যে আমার সোনারে মারতি দা দিল, যারা খুনীরে দা আগায় দিয়ে সাহায্য করিল তাগের কিছুই হলো না। আমরা গরীব তাইতি কি এরাম হলো’ এমনি নানা কথা বলে এ প্রতিবেদকের সামনে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন ভাই-বোনের জোড়া খুনের মামলা রায়ে সন্তষ্ট হতে না পারা হত্যার শিকার কবীর হোসেনের মা ছাকিরুন্নেছা। একইভাবে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন সেদিনের হত্যাকান্ডের শিকার শারমিনের মা রাশিদা বেগম।
যশোরের মনিরামপুরে আলোচিত ভাই-বোনের জোড়া খুনের মামলার রায়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন স্বজনরা। রায়ে এক আসামীর ফাঁসি এবং বাকিরা খালাস পাওয়ায় তারা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। রায়ে সন্তষ্ট না হওয়ায় বাদিপক্ষ উচ্চ আদালতে আপিলের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। গত ৩ মার্চ অতিরিক্ত দায়রা জজ মোস্তফা কামাল এ আদেশ দেন।
জোড়া খুনের মামলার বাদি জমির সরদার জানান, উপজেলার বাটবিলা মৌজার ৩৯৫ নং দাগের ছয় শতক জমি নিয়ে সিরাজুল ইসলাম গংদের বিরোধ চলছিল। ঘটনার দিন ২০১২ সালের ২৯ জানুয়ারি দুপুর প্রায় দেড়টার দিকে ওই বিরোধপূর্ণ জমিতে বেড়া দিতে থাকে সিরাজুল ইসলাম। তারা বাধা দিলে সিরাজুল ইসলাম খেজুর গাছ কাটা গাছি দা নিয়ে চাচী করিমন নেছা, স্ত্রী শিরিনা বেগম ও আরিফা খাতুন তাদের ধাওয়া করে। পরে তাদের ধরতে না পেরে জমিরের ৯ম শ্রেণিতে পড়-য়া শারমিন খাতুন (১৪) পেয়ে গলায় ও পেটে কোপ দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। এরপর বোনকে মারতে দেখে কবীর হোসেন এগিয়ে গেলে তাকেও গলায় কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় জমির সরদার সিরাজুল ইসলাম ও তার স্ত্রী শিরিনা বেগম, আমিন সরদার ও তার স্ত্রী করিমন নেছা, মোমিন সরদার ও স্ত্রী আরিফা খাতুনকে আসামীকে করে থানায় মামলা করেন।
জানাযায়, মামলার প্রথম তদন্তকারি কর্মকর্তা ছিলেন মনিরামপুর থানার তৎকালিন এসআই জাহাঙ্গীর আলম এবং পরে তদন্তকারি কর্মকর্তা হন একই থানার তৎকালিন এসআই জামিরুল ইসলাম। এসআই জামিরুল ইসলাম মামলার তদন্ত করে আমিন সরদার ও মোমিন সরদারকে চার্জশীটে অব্যহতি চেয়ে বাকি ৫ জনকে অভিযুক্ত করে ২০১২ সালের ৮ অক্টোবর আদালতে চার্জশীট জমা দেন।
দীর্ঘ প্রায় ১০ বছর মামলার শুনানির পর গত ৩ মার্চ অতিরিক্ত দায়রা জজ মোস্তফা কামালের আদালতে সিরাজুল ইসলামকে ফঁসির আদেশ দেওয়া হয়। একই সাথে তাকে ৫০ হাজার টাকার অর্থ দন্ডের আদেশ দেন এ আদালত। আদালত মামলার ৩ আসামি করিমন নেছা, শিরিনা খাতুন ও আরিফা খাতুনকে খালাস প্রদান করেন।
মামলার বাদি জমির সরদার বলেন, তিনি এ মামলায় খুশি না। এজন্য উচ্চ আদালতে শরনাপন্ন হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।