‘বাল্যবিবাহের প্রতিরোধ এবং এর কূফল সম্পর্কে জানাতে প্রতিনিয়ত উঠান বৈঠক, প্রচারাভিযান, সভা-সমাবেশসহ জনসচেনতামূলক কার্যক্রম গ্রহণে সকলে এগিয়ে এলে বাল্যবিবাহ বন্ধে কার্যকর ফলাফল পাওয়া সম্ভব।’ রাজশাহী জেলা প্রশাসনের নির্ধারিত আইন শৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভায় সদস্য সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন ফর কম্যুনিটি ডেভেলপমেন্ট (এসিডি) বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে বাস্তবায়িত কার্যক্রম নিয়ে আয়োজিত সভায় এমন মন্তব্য করেছেন বক্তারা। রোববার (১৩ মার্চ) সকাল সাড়ে ১০টায় রাজশাহী জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সভায় সভাপত্বি করেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সাবিহা সুলতানা। এ সময় বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে বাস্তবায়িত কার্যক্রমে আরও কী করা যেতে পারে তা নিয়ে একটি মাল্টিমিডিয়া উপস্থাপন করা হয়।
ইউনিসেফ-এর সহযোগিতায় অ্যাসোসিয়েশন ফর কম্যুনিটি ডেভেলপমেন্ট (এসিডি) বাল্যবিবাহ নিরোধ কমিটি সক্রিয়করণের লক্ষ্যে আয়োজিত সভায় রাজশাহী জেলায় বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে মাল্টিমিডিয়ার মাধ্যমে উপস্থাপন করেন প্রতিষ্ঠানটির প্রোগ্রাম ম্যানেজার মনিরুল ইসলাম।
এসময় রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সাবিহা সুলতানা বাল্যবিবাহ বন্ধে বেশ কিছু দিকনিদের্শনা প্রদান করেন। একই সাথে ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যবৃন্দকে কার্যকর ভূমিকা নিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের মনিটরিং এবং ফলো-আপের উপর তাগিদ দেন। এছাড়াও এ বিষয়ে প্রতিমাসে ইউনিয়ন পরিষদ সভা সম্পন্নে সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের নিশ্চিত করার কথা বলেন। আর উপজেলা চেয়ারম্যানদের প্রতি বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে সক্রিয় অংশগ্রহণেরও অনুরোধ করেন তিনি। সভায় রাজশাহী জেলার বিভিন্ন উপজেলার উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, বিভিন্ন সরকারি দফতরের কর্মকর্তা এবং আইনশৃঙ্খলা কমিটির সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এসময় বাগমারা উপজেলা চেয়ারম্যান অনিল কুমার সরকার বলেন, বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে গ্রামে গ্রামে গিয়ে সন্তানদের বাবা-মাকে বাল্যবিবাহের কূফল সম্পর্কে জানানোর ব্যবস্থা করতে হবে। পাশাপাশি ধর্মীয় নেতাদের এই কাজে সম্পৃক্ত করতে হবে। আর বাঘা উপজেলা চেয়ারম্যান লায়েক উদ্দিন লাবলু এ বিষয়ে সমাজের সচেতন মহলকেও এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন।
সমাজসেবা অধিদপ্তরের রাজশাহী উপপরিচালক হাসিনা মমতাজ, রাজশাহী জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নাসির উদ্দিন, রাজশাহী জেলা শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা মনজুর কাদেরসহ উপস্থিত সরকারী দফতরের কর্মকর্তাগণ এ সময় তাদের মতামত ব্যাক্ত করেন।
সভায় বক্তারা বাল্যবিবাহ বন্ধে আইনের সঠিক প্রয়োগ নিশ্চিত করা, বাল্যবিবাহ রোধে বিবাহ নিবন্ধন প্রক্রিয়ার আধুনিকায়ন, বাল্যবিবাহ ও নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলা, বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে উপজেলা ও ইউনিয়ন কমিটি সক্রিয়করণ এবং শক্তিশালী করাসহ বাল্যবিবাহের ক্ষতিকর দিকগুলো নিয়ে ব্যাপক প্রচার প্রচারণা চালানোর উপর জোর তাগিদ দিয়েছেন বলে রোববার বিকেলে নিশ্চিত করেছেন এসিডি কর্মকর্তা সুব্রত কুমার পাল।