পদ্মা সেতু চালু হতে যাচ্ছে এ বছরের ২৩ জুন। এ অবস্থায় পায়রা বন্দর বা কুয়াকাটা যাতায়াতে সবচেয়ে বড় বাঁধা হয়ে দেখা দিয়েছে বরিশাল নগরীর সাগরদী সেতু। অপ্রশস্থ এ সেতু দিয়ে অতিরিক্ত যানবাহন চলাচল ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে পারে বলে ধারনা করছে পরিবহন সেক্টর ও ট্রাফিক বিভাগের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, আপাতত এখানে অতিরিক্ত বেইলী ব্রিজ সংযোজনের চেস্টা করা হচ্ছে। তবে এ সমস্যার স্থায়ী সমাধানে বাইপাসের বিকল্প দেখছে না কোন পক্ষই। পদ্মা সেতু থেকে পায়রা বন্দর হয়ে কুয়াকাটার দুরত্ব ২৩২ কিলোমিটার। এই পথটুকুকে নির্বিঘœ করতে ইতোমধ্যে চালু হয়েছে পায়রা সেতু। কিন্তু ২৩২ কিলোমিটার এ পথের ১২২ কিলোমিটার পয়েন্টে অবস্থিত সাগরদী সেতু এখন চলমান উন্নয়নের সব গতিকে শ্লোথ করে দিচ্ছে।
ট্রাক ও বাস চালকরা জানিয়েছেন, মাত্র ২৪ ফুট চওড়া এ সেতু দিয়ে যানবাহন পার হতে এমনিতেই এখন ব্যয় হচ্ছে অনেক সময়। সাগরদী সেতু থেকে এমনিতে আগে প্রতিদিন ছোট-বড় যান চলাচল করতো ১২ হাজার। পায়রা সেতু চালুর পর সে সংখ্যা বেড়ে বর্তমানে ১৯ থেকে ২২ হাজার যানবাহন চলছে।
সূত্রমতে, পদ্মা সেতু চালুর পর এখান থেকে ছোট বড় ও ভারী যানচলাচল বেড়ে প্রতিদিন ২৪ থেকে ৩০ হাজার ছাড়িয়ে যাবে। তাই ব্রিজটি ছোট হওয়ায় এখন দুঃসহ পরিস্থিতিতে পরতে হচ্ছে। সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, পদ্মা পদ্মা সেতু চালুর আগেই সাগরদী ব্রিজ সম্প্রসারনে দুই পাশে অন্তত দুটি বেইলী ব্রিজ নির্মান করা দরকার। কিন্তু সেতুর দুই ধারে সড়ক ও জনপথ বিভাগের কোন জমি নেই। এ ক্ষেত্রে বরিশাল সিটি করপোরেশন যদি জমির ব্যবস্থা করে দেয় তবেই তারা তা পারবেন।
মেট্টোপলিটন পুলিশ বিভাগের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নগরীর মধ্যস্থানে অবস্থিত এ সেতুর পাশে সম্প্রসারন কাজ আরো দূর্ভোগ বাড়াবে। সেক্ষেত্রে যত দ্রুত সম্ভব বাইপাস সড়ক নির্মানের উপর জোর দেওয়া উচিত। পুলিশ কমিশনার শাহাবুদ্দিন খান বলেন, রাস্তা চালু রেখে সাগরদী ব্রিজ সম্প্রসারন কাজের সময় জট আরো বৃদ্ধি পাবে। তাই বাইপাস সড়কের কোন বিকল্প নেই বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ের ১১ কিলোমিটার বরিশাল ফোরলেন বাইপাস প্রকল্পটি ২০১৮ সালে একনেকের সভায় পাশ হলেও এখন পর্যন্ত এ কাজের অগ্রগতি হয়েছে শতকরা ৯ দশমিক ১৫ ভাগ। এ অবস্থায় চালু হবার পথে পদ্মা সেতু।
স্বল্প সময়ের মধ্যে সার্বিক বিষয়টি সমন্বয় করে সমস্যার সমাধান করার আশ্বাস দিয়ে জেলা প্রশাসক মোঃ জসীম উদ্দীন হায়দার বলেন, প্রধানমন্ত্রী দক্ষিণাঞ্চলবাসীর ভাগ্য উন্নয়নে ব্যাপক আন্তরিক। ইনশআল্লাহ উন্নয়নের নেত্রী প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে বরিশাল নগরীর মধ্যকার উল্লিখিত সমস্যাও সমাধান হবে।