খুলনা জেলার দিঘলিয়া উপজেলার গাজীরহ্টা ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের বামনডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেনীর ছাত্রী রাবেয়া খাতুন(৭) কে শারীরীক নির্যাতনের ঘটনায় স্কুলের নৈশ প্রহরী সাজ্জাদুল ইসলাম ওরফে আকিফুলকে বরখাস্ত করে তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছেন বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। গত ৭ এপ্রিল এ-সংক্রান্ত সংবাদ গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর দিঘলিয়া উপজেলা প্রশাসন উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার আব্দুল্লাহ আল মামুনকে প্রধান করে দুই সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। গত সোমবার তদন্ত কমিটি স্কুল পরিদর্শন করে বিদ্যালয়ের শিক্ষক, বিদ্যালয় ম্যানিজিং কমিটি, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেছেন। এ দিকে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অভিযুক্ত নৈশ প্রহরী সাজ্জাদুল ইসলামকে বাঁচাতে দৌড়ঝাপ শুরু করেছেন বলে একাধিক অভিভাবকেরা এ প্রতিবেদককে জানিয়েছেন।
গত ৭ এপ্রিল গণমাধ্যমে বামনডাঙ্গা স.প্রা. বিদ্যালয়ের প্রহরীর বিরুদ্ধে শিশু শিক্ষার্থীকে মারপিটের অভিযোগ এনে সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর বিদ্যালয়ের ম্যানিজিং কমিটি এবং প্রশাসন নড়েচড়ে বসেন। ঘটনার পর সংবাদ কর্মীরা বিদ্যালয়ে আসলে জানাজানি হওয়ার পর বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অভিযুক্ত সাজ্জাদুল ইসলামকে প্রাথমিকভাবে বরখাস্ত করে তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করেন। শিক্ষার্থী নির্যাতনের ঘটনায় দিঘলিয়া উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দিঘলিয়া উপজেলার সহকারী শিক্ষা অফিসার আব্দুল্লাহ আল মামুনকে প্রধান এবং উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার সঞ্চয় দাসকে সদস্য করে দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটি সোমবার বিদ্যালয় পরিদর্শন করে বিদ্যালয়ের শিক্ষক, ম্যানিজিং কমিটি, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের লিখিত ও মৌখিক সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেন। এদিকে তদন্ত কমিটি স্কুলে আসছে শুনে বিদ্যালয়ে অনেক অভিভাবক ভীড় করে অভিযুক্ত সাজ্জাদূল ইসলামের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থী নির্যাতনের একাধিক অভিযোগ তদন্ত কমিটির কাছে তুলে ধরেন। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অভিভাবক মেহেদী হাসান সোহেল বলেন স্কুলের সকল ছাত্র-ছাত্রী সাজ্জাদুল ইসলাম ওরফে আকিফুরের ভয়ে বিদ্যালয়ে আসতে চায়না। আকিফুল মানে তাদের কাছে একটি আতঙ্কের নাম বলে ঐ অভিভাবক এ প্রতিবেদককে অভিহিত করেন। অভিভাবকদের অভিযোগ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তাকে বাঁচাতে চাইছে তিনি তাকে রক্ষায় দৌড়ঝাড় করছেন বলে জানা গেছে।
এ ব্যাপারে দিঘলিয়া উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন ঘটনা শুনার পরই আমি ৫ এপ্রিল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করি। প্রাথমিক ভাবে ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় আমি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ প্রদান করে আসি। পরবর্তিতে দিঘলিয়া উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে আমাকে প্রধান করে দুই সদস্যের তদন্ত কমি্িট গঠন করে। তদন্ত কমিটি গতকাল ১১ এপ্রিল সোমবার সকালে বিদ্যালয় পরিদর্শন করে বিদ্যালয়ের শিক্ষক, বিদ্যালয় ম্যানিজিং কমিটি, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের লিখিত ও মৌখিক সাক্ষাৎকার গ্রহন করি। আগামী দুই এক দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে বলে তিনি জানান।