মা বাবা সখ করে মেয়ের নাম রেখেছিলেন জমিলা। বিয়ে দিয়েছিলেন পাশের গ্রামের উনালি মিয়া কাছে। বিয়ের পর থেকে কুল জুড়ে আসল পুত্র সন্তান। তার নাম রাখলেন মজলু মিয়া। আর কয়েকবছর পর প্রতিবন্ধি কন্যাসন্তান ঘরে এল আদর করে নাম রাখলেন রোকিয়া। সুখে চলছিল তাদের সংসার। হঠ্যাৎ স্বামী অসুস্থ হয়ে পড়লে চিকিৎসার জন্য সহায় সম্বল বলতে এক টুকরো জমি ভিটে মাটি বিক্রে করে দিতে হয়েছিল তাকে। কোন উপায়ন্তর না দেখে উনালির স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে নিকলী উপজেলা সদর ইউনিয়নের জিসি পাইলট হাই স্কুলের পাশে পরিত্যক্ত অডিটোরিয়ামের একটি দরজা জানালা বিহীন কক্ষে আশ্রয় নেন। খেয়ে না খেয়ে ছেলে মেয়েদের নিয়ে অতি কষ্টে চলছিল তাদের সংসার। দারিদ্রের কষাঘাতে লেখাপড়া ও হলো না ছেলেমেয়েদের। নিয়তির কি নিমর্ম পরিহাস কিছুদিন পর পৃথিবী থেকে তার স্বামী বিদায় নিলেন অসহায় হয়ে পড়ে এই পরিবারটি। কোন উপায় না দেখে ছেলে মেয়েদের নিয়ে চলে যান জমিলা ঢাকায়। সেখানে গিয়ে বাসায় বাসায় ভিক্ষে করে ছেলে মেয়েদের দুমুটো ভাত দুলে দিতেন। এতে করে মানসিক ও শারীরিকভাবে ও ভেঙ্গে পড়েন তিনি। নিজের শারীরিক দূর্বলতা ও ছেলে বিয়ে করে শশুর বাড়ি চলে যাওয়ায় কোন উপায়ন্ত না দেখে পতিবন্ধী মেয়ে রোকেয়া কে নিয়ে আবার দেশের বাড়ি কিশোরগঞ্জে নিকলীতে ফিরে আসেন। দেশে এসে মাথা গুজার ঠাই না পেয়ে সদর ইউনিয়েনর শেখ রাসেল স্টেডিয়াম এর পাশে মাঠের কোনে একটি ছুটো ডেরা তৈরী করে সারাদিন মানুষের দোয়ারে দোয়ারে ভিক্ষে করেন। ভয়ভীতি উপেক্ষা করে রাত্রি যাপন করেন এই ঘরটিতে। বর্তমান গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী যখন ভূমিহীনদের ঘর উহার দিচ্ছেন সেই সময়ে তিনিও চেয়ারম্যান মেম্বারদের দোয়ারে দোয়ারে ঘুরে ভূমি ও গৃহ কিছু না পেয়ে অসহায়ত্ব তার আরো বেড়ে গেল। জমিলা খাতুন এই প্রতিবেদককে বলেন, আমার স্বামী মারাগেছে ২০ বছর আগে। ভিটে মাটি ও কিছুই রেখে যাননি। আমার প্রতিবন্ধী মেয়েকে নিয়ে যাতে করে নিজের ঘরে মরতে পারি প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার এই মিনতি তিনি যেন আমাকে একটু মাথা গোজার ঠাঁই করে দেন।