আর কত দিন হাতির সাথে যুদ্ধ করবো ? সোমবার ৪ এপ্রিল সন্ধ্যা ৭টা৩০ মিনিট থেকে টানা ১২টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত বন্য হাতির সাথে যুদ্ধ চলে/শত শত লোকজনের সাথে। কেউ দর্শক, আবার কেউ কেউ যুদ্ধে অংশ নেয়। ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া। ১২ টা৩০ পর্যন্ত চলতে থাকে। একপর্যায়ে বন্য হাতির দল সরে গেলে যুদ্ধ বিরতি ঘোষণা দেওয়ার পর যে যার মতো বাড়ীতে যায়। শুনেছি জন প্রতিনিধি ও বন কর্মীগনও দর্শক হয়ে এসেছিল। কিন্তু কিছু ডিজেল দিয়ে সহযোগিতা করলে অনেক গরীবের ফসল রক্ষা পেতো! নিরবতা ঝুবে আবার হাতি দল ১টা ৩৫মি দিকে ফসলের ক্ষেতে নেমে পড়ে। সারা রাত চলে তান্ডব, এতে গরীব কৃষক আবুল মিয়া, লিটন মিয়া, মার্টিন মারাক সাহাবুদ্দিন ও আমি লুইছ নেংমিনজাসহ আরো অনেকের ফসল খেয়ে মারিয়ে নষ্ট করে চলে যায়। এভাবে গরীব কৃষক মাহজনী ও এনজিওদের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে ডিজেল কিনেছে ও আবাদও করেছে তাদের অবস্থা এখন কি হবে ? জানি না এর শেষ কোথায়! ? কি হবে ভবিষ্যত ? আর কতদিন যুদ্ধ করতে হবে হাতির সাথে? এমন কথাগুলো বলছিলেন শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার বারামারী এলাকার আদিবাসী কৃষক লুইছ নেংমিনজা।
সূত্রে জানা গেছে, শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার গারো পাহাড়ে প্রায় দুই যুগ ধরে বন্যহাতি অব্যাহতভাবে তান্ডব চালিয়ে জান মালের ব্যাপক ক্ষতি সাধন করে আসছে। সরকারিভাবে ফসলের ক্ষতিপূরণ হিসেবে সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা দেওয়ার কথা থাকলেও ক্ষতিপূরণ প্রাপ্তীতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে বলে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা জানিয়েছেন।
উপজেলার বারমারী সীমান্তের আন্ধারুপাড়া ও ডালুকোনা এলাকার পাহাড়ের ঢালে সোমবার (৪ এপ্রিল) রাতব্যাপী তান্ডব চালিয়ে বেশ কয়েকজন কৃষকের উঠতি বোরো ফসল খেয়ে ও পা দিয়ে মাড়িয়ে নষ্ট করে দিয়েছে বন্যহাতির দল। এলাকার কৃষকরা অভিযোগ করেন বোরো ফসল রক্ষায় হাতি তাড়াতে মশাল জ¦ালানোর জন্য কেরোসিন তেল পাচ্ছেন না। তাই বন্যহাতির অব্যাহত তান্ডবে বোরো ফসল ঘরে তোলার আশংকায় রয়েছেন তারা।
নালিতাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বছির আহমেদ বাদল বলেন, নিয়মানুযায়ী বন্যহাতির দ্বারা কোন কৃষক যদি ক্ষতিগ্রস্ত হয় তাহলে ক্ষতিপূরণ পেতে ক্ষতির পরিমাণ উল্লেখ করে থানায় জিডি করতে হয়। থানায় জিডি করার পর তদন্ত সাপেক্ষে প্রকৃত ক্ষতির পরিমাণ উল্লেখ করে আমরা জিডি গ্রহন করে তার প্রতিবেদন দিচ্ছি।
বন বিভাগের মধুটিলা রেঞ্জ কর্মকর্তা আবদুল করিম বলেন, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী নিদ্রিষ্ট ফরমে ক্ষতির পরিমাণ উল্লেখ করে ক্ষতিপূরণের আবেদন করার পর তদন্ত সাপেক্ষে কৃষকদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে নালিতাবাড়ী উপজেলার পানিহাটা তাড়ানি, বুরুঙ্গা ও বাতকুচি এলাকার বেশ কয়েকজন কৃষককে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে। এটি চলমান প্রক্রিয়া পর্যায়ক্রমে সকল ক্ষতিগ্রস্ত কৃষককে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।