জামালপুরের মেলান্দহের বহুল আলোচিত সম্ভ্রম হারিয়ে মালঞ্চ এম.এ. গফুর উচ্চবিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্রী আশামনি (১৫) আত্মহত্যার ঘটনার সহাতাকারিদেরও গ্রেপ্তারের দাবি করেছেন ভূক্তভোগি পরিবারসহ এলাকাবাসিও। এহেন অনৈতিক কাজে জড়িত অন্যান্যদেরও আইনের আওতায় আনার দাবিতে আজো (১৩ মার্চ) বেলা ১১টায় মানবন্ধন করেছে বালুআটা এম.এ. রশিদ উচ্চবিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষকরাও।
আশামনির বাড়িতে এখনো চলছে শোকের মাতম। শিলা বেগমের একমাত্র মেয়ে আশামনিকে হারিয়ে ভারসাম্য হারিয়ে ফেলছেন। শিলা বেগম মেয়ের স্কুল ব্যাগ ও জামা কাপড় বুকে নিয়ে বক্ষবিদির্ণ আর্তচিৎকার, দিকবিদিক ঘুরা-ফেরার দৃশ্য প্রতিবেশিসহ আগতদের মাঝেও পীড়া দিচ্ছে।
আশামনির বাবা আবু মিয়ার আশংকা, মেয়েকে সম্ভ্রমহানির মূল নায়ক তামিত আহম্মেদ স্বপনের সাথে আছে প্রভাবশালী মহলের সখ্যতা। আছে অর্থ-বিত্ত। আছে দুস্কৃতিকারি লোক। মেয়ের ইজ্জতহরণকারি স্বপনকে গ্রেপ্তারের জন্য র্যাবের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন। মিডিয়ার সহায়তা কামনা করে আশামনির বাবা আবু মিয়া বলেন-যারা আমার মেয়েকে ডেকে নিয়ে গেল। যে বাড়িতে মেয়েকে আটকে রেখেছিল। যারা অপকর্মে সহায়তা করেছে, তাদেরও গ্রেপ্তার চাই। ফাঁসি চাই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চাই।
আশামনির স্কুলের প্রধান শিক্ষক কফিল উদ্দিন মোল্লা এবং শরীর চর্চা শিক্ষক মোশাররফ হোসেন, সহপাঠিরাও জানান-আশামনি অত্যন্ত মেধাবী ছাত্রী ছিলো। তারা আশামনির আত্মহত্যার প্ররোচিতদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেছেন।
গ্রেপ্তারকৃত আসামি ও মামলার সর্বশেষ অবস্থা জানতে চাইলে মেলান্দহ থানার অফিসার ইনচার্জ মায়নুল ইসলাম জানান-আসামীকে কোর্টে সোপর্দ করা হয়েছে। রিমান্ড চাওয়া হয়নি। তবে গ্রেপ্তারকৃত স্বপনের দেয়া তথ্য সতর্কতার সাথে যাচাই বাছাই করা হচ্ছে। আশামনিকে আটকে রাখার স্থানও সনাক্ত হয়েছে। এ ছাড়া আরো কিছু তথ্য পাওয়া গেছে। যা এই মুহুর্তে প্রকাশ করা যাচ্ছে না।
উল্লেখ্য, ১০ মার্চ আশামনি (১৫)কে কৌশলে তার বান্ধবীদের মাধ্যমে ডেকে নিয়ে একটি ঘরে আটকে রেখে সম্ভ্রমহানি ঘটায় এবং অশ্লিল ভিডিও ধারণ করে তামিম আহম্মেদ স্বপন। বাইরে এ ঘটনা প্রকাশ করলে ইন্টারনেটে ভিডিও ছড়িয়ে দেয়ার হুমকী দেয়। ওইদিন সন্ধ্যার দিকে আশামনির মা শিলা বেগম জানালা দিয়ে মেয়েকে গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান। পাশে আশামনির হাতের লেখা দু’টি চিরকুট পাওয়া যায়। চিরকুটে উল্লেখ, তামিম আমাকে সারাদিন এক রুমে আটকাইছে। তামিম আমাকে খুব ডিস্টার্ব করত। ও আমার সাথে খুব খারাপ কিছু করেছে যা বলার মত না। খবর পেয়ে পুলিশ রাতেই লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়। মামলার প্রেক্ষিতে ১২ মার্চ র্যাব স্কুল ছাত্রীর ইজ্জতহরণকারি তামিম আহম্মেদ স্বপনকে ময়মনসিংহ থেকে গ্রেপ্তার করে।