রাজশাহীর বাগমারায় অভিযান চালিয়ে ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তারা হলো আত্রাই উপজেলার চানুপুর হালদারপাড়া গ্রামের কাঞ্চন চক্রবর্তীর ছেলে সনাতন চক্রবর্তী (২৫), বাগমারা উপজেলার শ্রীপতিপাড়া গ্রামের আজাহার আলীর ছেলে রকি (৩০) এবং একই উপজেলার উত্তর কোয়ালীপাড়া গ্রামের মাজেদুর রহমানের ছেলে ফারুক হোসেন (৩৬)।
গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে সনাতন চক্রবর্তীকে ফেন্সিডিল এবং রকিকে চোলাইমদ সহ গ্রেপ্তার করা হয়। অপরদিকে ফারুক হোসেনকে নারী নির্যাতন মামলায় এক দিনের রিমান্ডে আনা হয়েছিল।
মঙ্গলবার রাতে মাদক সহ আটককারীদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। বুধবার বেলা ১১ টায় গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে বলে জানান বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাক আহম্মেদ।
বাগমারায় প্রেমিক সহ শতফুল এনজিও’র নারীকর্মীকে উদ্ধার করেছে পুলিশ
বাগমারা (রাজশাহী) প্রতিনিধি
প্রেমিক সহ এলাকার লোকজনের হাতে ধরা পড়েছে বেসরকারি সংস্থা শতফুল বাংলাদেশের এক নারী কর্মকর্তা। ৯৯৯ ফোন করার পর পুলিশ তাদের উদ্ধার করে থানায় নিয়েছে। উদ্ধার হওয়া এনজিও কর্মকর্তার নাম সেফাতুন নেসা শিউলী (৪২)। তিনি মোহনপুর উপজেলার কোটালীপাড়া গ্রামের মৃত আবদুল হামিদের মেয়ে ও মোহনপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান। প্রেমিক সুমন হোসেনের বাড়ি পবা উপজেলার দাউকান্দি এলাকার তেকাটেপাড়া গ্রামে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শিউলী খাতুন ছয়মাস আগে শতফুল বাংলাদেশের ভবানীগঞ্জ শাখায় বদলী হয়ে আসেন। সে থেকে অফিসের পাশে চানপাড়া হেলিপ্যাড এলাকায় ভাড়া থাকেন। ভাড়া বাসাতে মাঝে মধ্যে তার স্বামী মোহনপুরের ধুরইল এলাকার মিজানুর রহমান থাকতেন। তবে কিছুদিন ধরে তিনি আসেননি। এই সুযোগে বুধবার ভোরে প্রেমিক সুমন হোসেন চানপাড়ার শিউলীর সেই ভাড়া বাড়িতে ঢুকেন। দীর্ঘক্ষণ ধরে সেখানে অবস্থান করলে লোকজনের সন্দেহ হয়। একপর্যায়ে তাদের আপত্তিকর অবস্থায় দেখতে পায়। এতে স্থানীয় লোকজন ক্ষুব্ধ হয়ে তাদের আটক করে। এ সময় তারা অসংলগ্ন কথাবার্তা বলেন। পরে এনজিও কর্মকর্তা শিউলী ৯৯৯ নম্বরে ফোন দিলে পুলিশ এসে তাদের উদ্ধার করে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে। স্থানীয় লোকজনের মারপিটে প্রেমিক সুমন ইসলাম আহত হয়েছেন।
থানায় পুলিশ হেফাজতে থাকা শিউলী জানান, তাঁদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে প্রেমের সর্ম্পক আছে। তাঁর আগের স্¦ামী মোহনপুরের ধুরইল এলাকার মিজানুর রহমানকে কয়েকদিন আগে কোর্টে এভিডেভিটের মাধ্যমে তালাক দিয়েছেন। সেই কাগজ পৌঁেছ দেওয়ার জন্য সুমন এসেছিল বলে দাবি করেন। তবে তাদের মধ্যে কোনো অবৈধ বা শারীরিক সর্ম্পক হয়নি।
সুমন হোসেনও একই রকমের কথা বলেছেন। তিনি অভিযোগ করেন, স্থানীয় লোকজন তাঁকে মারধর করেছে। তাঁর মুখমন্ডলে আঘাতের দাগ দেখা যায়। এলাকার লোকজনেরা জানান, শিউলী খাতুনের মোহনপুরের এক সাবেক চেয়ারম্যানের সঙ্গে বিয়ে হয়। এরপরে তিনি উপজেলা পরিষদের নারী ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। পরে তাকে তালাক দিয়ে মিজানুর রহমানকে বিয়ে করেন। উভয় স্বামীর সন্তান রয়েছে।
আটককৃত সুমন বলেন, শিউলীকে অনেক আগে থেকেই চিনি। এক সাথে আমরা লেখাপড়াও করেছি। তখন থেকেই চেনা জানা। সম্প্রতি মিজানুর রহমানকে তালাক দেয়া নিয়ে প্রায় দু মাস ধরে কথা হয়ে আসছিল। সে মোতাবেক শিউলীর দ্বিতীয় স্বামী মিজানুর রহমানকে তালাক দেয়া হয়েছে।
সুমন একটি বেসকারী ব্যাংকে কর্মরত ছিলেন। সেই সাথে ৩বার পবা উপজেলায় ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী হলেও জয়লাভ করতে পারেননি। তবে তার স্ত্রী বর্তমানে দুই সন্তান নিয়ে বগুড়ায় থাকেন। সেখানে তিনি চিকিৎসক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।
এদিকে শতফুল বাংলাদেশ ভবানীগঞ্জ শাখার ব্যবস্থাপক বেলাল হোসেন বলেন, শিউলী ভবানীগঞ্জ শাখার হিসাবরক্ষণ পদে কর্মরত রয়েছে। তিনি তার সন্তান নিয়ে পাশের একটি বাসায় ভাড়া থাকতেন। সেখানে কি ঘটেছে সেটা আমার জানানেই। অফিসে এসে দেখি শিউলী আসেননি। পরে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে কল করা হলে বন্ধ পাওয়া যায়।
এ ব্যাপারে বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তাক আহম্মেদ জানান, তাদেরকে আপত্তিকর অস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। শুনেছি ওই নারী তার স্বামীকে তালাক দিয়েছে। তারা একে অপরকে বিয়ে করতে চাই। বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখা হচ্ছে। তারা বিয়ে করলে করতে পারে।