সিংড়া চলনবিল প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোছা. আনজুমান আরা ও সাবেক সভাপতি মো. সোহেল রানা’র বিরুদ্ধে শিক্ষক নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ করা হয়েছে। সম্প্রতি নাটোর জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক এর কাছে একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন ওই স্কুলের ৬ জন শিক্ষক-কর্মচারী। একই অভিযোগ সিংড়ার পৌরসভার মেয়র এর কাছেও করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, সিংড়া চলনবিল প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা লগ্নেই প্রধান শিক্ষক মোছা. আনজুমান আরাকে প্রায় সাড়ে ১১লাখ টাকা দিয়ে প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম শুরু করেন ভুক্তভোগী ওই ৬ জন শিক্ষক-কর্মচারী। পরে তাদেরকে নিয়োগপত্র না দিয়ে বিভিন্ন তাল বাহানা শুরু করেন প্রধান শিক্ষক ও সাবেক সভাপতি। হঠাৎ গত ১ ফেব্রুয়ারি আবারও প্রত্যেকের কাছ থেকে ৭ লাখ টাকা দাবি করা হয়। আর তাদের চাহিদামত টাকা দিতে না পারায় ৬ জন শিক্ষক-কর্মচারীকে মৌখিক ভাবে স্কুল থেকে বের করে দেন প্রধান শিক্ষক।
লিখিত অভিযোগকারী শিক্ষক আতিকুর রহমান, মনির হোসেন বলেন, প্রধান শিক্ষককে মোটা অংকের টাকা দিয়ে ২০১৬ সাল থেকে তারা বিদ্যালয়ে বেকার খাটছেন। এখন হঠাৎ আবার চাহিদামত টাকা দিতে না পারায় চাকুরী নেই বলে মৌখিক ভাবে বিদ্যালয় থেকে বের হয়ে যেতে বলছেন।
অপর শিক্ষক বিউটি পারভীন ও শিক্ষক সানোয়ার হোসেন বলেন, বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকেই অতি কষ্টে, ধার-দেনা করে প্রধান শিক্ষকের হাতে মোটা অংকের টাকা তুলে দিয়েছেন তারা। আর বিদ্যালয় পরিচালনার জন্য প্রতিমাসে প্রতিষ্ঠানের দাতা সদস্যদের কাছ থেকেও মোটা অংকের টাকা তুলে দিতেন। দীর্ঘ দিন বেকার খাটুনির বিনিময়ে কোন দিন তাদেরকে কিছুই দেওয়া হয়নি। এখন অন্যায় ভাবে আবার মোটা অংকের অর্থ দাবি করছেন প্রধান শিক্ষক।
অভিযুক্ত সিংড়া চলনবিল প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোছা. আনজুমান আরা মুঠোফোনে বলেন, তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ মিথ্যা। বিদ্যালয়ে কতজন শিক্ষক-কর্মচারী রয়েছেন তা প্রতিষ্ঠানের খাতা দেখে জানাবেন। আর অভিযোগকারী শিক্ষক-কর্মচারী সঠিক না আমি সঠিক তা তদন্ত হলেই সব জানা যাবে।
সিংড়া উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. আতিকুর রহমান বলেন, প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন ওই প্রতিষ্ঠানের ৬ জন শিক্ষক-কর্মচারী। সেই অভিযোগ পত্রটি জেলা কার্যালয় থেকে আমার কাছে প্রেরণ করেছেন। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
সিংড়ার ইউএনও ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি এম.এম সামিরুল ইসলাম বলেন, অভিযোগের বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে শুনেছি বিদ্যালয়ে কিছু সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে।
নাটোর জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগের তদন্ত করা হচ্ছে।