শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার মরিচপুরান দাখিল মাদরাসার সুপার মাওঃ ইব্রাহিমকে অপসারনের দাবিতে এক মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে মাদরাসার ছাত্র-ছাত্রী, অভিভাবক ও এলাকাবাসী।
বুধবার (২৩ মার্চ) দুপুরে মাদরাসা সংলগ্ন পাকা সড়কে এ মানব বন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। পরে তারা মাদরাসায় গিয়ে তার স্ববিস্তারে প্রতিবাদ জানিয়ে মানববন্ধনে বক্তরা উল্লেখ করেন, সুপার ইব্রাহিম খলিল অনেক দিন যাবত মাদরাসায় নিয়মিত আসেন না। সম্প্রতি মাদরাসার ম্যানেজিং কমিটি গঠন করার লক্ষ্যে উপজেলা নির্বাহী অফিস থেকে প্রিজাইডিং অফিসার হিসাবে নিয়োগ দেন অ্যাকাডেমিক সুপারভাইজার শাহজামালকে। অ্যাকাডেমিক কর্মকর্তা সুপারের মনমত কমিটি ঘোষনা না করায় সুপার ইব্রাহীম একই স্বারকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার স্বাক্ষর জাল করে উপজেলা সমবায় অফিসার প্রনভ চন্দ্র ভট্রাচার্য্যকে দায়িত্ব দেয় বলে জানায়। পরে সুপার তফসিল, খসড়া ভোটার, চুড়ান্ত ভোটার তালিকা নিয়ম অনুযায়ী প্রকাশ না করে তা সুপারের মনগড়া মত করে বিষয়গুলির কাগজপত্র তৈরি করে বোর্ডে প্রেরন করে। এই কার্যক্রমে প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রী, অভিভাবসহ এলাকার কোন জনগন অবগত নয় এবং নিজের ইচ্ছামত মনগড়া একের পর এক কাজ করে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করছে বলে অভিযোগ করেছেন অভিভাবকগণ।
মাদরাসার (পেরেন্টস টিচার্স এসোসিয়েশন) পিটিএ সভাপতি মোঃ রহুল আমিন বলেন, আমি কোন দিন জানতে পারলাম যে, মাদরাসার ছাত্র-ছাত্রীদের পড়ালেখার মান উন্নয়নের স্বার্থে ম্যানেজিং কমিটিসহ কোন একটা সভা বা উন্নয়ন কার্যক্রমে কোন ধরনের একটা আলোচনাসভা অন্তত বিগত ৫/৭ বছরের মধ্যে হয়নি। ম্যানেজেং কমিটি গঠন তো তারা নিজেরা মনমতো তৈরি করে পাঠিয়ে দেয়। এখানে মানেজিং অন্যান্য সদস্য বা এলাকাবাসী কেউ তা জানে না। এখন মাদারাসার পড়ালেখার মান ভাল না হওয়ার অনেক অভিভাবকগন তার সন্তানদের এখান থেকে নিয়ে চলে যাচ্ছেন অন্যত্র।
মাদরাসার সাবেক সভাপতি মোঃ মঞ্জুরুল বলেন, সুপার বরাবরই উপজেলা প্রশাসনকে মিথ্যা মনগড়া তথ্য দিয়ে মাদরাসার শৃংখলা বিনষ্ঠ করে আসছেন। বিগত সময় ধরে আর্থিক অনিয়ম ও শিক্ষক নিয়োগে নানা দুর্নীতিতে সুপারের জুড়ি নেই। ফলে শিক্ষার পরিবেশসহ মাদরাসায় ব্যাপক ভাবে বিনষ্ট হয়েছে। এখন এই পরিবেশ ফিরিয়ে আনা এবং মিথ্যাবাদি সুপারের অপসারন দাবি করছি।
এলাকাবাসাী আকিকুল ইসলাম বলেন, মাদরাসায় লেখাপড়া একে বারেই হয় না। লোক দেখানো কার্যক্রম তারা করে। মাদরাসার অবকাঠামো একেবারে বিনষ্ট হয়ে গেছে। ছাত্রছাত্রীও মাত্র ৬ষ্ঠ শ্রেনী হতে ১০ শ্রেনী পর্যন্ত ১১০/১২০ মতো জনের কিছু উপড়ে। সুপার দীর্ঘদিন যাবৎ নিজেই মাদরাসায় অনুপস্থিত। তাহলে প্রতিষ্ঠান চলে কিভাবে ? সব শিক্ষক সরকারের বেতন ঠিকই মাসে মাসে নিচ্ছেন অথচ পড়ালেখার মান উন্নয়নে তারা কোন কর্নপাত করেন না। ছাত্রছাত্রীরা এখন অন্যত্র চলে যাচ্ছে।
মাদরাসার সহকারী সুপার মাওঃ আঃ মান্নান বলেন, মাদরাসায় ইংরেজি শিক্ষকসহ শূন্যপদে ও সৃষ্ট পদে জনবলের অভাব রয়েছে। আমাদের অনেক সমস্যা রয়েছে।
নালিতাবাড়ী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের অ্যাকাডেমিক সুপারভাইজার শাহজামাল বলেন, কোন মনগড়া, মিথ্যা তথ্যে ভরপুর ম্যানেজিং কমিটির কাগজপত্রে আমি স্বাক্ষর করতে পারি না।
মাদরাসার এডহক কমিটির আহ্বায়ক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হেলেনা পারভিন বলেন, কাগজপত্রে দেখে কিছু গড়মিল পাওয়া যাচ্ছে। আমি রেজিষ্টার দেখে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহন করবো।
মানববন্ধনে ছাত্র-ছাত্রী, অভিভাবক ও এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিগণ সমস্বরে যথাযথ র্কতৃপক্ষের নিকট মাদরাসা সুপারের অপসারন দাবি করেন।
মারববন্ধনে ছাত্র-ছাত্রী, অভিভাবক ও এলাকার প্রায় ২শতাধিক মানুষ উপস্থিত ছিলেন