খুলনার পাইকগাছায় একটি চক্র উঠতি বয়সী যুবকদের দিয়ে বিভিন্ন অপরাধ কর্মকা- করছে। মাদক, চাঁদাবাজী, দখলবাজী, ছিন্তাই সহ বিভিন্ন অপরাধ কর্মকা-ে সাথে জড়িত এ চক্রটি। চক্রের সদস্যেদের নামে থানায় একাধিক ধর্ষণ, মাদক চাঁদাবাজী মামলা রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে অপরাধ কর্মকা- সাথে জড়িত থাকলেও প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিতে সর্মথন হওয়ায় দিন দিন বেপরোয়া হচ্ছে চক্রটি। ইতোমধ্যে ব্যবসায়ীর কাছে চিঠি দিয়ে ২০ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবির ঘটনায় পুলিশ এ চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেফতার করেছে। থানায় একটি চাঁদাবাজী মামলা হয়েছে। মামলার বিবরণ ও থানা পুলিশ জানায়, গত ১৮ ফেব্রুয়ারী রাত আনুমানিক ১১ টার দিকে উপজেলার কপিলমুনি যমুনা ফিস ও যমুনা ব্রিক্স’র মালিক বিশিষ্ট ব্যবসায়ী চিত্তরঞ্জন মন্ডলের নিকট ৫/৬ জন অপরিচিত যুবক একটি চিঠি দিয়ে যায়। চিঠিতে লেখা ছিল যে, তার কাছে ২০ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়েছে। যথা সময়ে টাকা না দিলে তার ছেলেকে অপহরণপূর্বক গুম করারও হুমকি দেওয়া হয়। পরে তারা চাঁদা আদায়ে ২৫ ফেব্রুয়ারী মোবাইল থেকে তাকে ও তার ছেলের খারাপ পরিণতি হবে বলে হুমকি দেওয়া হয়। পরবর্তিতে একই নম্বর থেকে একাধিকবার তাকে মোবাইলে হুমকি দেয়া হয়। ঘটনার অন্তত ১৭ দিন পর তিনি বিষয়টি থানার অফিসার ইনচার্জকে জানান। এরপর তার দেয়া তথ্য ও উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার করে পৃথক অভিযানে এ সংঘবদ্ধ চক্রের সদস্য উপজেলার নাছিরপুর গ্রামের আক্কাজ সানার ছেলে কামাল হোসেন (৩৭) কে পুলিশ আটক করেন। এরপর রাতেই তার দেয়া তথ্য মতে পরের দিন সকালে পার্শ্ববর্তী মামুদকাটির গোয়ালডাঙ্গা মোড়ের গ্রামের মুনছুর আলী খাঁ ছেলে মুনমুন খাঁ (৩২) কে গ্রেফতার করে। এ সময় প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা ২০ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবির ঘটনায় নিজেদের সম্পৃক্ত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেছে বলে জানানো হয়। এ ঘটনায় ভূক্তভোগী ব্যবসায়ী চিত্তরঞ্জন মন্ডল বাদী হয়ে ৪ জনের নাম উল্লেখপূর্বক অজ্ঞাত পরিচয় আরো ২/৩ জনকে আসামি করে থানায় একটি চাঁদাবাজী মামলা করেন। যার নং-৭, তাং ৭/৩/২২ ইং। মামলায় অপর আসামিরা হলেন, উপজেলার হরিদাশকাটি গ্রামের মৃত আবদুল ফকিরের ছেলে হালিম ফকির (৩৭) ও নাছিরপুর পাল পাড়ার মৃত গনেশ পালের ছেলে কিনু পাল (৪০)। তবে তদন্তের স্বার্থে পুলিশ ঘটনায় জড়িত অপর আসামীদের নাম প্রকাশ করেনি। এদিকে মামলার আসামি কিনু পালকে কপিলমুনি ফাঁড়ির এসআই আবদুল আলীম গত ৮ মার্চ সকালে কপিলমুনির কাশিমনগরস্থ মাছ কাটা সংলগ্ন এলাকায় গিয়ে ওসি সাহেব তাকে থানায় দেখা করতে বলেছে জানিয়ে মোটরসাইকেলে উঠতে বললে আকস্মিক হৃদরোগে আক্রান্ত হন কিনু পাল। এরপর তাকে তাৎক্ষণিক খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয় বলে জানানো হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পাইকগাছা থানার এসআই তাকবির হোসাইন জানান, ঘটনায় এখন পর্যন্ত দু’জনকে গ্রেফতার করে ৯ মার্চ আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। বাকি আসামীদের গ্রেফতারে চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে। পাইকগাছা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. জিয়াউর রহমান জিয়া জানান, এলাকায় উঠতি বয়সী ছেলেদের নিয়ে একটি চক্র সংগঠিত হয়েছে। তারা বিভিন্ন সময় নানা অপরাধ কর্মকা-ে জড়িত থাকে। খুব তাড়াতাড়ি সংগঠনের অপর সদস্যসহ ঘটনায় জড়িত অন্যান্যরা পলাতক আসামীদের গ্রেফতারপূর্বক আইনের আওতায় নেয়া হবে। এ ছাড়া আটক মুনমুনের নামে পাইকগাছা থানায় ধর্ষণসহ আরো তিনটি মামলা রয়েছে বলেও জানান তিনি। এলাকাবাসী জানান, ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তে বেরিয়ে আসবে চক্রের মূল হোতাসহ রাঘববোয়ালদের নাম। যারা বিভিন্ন সময় বাণিজ্যিক শহর কপিলমুনি সহ বিভিন্ন এলাকায় নানা অপকর্মের সাথে সম্পৃক্ত রয়েছে।