৩০ বছর আগে চালু করা হয় চাঁপাইনবাবগঞ্জের রহনপুর রেলবন্দর। সেটিকে পূর্ণাঙ্গ বন্দর ও অবকাঠামো নির্মাণের দাবি করে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন তিন উপজেলার বাসিন্দারা। গঠিত হয়েছে রেলবন্দর বাস্তবায়ন পরিষদ গোমস্তাপুর,নাচোল,ভোলাহাট নামে। চলমান রয়েছে তাঁদের কর্মসূচি। জনসভায় ১৫ দিনের আল্টিমেটাম দিয়েছে রেলবন্দর বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক নাজমুল হুদা খান রুবেল।বীরমুক্তিযোদ্ধাসহ সকল পেশার জনগণ পূর্ণাঙ্গ রেলবন্দর দাবির বিভিন্ন কর্মসীচিতে সমর্থন করে অংশ নিচ্ছেন। তারই কর্মসূচির অংশ হিসেবে শুক্রবার বিকেলে রহনপুর রেলস্টেশন চত্বরে বিশাল জনসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে সভাপতিত্ব করেন রেলবন্দর বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক নাজমুল হুদা খান রুবেল। অনুষ্ঠিত জনসভায় তিন উপজেলার বাসিন্দারাসহ পাশ্ববর্তী উপজেলার নিয়ামতপুর,পোরশা ও সাপাহার এলাকার একাংশের জনগন জনসভায় অংশ নেয়। তাঁরাও এ স্টেশন দিয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যাতায়াত করে থাকে বলে তাঁরাও দাবি জানাচ্ছেন।
জনসভায় বক্তব্য দেন জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাবেক সাংসদ জিয়াউর রহমান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মোস্তফা বিশ্বাস,গোমস্তাপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হুমায়ুন রেজা, রহনপুর পৌরসভার মেয়র মতিউর রহমান খাঁন,নাচোল পৌরসভার মেয়র আবদুর রশিদ খান ঝালু, ভোলাহাট উপজেলার গোহালবাড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইয়াশিন আলী শাহ, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান খুরশিদ আলম বাচ্চু, পৌরসভার সাবেক মেয়র তারিক আহমদ, মহিলালীগ নেত্রী সাবিনা শবনম কেয়া,হোসনে আরা পাখি, রেল বাস্তবায়ন পরিষদের নেতা তৌহিদুজ্জামান বাবু, মোস্তাফিজুর রহমান জেম সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
জনসভায় বক্তারা বলেন, রহনপুর রেলওয়ে স্টেশনটি প্রাচীণতম এবং সীমান্তবর্তী প্রথম স্টেশন। ব্রিটিশ আমল থেকে ভারতের সাথে রেল যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে এ রুট দিয়ে। বাংলাদেশ-ভারত-নেপাল ত্রিদেশীয় ট্রানজিট হিসেবে এ রহনপুর স্টেশনটি অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমানে পণ্য আমদানি ও রপ্তানি কার্যক্রম চালু রয়েছে।
২০১০ সালে ভারত- বাংলাদেশের একটি যৌথ সভায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তৎকালীন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং এর মধ্যে দু'দেশের একটি স্মারক চুক্তি হয়। সেখানে রেল বন্দর হিসেবে ওপারে সিঙ্গাঁবাদ ও এপারে রহনপুরের নাম উল্লেখ করা আছে বলে বক্তারা বলেন। সীমান্ত থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরত্বে প্রথম কোন স্টেশনে রেলবন্দর হতে হবে। আর প্রথম স্টেশন হিসেবে রহনপুর উপযুক্ত পয়েন্ট। কিন্তু একটি ষড়যন্ত্রকারী মহল সরকারকে ভূল বুঝিয়ে সীমান্ত থেকে চারটি স্টেশন পার হয়ে আমনুরায় করার চেষ্টা করছে। রহনপুর কে নিয়ে মিথ্যা প্রচার অযৌক্তিক বক্তব্য দিচ্ছেন। এদিকে রেল কর্তৃপক্ষ দখলমুক্ত করতে উচ্ছেদের উদ্যোগ নিলেও রেলের কিছু দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারী কারণে তা হয়না। এ ছাড়া বিভিন্ন কারণে গুরুত্বপূর্ণ রেলস্টেশন রহনপুরকে আধুনিকায়ন করে বিদ্যমান সমস্যা সমাধান না করে, রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চল রেলবন্দর অন্য জায়গায় নিয়ে জায়গার পায়তারা করছে। এটা মেনে নেওয়ার যায়না। রহনপুর রেলবন্দর আছে থাকবেই। আমরা শুধু রহনপুর বন্দরকে পূর্ণাঙ্গ রেলবন্দরের অবকাঠামো নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছি। এটা দাবি নয়,এটা আমাদের নায্য অধিকার। এটা এলাকায় গণদাবিতে পরিণত হয়েছে। তিন উপজেলার অনেক নেতা হুশিয়ার করে বলেন,যদি অন্য কোন স্থানে রেলবন্দর হয় তাহলে রেললাইন শুয়ে প্রতিবাদ জানানো হবে। ইতোমধ্যে দাবি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে মাননীয় রেলমন্ত্রী, রেল সচিব, পশ্চিমাঞ্চলীয় রেলওয়ের জিএম সহ সংশ্লিষ্ট অনেকের সাথে বাস্তবায়ন পরিষদের নেতারা সাক্ষাৎ করেছেন। তাছাড়া এলাকাবাসীর সাথে মতবিনিময়, মানববন্ধন, রহনপুর পৌর এলাকার সকল দোকানপাট এক ঘণ্টা বন্ধ রেখে কর্মবিরতি পালন, বিক্ষোভ মিছিল, অবস্থান ধর্মঘট ও অনশন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।