কিছুটা সংশয় থাকলেও আমরা তা কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হয়। শিক্ষার্থীদের জন্য নির্ধারিত ফাইজারের টিকা শীতাতপনিয়ন্ত্রিত কক্ষে ছাড়া দেওয়া সম্ভব নয়,এমন সিদ্ধােেন্ত প্রথমত বেশ বিব্রবোধ করছিলাম। কারণ আমাদের কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শীতাতপনিয়ন্ত্রিত কক্ষ ছিল না।এমতাবস্থায় কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাদিয়া জেরিন স্যারের নির্দেশনায় প্রথমে সরকারি নলডাঙ্গা ভূষণ ও পরবর্তীতে আলহাজ¦ ফাইজুর রহমান মহিলা কলেজে দুইটি এসি লাগিয়ে টিকাদান কার্যক্রম পরিচালনা করি। এখন আমি ৮৭ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রদান বরাবর চিঠি ইস্যু করেছি এই মর্মে যে তাদের প্রতিষ্ঠানের কতজন টিকা গ্রহন করল, আর কত জন বাদ পড়লো তা জানতে চেয়ে।সকলের নিকট থেকে তথ্য নিয়ে যদি দেখি টিকা গ্রহনের বাদ পড়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা অনেক বেশি তাহলে আলাদা কেন্দ্র ঘোষণা করে সেখানে তাদের নতুন করে টিকা প্রদান করা হবে। আর যদি সংখ্যায় কম হয় তাহলে তাদের কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ টিকা গ্রহনের জন্য পাঠানো হবে।