শেখ মজিবের বেটি শেখ হাসিনা যদি আমাকে একটা ঘর দিত তাহলে শেষ সময়ে ঐডাতে থাইকা দেইখা মইরা যাইতে পারতাম। মরলেও শান্তি পাইতাম। আর আমার এই ঘরে মশার কামড়ে ঘুমাইতে পারি না মশাড়িও টাংগাইতে পারি না। যদি টাটটি ওলা (বাদরুমসহ) ঘর পাইতাম তাইলে আরামে ঘুমাইতাম। ৭০ উর্দ্ধো খুপরি ঘরে থাকা বৃদ্ধা ছহিনা খাতুন বলছিলেন কথাগুলি। দুই চোখ অন্ধ, বয়সের ভারে এখন নানারোগ শরীরে বাসা বেধেঁছে। শাররীক ভাবে সে খুবই দুর্বল। থাকেন মাটির তৈরি আড়াই ফুট উচ্চতায় পুরোনো টিনের ছোট একটি ঝুপড়ি ঘরে। চালা দিয়ে তুলা কোন মতো নিজের শরীরটুকু আটে সেখানে তার বাস। মাটির সেই ঘরে নেই কোন জানালা বা আলোর ব্যবস্থা দিন রাত সমান অন্ধকার। রয়েছে মশার অভয় আশ্রম। আর দিন শেষে সেখানেই তার ঘুম। এদিকে সরকারের দেওয়া বিধবা ভাতার টাকায় চলে অন্ধ বৃদ্ধ ছহিনা খাতুনের খাওয়া ও ওষুধপত্র।
অন্ধ ওই বৃদ্ধা শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার নয়াবিল ইউনিয়নে রাতকুচি গ্রামে একমাত্র মেয়ের জামাই বাড়ীতে মুরগির খোয়ারের মত একটি খুপরি ঘরেই তার বসবাস। অন্ধ ওই বৃদ্ধা ১১ বছরের নাতি ফরিদুলের কাঁধে হাত দিয়ে ভর করে ভিক্ষা করে আর বিধবা ভাতার টাকায় কোন মতে চলছে জীবন।
বৃদ্ধার একমাত্র মেয়ে ফুলবানু মায়ের মানবেতর জীবনযাপনের কথা বলতে গিয়ে জানান, আমার মা খুব কষ্টে আছে। মায়ের থাকার কোন জায়গা নেই। আমি নিজেইে আমার স্বামীর থাকার ঘরের পাশে মাটি দিয়ে মুরগির খোয়ারের মত করে থাকতে দিয়েছি। এতে তার অনেক কষ্ট হয়। মশা যন্ত্রনায় ঘুমাতে পারে না।
স্থানিয়রা জানান, প্রায় ২২-২৩ বছর পূর্বে এই বৃদ্ধার স্বামী মারা যায়। তার স্বামীরও কোন জায়গা ছিল না। অন্যের বাড়ীতে থাকত। স্বামী মারা যাওয়ার কয়েক বছর পর বৃদ্ধার একচোখ নস্ট হয়ে যায় অর্থের অভাবে চিকিৎসা না করে কিছুদিন পর আন্য চোখও নস্ট হয়ে যায়। প্রায় ১০ বছর ধরে অন্ধ হয়েই কষ্ট করে মানবেতর জীবন যাপন করছে।
নয়াবিল ইউনিয়নের পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বলেন, খোঁজ নিয়ে দেখব যদি ঘর দেওয়র সুযোগ থাকে ঘরের ব্যবস্থা করা চেষ্টা করবো।
নালিতাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হেলেনা পারভিন বলেন, নয়াবিল ইউনিয়নের আমাদের নির্দিষ্ঠ স্থানে যদি ঘর নিতে চায় সেক্ষেত্রে আমরা ঘরের ব্যবস্থা করতে পারি।