প্রথমবারের মতো শেরপুরে বিদেশি সবজি
ব্রকোলির চাষ শুরু হয়েছে। এটি দেখতে অনেকটা ফুলকপির মতো হলেও এর রং গাঢ়
সবুজ। বিদেশি শীতকালীন এ সবজির নাম ব্রকোলি। দেশে ব্রকোলি চাষ নতুন নয়।
তবে শেরপুরে প্রথমবারের মতো এ বিদেশি সবজির চাষ শুরু করেছে জেলার
শ্রীবরদী উপজেলার কলেজ পড়ুয়া ছাত্র ছোবাহান আলী। তিনি ব্রকোলির পাশাপাশি
স্বল্প পরিসরে ক্যাপসিকামও চাষ করছেন।
জানাযায়,সবুজ এই সবজিটি সিদ্ধ করে যেমন খাওয়া যায়, তেমনি স্যুপ, ভাজি,
পাকোড়ায় দিলে খাদ্যের পুষ্টিমানও অনেক বেড়ে যায়। সেই সঙ্গে স্বাদেও
বৈচিত্র্য আসে। এতে ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ফোলেট ও আঁশ আছে।
জেলার শ্রীবরদী উপজেলার শ্রীবরদী সরকারি কলেজে বিজ্ঞান বিভাগে পড়ুয়া
ছোবাহান ইউটিউবে ভিডিও দেখে এই সবজি চাষে আগ্রহী হন।
এব্যাপারে ছোবাহান বলেন, ‘প্রথমে তরমুজ চাষ করি। কিন্তু বীজ নষ্ট হওয়ায়
ফসল হয়নি। ইন্টারনেটে দেখে শখ জাগে ব্রকোলি চাষ করার। তাই নিজের ১৩ শতাংশ
জমিতে এ সবজি চাষ শুরু করি। এজন্য খরচ হয়েছে ১০ হাজার টাকা। প্রথমবার
ফলনও হয়েছে বেশ ভালো। আশা করেছি, খরচ বাদ দিয়ে লাভ থাকবে অন্তত ১৫ হাজার
টাকা। প্রতি ব্রকোলি বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকা দরে।
প্রথম দিকে ব্রকোলি দেশের বড় বড় দোকানে পাওয়া গেলেও এখন এটি সব বাজারেই
মেলে। দিন দিন জনপ্রিয় হওয়া এ সবজির অনেক গুণ।
শেরপুরে ছোবাহানকে দেখে ব্রকোলি চাষে আগ্রহী হচ্ছেন অন্য চাষিরাও।
স্থানীয় চাষি খলিলুর রহমান বলেন, ‘আমগোর এলাকায় এই বিদেশি ফসল হইব আমরা
আগে চিন্তা করি নাই। কিন্তু সোবাহান লাগাইছে। যদি সোবাহান ভালা লাভ পায়,
তাইলে সামনের বার আমিও চাষ করমু।
চাষি আবদুল মোতালেব বলেন, ‘ফলডা তো দেখতে ভালাই। প্রথমে আমি মনে করছি
এইডা মনে হয় ফুলকপি। কিন্তু এহন হুনলাম (শুনলাম) এই ফল বলে মেলা রোগ
সারানোর কামও করে। আর অন্য ফসলের চেয়ে লাভও ভালা। যদি কৃষি অফিস আমগোরে
চারা দেয়, তাইলে সামনের বার আমি এল্লা লাগামু।’
শ্রীবরদী থেকে ফসল দেখতে এসে রুবেল বলেন, ‘আমগোর এলাকায় এই ফসল আগে দেখি
নাই। কিন্তু শুনলাম নতুন ফসল চাষ হয়েছে, তাই দেখতে আসলাম। এর আগে ব্রকোলি
কিনে খাই নাই। আজ একটা কিন্না নিয়া খায়ে দেখমু কেমন লাগে।’
শ্রীবরদী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হুমায়ুন দিলদার বলেন, ‘উপজেলা কৃষি
বিভাগের পক্ষ থেকে নানাভাবে সহায়তা করা হচ্ছে ছোবাহানকে। ব্রকোলি চাষে
সাফল্য পেয়েছেন তরুণ এ সবজি চাষি। তার সাফল্যে অন্যরাও কৃষি কাজে এগিয়ে
আসবে- এমন প্রত্যাশা আমাদের সবার।’