রাজশাহীর বাঘা উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে কেন্দ্রীয় নেতাদের সামনে দু’পক্ষের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় পুলিশসহ ২৮ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। পরে পুলিশ পরিস্থিতি শান্ত করার জন্য এগিয়ে গেলে পুলিশের পিকআপ ভাংচুর করা হয়েছে। এ সময় পুলিশ ১৫/২০ রাউন্ড টিয়ার সেল ছোঁড়ে।
সোমবার (২১ মার্চ) বেলা ১১টায় উপজেলার শাহদৌলা সরকারি কলেজ মাঠে সম্মেলনের প্রথম অধিবেশনে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন শেষে মঞ্চে আমন্ত্রিত অতিথিরা আসন গ্রহণ করেন। এরপর কোরআন তেলাওয়াত, গীতা পাঠ ও নেতাদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেওয়া হয়। তারপর সংঘর্ষ শুরু হয়। পরে পরিস্থিতি শান্তর করার পর কমিটি গঠন করা হয়েছে। এতে সভাপতি পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এমপি ও সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বাবুল নির্বাচিত হয়েছেন।
জানা যায়, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও বাঘা পৌরসভার সাবেক মেয়র আক্কাস আলীর সমর্থকরা মঞ্চের সামনে আক্কাস ভাই আক্কাস ভাই বলে স্লোগান দিতে থাকেন। তাদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এমপির সমর্থকরা। এতে উভয়ের সমর্থকরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন।
এ সময় মঞ্চের ওপরে চেয়ার ছুড়ে মারা, চেয়ার, মাইক ভাঙচুর, কাঠের বাটাম, দেশীয় অস্ত্র, বাঁশের লাঠি ব্যবহার করা হয়। সংঘর্ষ চলে প্রায় আধা ঘণ্টাব্যাপী। এ সময় সংঘর্ষে আহত হয়েছেন ঢাকা থেকে আগত এক নেতার প্রেস সহকারী এমএসএ রেজা, বাঘা পৌর আ.লীগের সভাপতি আবদুল কুদ্দুস সরকার, শাহরিয়ার হোসেন, সিরাজুল ইসলাম, সাইফুল ইসলাম, মুরাদ হোসেন, লিটন ভুঁইয়া, আলম হোসেন, সুজন আলী, বাঘা থানার এসআই তৈয়ব আলী, জাহাঙ্গীর হোসেন, এএসআই সাজদার রহমান, পুলিশ সদস্য শাজাহান আলী, মতিউর রহমান, তাজুল ইসলাম, মনি হোসেন সহ অন্তত ২৮ জন। এর মধ্যে আহত পুলিশদেরকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্রে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। সাইফুল ইসলাম ও সিরাজুল ইসলামকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অন্য আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
ঘণ্টাখানেক পর পরিস্থিতি শান্ত হলে সম্মেলনের কার্যক্রম শুরু হয়। এতে সভাপতি পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এমপি ও সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বাবুল নির্বাচিত হয়েছেন।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এমপির সভাপতিত্বে সম্মেলন মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এ এইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন, সদস্য বেগম আখতার জাহান, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ রাজশাহী জেলা শাখার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অনিল কুমার সরকার, রাজশাহী জেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওয়াদুদ দারা (সাবেক এমপি), যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট লায়েব উদ্দীন লাভলু প্রমুখ।
এ বিষয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এমপি বলেন, বিনা উস্কানীতে চলমান সমাবেশে প্রবেশ করে আক্কাস আলী ও তার লোকজন এসে হামলা করেছেন। আ.লীগের কেন্দ্রীয় নেতার সামনে অনেক নেতাকর্মীকে আহত করেছেন। এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও বাঘা পৌরসভার সাবেক মেয়র আক্কাস আলী বলেন, শান্তিপূর্ণ সম্মেলন শুরু হয়েছে। আমার নেতাকর্মীদের নিয়ে স্লোগান দিতে দিতে মঞ্চের সামনে দিয়ে যাচ্ছিলাম। এ সময় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর লোকজন বাধা দেন। এতে একপর্যায়ে সংঘর্ষ শুরু হয়।
এ বিষয়ে বাঘা থানার ওসি সাজ্জাদ হোসেন বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে পুলিশের একটি পিকআপ গাড়ী ভাংচুর করা হয়েছে। এ সময় ১৫/২০ রাউন্ড টিয়ার সেল ছোঁড়ে শান্ত করা হয়। এ ঘটনায় একজনকে আটক করা হয়েছে।