শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার মরিচপুরান দাখিল মাদরাসার সুপার মাওলানা ইব্রাহীমের বিরোদ্ধো উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার স্বাক্ষর জালিয়াতের অভিযোগ উঠেছে।
অনিয়ম, র্দীঘদিন যাবত প্রতিষ্ঠানে অনুপস্থিতসহ নানান কারণে তার অপসারণের দাবিতে গত ২৩ মার্চ মানববন্ধনও করেছে এলাকাবাসী ছাত্র/ছাত্রী ও অভিভাকরাবৃন্দ।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, মাদরাসার ম্যানেজিং কমিটি গঠন করার লক্ষ্যে উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রিজাইডিং অফিসার হিসাবে নিয়োগ দেন মাধ্যমিক অ্যাকাডেমিক সুপারভাইজার শাহজামাল কে। ওই কর্মকর্তা সুপারের মনমত মনগড়া কমিটি ঘোষণা না করায় সুপার একই স্বারকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার স্বাক্ষর স্ক্যান করে উপজেলা সমবায় অফিসার প্রনভ চন্দ্র ভট্রাচার্য্যকে দায়িত্ব দেন। পরে সুপার তফসিল, ভোটার তালিকা নিয়ম অনুযায়ী প্রকাশ না করে সুপারের মনগড়া মত কমিটি করে বোর্ডে প্রেরণ করেন। ২৪ মার্চ বৃহস্পতিবার ইউএনও বরাবর লিখিত অভিযোগটি করেন মাদরাসার ছাত্র অভিভাবক মাশিউর রহমান।
জানা যায়, গত ২২ ফেব্রয়ারী থেকে সারাদেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা হলেও সুপার অনুপস্থিত। ২২ ফেব্রয়ারী থেকে ২৪ মার্চ বিনাছুটিতে সুপার ইব্রাহীম মাত্র একদিন মাদরাসায় আসেন ৯ই মার্চ। মাদরাসায় নিয়মিত না আসাসহ নানান অনিয়ম আর দুর্নীতির ফলে ২০১০ সালের অক্টোবর মাসে সুপার ইব্রহীমকে ১৮ মাসের জন্য সাসপেন্ট করে রাখার হয়। উল্লেখ্য ১৯৭১ সালে মাদরাসা প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৯১ সালে ইব্রাহীম মাদরাসার সুপার হিসাবে যোগদান করেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মাদরাসার কয়েকজন শিক্ষক বলেন, মাদরাসা খোলার পর সুপার মহোদয় মাত্র একদিন এসেছেন। আমরা ওনার অধিনস্থ হওয়ায় আমরা কিছু বলতে পারিনা। মাদরাসা ঘর রং করার জন্য টাকা দিয়েছি। কিন্তু রং না করেই টাকা খরচ করে ফেলেছন সুপার। অষ্টম ও নবম শ্রেণির কয়েকজন শিক্ষার্ত্রী বলেন, সুপার হুজুর নিয়মিত মাদরাসায় আসেন না। ভাঙ্গা-চুড়া একটা বাথরুম। এখন প্রচন্ড গরম, বিদ্যুত আছে কিন্তু ক্লাস রুমে কোন ফ্যান নাই। হুজুর আমাদের অবহেলা করেন। কোন বিষয়ে হুজুরের স্বাক্ষর আনতে গেলে টাকা দিতে হয় টাকা ছাড়া কোন স্বাক্ষর দেন না।
মাদরাসার সাবেক সভাপতি মঞ্জুরুল বলেন, সুপার বরাবরই উপজেলা প্রশাসনকে মিথ্যা মনগড়া তথ্য দিয়ে মাদরাসার শৃংখলা ও অর্থ বিনষ্ঠ করে আসছেন। ফলে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনা এবং মিথ্যাবাদি সুপারের অপসারণের দাবি জানান তিনি।
সুপার নিজের ইচ্ছামত একের পর এক কাজ করে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করছে বলে অভিযোগ করেছেন কয়েকজন অভিভাবক।
উপজেলা অ্যাকাডেমিক সুপারভাইজার শাহজামাল বলেন, ইউএনও মহোদয় আমাকে প্রিসাইডিং অফিসার নিয়োগ করেছিল আমি সুপারের মনমত অবৈধভাবে কমিটি করেনি পরে জানতে পাই একই স্বারক ও তারিখে সমবায় অফিসারকে দিয়ে কমিটি করেছে।
উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা প্রনবচন্দ্র চন্দ্র ভট্রার্চ্য বলেন, মাদরাসা সুপার আমাকে ইউএনও মহোদয়ের স্বক্ষর সহ আমাকে প্রিজাইডিং অফিসর এর নিয়োগপত্র দেয়। সে আলোকে আমি কমিটি গঠনের কাজ করে সুপারের হাতে দিয়েছি।
অভিযুক্ত সুপার মাওলানা ইব্রাহীম মোবাইল ফোনে ইউএনও’র স্বাক্ষর স্ক্যান করার বিষয়ে সাংবাদিকদের বলেন, যা করা হয়েছে নয়া সভাপতি জহুর করছে। এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না।
মাদরাসার এডহক কমিটির আহ্বায়ক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হেলেনা পারভিন কাগজপত্র দেখে বলেন, কিছু গড়মিল তো পাওয়া যাচ্ছে। আমি রেজিষ্টার দেখি। যদি গড়মিল পাই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবো।