চাঁপাইনবাবগঞ্জের প্রাচীণতম রেলওয়ে স্টেশন রহনপুরকে পূর্ণাঙ্গ রেল বন্দরের অবকাঠামো নির্মাণে দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে রেল বন্দর বাস্তবায়ন পরিষদ গোমস্তাপুর, নাচোল, ভোলাহাট তিন উপজেলার ব্যানারে। রোববার সকালে রহনপুরস্থ একটি কমিউনিটি সেন্টার এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। কয়েকমাস হতে চলমান কর্মসূচীর কার্যক্রম বিষয়ে তুলে ধরা হয় সংবাদ সম্মেলনে। এতে লিখিত বক্তব্য দেন, রেলবন্দর বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক নাজমুল হুদা খান রুবেল। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, রহনপুর রেলওয়ে স্টেশনটি এদেশের সীমান্তবর্তী রেলওয়ে স্টেশন। বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের অন্যতম রেলওয়ে ট্রানজিট পয়েন্ট হিসেবে কাজ করছে এ স্টেশনটি। ২০১০ সালে ভারত- বাংলাদেশের একটি যৌথ সভায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তৎকালীন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং এর মধ্যে দু'দেশের একটি স্মারক চুক্তি হয়। সেখানে রেল বন্দর হিসেবে ওপারে সিঙ্গাবাদ ও এপারে রহনপুরের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। রেলবন্দর জন্য রহনপুর উপযুক্ত পয়েন্ট। আইনে স্পষ্ট বলা হয়েছে, সীমান্ত থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরত্বে প্রথম কোন স্টেশনে রেলবন্দর হতে হবে। তিনি অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে বলেন ৩০ বছর আগে চালু করা হয় রহনপুর বন্দর। বর্তমানে এ রেলপথ দিয়ে ভারত থেকে পণ্য আমদানি ও নেপালে রপ্তানি করা হয়ে থাকে। সীমান্তবর্তী রেলস্টেশন হওয়ার কাস্টমস ও ইমিগ্রেশন সুবিধা হয়ে থাকে। সরকারকে ষড়যন্ত্রকারীরা ভূল বার্তা দিচ্ছে রহনপুরে রেলবন্দর স্থাপনে সরকার বিপুল অঙ্কের অর্থের লগ্নি হবে যা আমনুরায় হলে অনেকাংশ কমে আসবে। এটা মিথ্যা প্রচার ও অযৌক্তিক বক্তব্য। গত বছর অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভায় বৈঠকে নেপালের সঙ্গে থাকা ট্রানজিট চুক্তি সংশোধন প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়। যাকে নিয়ে এতকিছু সেই রহনপুর রেলওয়ে স্টেশন অবকাঠামো উন্নয়ন তেমন হয়নি। বরং দিন দিন রেলের জমিগুলো চলে যাচ্ছে দখলদারদের হাতে। রেল কর্তৃপক্ষ দখলমুক্ত করতে উচ্ছেদের উদ্যোগ নিলেও রেলের কিছু দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারী কারণে তা হয়না। এ ছাড়া বিভিন্ন কারণে গুরুত্বপূর্ণ রেলস্টেশন রহনপুরকে আধুনিকায়ন করে বিদ্যমান সমস্যা সমাধান না করে, রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চল রেলবন্দর অন্য জায়গায় নিয়ে জায়গার পায়তারা করছে। সংবাদ সম্মেলন তিনি আরও বলেন, গোমস্তাপুর-নাচোল-ভোলাহাট উপজেলার প্রাণকেন্দ্র রহনপুর রেলওয়ে ষ্টেশন কে পূর্ণাঙ্গ রেলবন্দরে পরিণত করতে দীর্ঘদিন ধরে তারা দাবি জানিয়ে আসছে। রেলওয়ে স্টেশনকে পূর্ণাঙ্গ রেলবন্দরে রূপ দিতে পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। এটাই এলাকাবাসীর যৌক্তিক দাবি। এটি এখন গণদাবিতে পরিণত হয়েছে। ইতোমধ্যে দাবি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে মাননীয় রেলমন্ত্রী, রেল সচিব, পশ্চিমাঞ্চলীয় রেলওয়ের জিএম সহ সংশ্লিষ্ট অনেকের সাথে বাস্তবায়ন পরিষদের নেতারা সাক্ষাৎ করেছেন। তাছাড়া এলাকাবাসীর সাথে মতবিনিময়, মানববন্ধন, রহনপুর পৌর এলাকার সকল দোকানপাট এক ঘণ্টা বন্ধ রেখে কর্মবিরতি পালন, বিক্ষোভ মিছিল, অবস্থান ধর্মঘট ও অনশন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। গত ৪ মার্চ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের সাথে সাক্ষাৎ করে তাঁকে সম্পূর্ণ বিষয়ে অবগত করা হয়েছে। তিনি বিষয়টি গুরুত্বসহকারে নিয়েছেন ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে এ ব্যাপারে কথা বলে বাস্তবায়ন পরিষদের নেতাদের আশ্বস্ত করেছেন। সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন সাবেক সাংসদ ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম মোস্তফা বিশ্বাস, রহনপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র তারিক আহমদ। রেল বন্দর বাস্তবায়ন পরিষদের সদস্য সচিব ইয়াহিয়া খান রুবেল ও যুগ্ন-আহবায়ক সেরাজুল ইসলাম টাইগার প্রমূখ। সংবাদ সম্মেলনে রেল বন্দর বাস্তবায়ন পরিষদের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।