বড়াইগ্রামে গণধর্ষণ মামলা তুলে না নেয়ায় বাদীকে দফায় দফায় মারপিট ও প্রানণাশের হুমকি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এতে বর্তমানে চরম নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটাচ্ছে মামলার বাদী। এদিকে, ধর্ষণ মামলা আপোষের কথা বলে আসামীদের কাছ থেকে দুই লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে একজন মহিলা ইউপি সদস্যসহ প্রধানদের বিরুদ্ধে। এসব ঘটনায় বাদীনী থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন বলে জানা গেছে।
লিখিত অভিযোগ ও বাদীনী সুত্রে জানা যায়, ২০২০ সালের ১৭ জুলাই সন্ধ্যায় মেয়েটি (১৫) মায়ের সঙ্গে রাগ করে রয়না ভরটে নানার বাড়ি যাবার পথে রয়না ফিলিং স্টেশন এলাকায় গণ ধর্ষণের শিকার হয়। এ ঘটনায় ১৯ জুলাই মেয়েটির মা বাদী হয়ে উপজেলার দিঘলকান্দি গ্রামের ফরহাদ হোসেনের ছেলে শাহাদৎ হোসেন (২১) ও দেলু মন্ডলের ছেলে স্বপন মন্ডলের (২৪) নামে থানায় মামলা দায়ের করেন। এরপর পুলিশ তাদের দুজনকে আটক করে জেলহাজতে পাঠালে আসামীর স্বজনরা আপোষের জন্য জোনাইল ইউনিয়নের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য জহুরা বেগমসহ কয়েকজন গ্রাম প্রধানের স্মরণাপন্ন হন। এ সময় তারা বাদীকে দেয়ার কথা বলে জরিমানা স্বরুপ আসামি পক্ষের কাছ থেকে দুই লাখ টাকা নেন। কিন্তু সে টাকা বাদীকে না দিয়ে অপর একজন সাবেক ইউপি সদস্যের কাছে জমা রাখেন। এরপর থেকে আসামীরাসহ ইউপি সদস্য জহুরা বেগম ও তার স্বামী জরিফ আলী বাদীনীকে আপস করে মামলা প্রত্যাহারের জন্য চাপ দিয়ে আসছেন। কিন্তু বাদীনী তাতে রাজি না হওয়ায় তারা নানা ভাবে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করাসহ গত ৮ মার্চ তাকে মারপিট করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এর আগেও তাকে দফায় দফায় হুমকির মুখে তুলে নিয়ে গিয়ে আপস বৈঠকের নামে মানসিক নির্যাতন করাসহ একাধিক বার মারপিট করে তারা। এমনকি মামলা প্রত্যাহার না করলে তাকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকিও দেয়ায় বর্তমানে তিনি চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। ইতোমধ্যে জরিমানার দুই লাখ টাকার মধ্যে এক লাখ টাকা মহিলা ইউপি সদস্য ও তার ছেলে হাতিয়ে নিয়েছেন এবং অবশিষ্ট টাকারও হদিস নেই বলে জানা গেছে।
এ ব্যাপারে বাদীনী জানান, তারা প্রতিদিনই আমাকে কিছু টাকা নিয়ে মামলা প্রত্যাহারের জন্য হুমকি দিচ্ছে। কিন্তু আমি টাকা চাই না, আমি আমার মেয়ের উপর করা নির্যাতনের সুষ্ঠ বিচার চাই।
সোমবার ইউপি সদস্য জহুরা বেগমের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি ও আমার ছেলে এক লাখ নিয়েছি। বিষয়টি মিমাংসা করতে থানা, কোর্ট-কাচারীতে দৌড়াদৌড়ি করতে এ টাকা খরচ হয়েছে। অবশিষ্ট টাকা আছে, তারা মামলা প্রত্যাহার করলেই তা তাদেরকে দেয়া হবে। এ সময় স্থানীয়ভাবে ধর্ষণ মামলা আপস করা আইনসিদ্ধ কিনা জানতে চাইলে তিনি কোন সদুত্তর দেননি।
বড়াইগ্রাম থানার ওসি আবু সিদ্দিক জানান, বাদীনিকে মারপিটের বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি, এ ব্যাপারে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।