প্রশাসনকে দিয়ে মাটি কাটার কাজ বন্ধ করানোর ভয় দেখিয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগে দুই সাংবাদিককে আটক করেছে পুলিশ। সোমবার (১৪ মার্চ) সকালে তাদের নামে মামলা হওয়ার পর গ্রেফতার দেখিয়ে সকালে আদালতে সোপর্দ করা হয়। এর আগে রোববার (১৩ মার্চ) সন্ধ্যায় ভয় দেখিয়ে টাকা আদায়ের চেষ্টাকালে তাদের লাঞ্ছিত ও আটক করে পুলিশের হাতে সোপর্দ করেন এলাকাবাসী। পাবনার চাটমোহর উপজেলার হান্ডিয়াল গ্রামে ঘটে এ ঘটনা। গ্রেফতারকৃতরা হলেন,উপজেলার হান্ডিয়াল পাকপাড়া গ্রামের সুলতান মাহমুদের ছেলে রফিকুল ইসলাম রনি (৩৮) ও সিদ্দিনগর পশ্চিমপাড়া গ্রামের আবদুল মোতালেব প্রামানিকের ছেলে সোহেল রানা (৩৫)। এদের মধ্যে রফিকুল ইসলাম রনি নিজেকে দৈনিক জনকণ্ঠ,দৈনিক প্রতিদিনের সংবাদ,ইংরেজি দৈনিক বাংলাদেশ টুডে,পাবনা থেকে প্রকাশিত দৈনিক খবর বাংলা ও দেশের কণ্ঠ পত্রিকার সাংবাদিক (প্রতিনিধি) পরিচয় দিতেন। এছাড়াও তার নিজ ইউনিয়ন হান্ডিয়ালে তার হাতে গড়া হান্ডিয়াল প্রেসক্লাবের সভাপতিও ও হান্ডিয়াল থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক ও অনলাইন চলনবিলের আলো পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশকও তিনি। তার সহযোগি সোহেল রানা জয় সাপ্তাহিক চলনবিলের আলো পত্রিকার ব্যবস্থাপনা সম্পাদক ও ওই প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক।
স্থানীয় সূত্র জানায়,রোববার বিকালে অভিযুক্তরা হান্ডিয়াল বাঘলবাড়ি কৈ এলাকার বাসিন্দা ছুরমান আলী ও তার শ্যালকের কাছে নিজেদের দাবি করা টাকার লেনদেন নিয়ে জনরোষে পড়ে ও লাঞ্ছিত হয়। খবর পেয়ে তাদের উদ্ধার করে হান্ডিয়াল পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ।
এলাকাবাসী ও থানায় দায়ের করা এজাহারের ভাষ্যানুযায়ী,ছুরমান আলী তার বাড়ি তৈরির জন্য মাটি কাটছিলেন তার শ্বশুরের সম্পত্তি থেকে। মাটি কাটছিলেন এস্কেভেটর (ভেকু মেশিন) দিয়ে। মাটি কাটার কাজ চলমান রাখতে চাইলে ছুরমান আলীর শ্যালকের কাছে ১৫ হাজার টাকা চায় অভিযুক্ত দুই সাংবাদিক। অন্যথায় প্রশাসনকে দিয়ে মাটি কাটা বন্ধ করে দেওয়ার ভয় দেখায়,কারণ হিসাবে জানায় ভেকু দিয়ে মাটি করা সরকারিভাবে নিষেধ। তাদের আস্ফালনে ছুরমানের শ্যালক ৪ হাজার টাকা দেয়। আরও ৬ হাজার টাকা দেওয়ার জন্য ১৩ মার্চ তারিখ নির্ধারণ করে দেয় অভিযুক্তরা। এ ঘটনা গত ১১ মার্চের। পূর্ব নির্ধারিত দিনে ওই দুই সাংবাদিক অবশিষ্ট টাকা আনতে সেখানে আবারও যায়। ছুরমানের শ্যালক টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে তারা মাটি কাটা বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দেয়। এ সময় স্থানীয়দের রোষে পড়েন তারা। উত্তম মাধ্যম দিয়ে আটকে রাখা হয় একটি ঘরে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয় দু’জনকে।
চাটমোহর থানা অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ আনোয়ার হোসেন জানান,লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পরে ওই দুইজনের বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার আইনে মামলা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ আনা হয়েছে। মামলাটি করেছেন ছুরমান আলীর শ্যালক সোনাবুল্লাহ। আসামিদের সোমবার সকালে পাবনা আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।