করোনা ভাইরাসে সংক্রমণের হার ঊর্ধ্বমুখী। গত
এক সপ্তাহ ধরে শেরপুরে করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলছে। করোনার
সংক্রমণ বাড়লেও মাস্ক পরিধানসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে সাধারণ মানুষের
মধ্যে অনীহা দেখা গেছে।
প্রতিদিন করোনা সংক্রমণের হার বাড়লেও মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়ছে না।
জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চালানোসহ
বিভিন্ন সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালানো হলেও এর পুরোপুরি সুফল মিলছে না।
তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্যবিধি মানাতে
অভিযান অব্যাহত থাকবে।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা দেখা গেছে, সপ্তাহ দুয়েক আগে থেকে
করোনা শনাক্তের হার ও সংখ্যা বেড়েছে। বর্তমানে জেলায় প্রায় প্রতিদিনই
করোনা সংক্রমণের হার ৩৫-৫০ ভাগের মধ্যে থাকছে। এর মধ্যে গত শুক্রবার
পরীক্ষা কম হওয়ায় শনাক্ত রোগীর সংখ্যা কম হলেও বাকি দিনগুলোয় এর সংখ্যা
বেশি। গত বৃহস্পতিবার জেলায় করোনা শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ছিল ৪৯, শনাক্তের
হার ৩৯ দশমিক ৫১, বুধবার শনাক্তের সংখ্যা ছিল ৪৩, শনাক্তের হার ৩৯ দশমিক
৮১, মঙ্গলবার শনাক্তের সংখ্যা ছিল ৪৪, শনাক্তের হার ৩৩ দশমিক ৮৪, সোমবার
শনাক্তের সংখ্যা ছিল ৫৫, শনাক্তের হার ৫৯ দশমিক ১৩, গত রোববার শনাক্তের
সংখ্যা ছিল ৪৫, শনাক্তের হার ৩৬ ভাগ এবং শনিবার শনাক্তের সংখ্যা ছিল ৫৮,
শনাক্তের হার ৫২ দশমিক ৭২ ভাগ। বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন করোনা
আক্রান্ত রোগী রয়েছেন ১২ জন। আর হোম আইসোলেশনে রয়েছেন ৪০৫ জন।
সরেজমিনে শহরের নিউমার্কেট, গোয়ালপট্টি, নয়ানীবাজারসহ বিভিন্ন
গুরুত্বপূর্ণ সড়কে গিয়ে দেখা গেছে, অবাধে মাস্কবিহীন অবস্থায় চলাফেরা
করছে অসংখ্য নারী-পুরুষ। মাস্ক পরিধান করেননি কেন জানতে চাইলে বেশির ভাগ
মানুষই বিষয়টি এড়িয়ে গেছেন। কেউ দিয়েছেন ঠুনকো অজুহাত। নয়ানীবাজারে বাজার
করতে আসা সালেহা বেগম জানান, মাস্ক পরলে গরম লাগে। তাই সব সময় পইরা থাকতে
পারি না। মাহবুব হাসান নামে এক তরুণ বলেন, এতক্ষণ মাস্ক পরেই ছিলাম। একটু
আগে খুলে পকেটে রেখেছি।
করোনা পরিস্থিতি অবনতির বিষয়ে জানতে চাইলে শেরপুরের সিভিল সার্জন ডা.
অনুপম ভট্টাচার্য জানান, আমরা করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছি।
ইতিমধ্যে জেলা সদর হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে করোনা
ওয়ার্ড প্রস্তুত রাখা হয়েছে। প্রয়োজন হলে বেডের সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে।
তবে করোনা প্রতিরোধে চিকিৎসার চেয়ে সচেতনতাই বেশি জরুরি। এজন্য সকলকে
সরকার ও স্বাস্থ্য বিভাগ নির্দেশিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। তিনি
আরও বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মানতে মানুষের মধ্যে অনীহা রয়েছে। অনেক
ক্ষেত্রেই মাস্ক ছাড়া চলাফেরা করছে মানুষ। সংক্রমণ ঠেকাতে ঘর থেকে বাইরে
বের হলে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণসহ মাস্ক ব্যবহার করতে এবং টিকা
নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
এ ব্যাপারে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মেহনাজ পারভীন বলেন,
সারা দেশের মতো শেরপুরেও সংক্রমণ দ্রুত হারে বাড়ছে। সংক্রমণ ঠেকাতে
সবাইকে সচেতন হওয়ার বিকল্প নেই। সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণসহ মাস্ক
ব্যবহার করতে হবে।