আমাদের গভীর সমুদ্র বন্দর মাতারবাড়ী হচ্ছে, পৃথিবীর বড় বড় জাহাজগুলো আগামী তিন চার বছরের মধ্যে বাংলাদেশে নঙ্গর করবে। আমাদের বঙ্গবন্ধু সাফারী পার্ক, যেখানে হাজার হাজার শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠছে। গাইবান্ধায় গোবিন্দগঞ্জের পথে আমাদের শুধুমাত্র একটি সুগার মিল ছিল, সেখানে পৃথিবীর বড় বড় শিল্প প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম চলমান। সেখানে আগামী ৩-৪ বছরের মধ্যে বড় বড় শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠবে। সেখানে শুধু হাজার হাজার নয়, লক্ষাধিক মানুষের কর্মসংস্থান হবে এবং আমাদের এ অঞ্চলের অর্থনীতি বিকশিত হবে। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে বলেছিলাম এখানে একটি মাত্র শিল্প প্রতিষ্ঠান ছিল অথচ আপনি এতগুলো শিল্প প্রতিষ্ঠান এখানে আপনার সিদ্ধান্তের মধ্যে দিয়ে দিলেন, এটাই হচ্ছে শেখ হাসিনা, এটাই হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর রক্তের উত্তরাধিকারী।
তিনি আরো বলেন, আমাদের শ্রমিকদের এখন অধিকার আদায়ের জন্য ইউএনও অফিস ঘেরাও করতে হয় না। আগে দেখতাম শ্রমিকরা রাজপথ দখল করে সরকারের বিরুদ্ধে স্লোগান দিয়ে অধিকার আদায়ে আন্দোলন সংগ্রাম করতেন। ডিসি অফিস- ইউএনও অফিস ঘেরাও করতেন। এখন আর তা করতে হয় না, কারণ আমাদের সরকার শ্রমিকবান্ধব সরকার। আমাদের পার্শ্ববর্তী উন্নয়নশীল দেশগুলো কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে অর্থনৈতিক ভাবে দূর্বল হয়ে গেছে। প্রতিবেশী রাষ্ট্র মালদ্বীপ, শ্রীলংকার মত দেশ ধনী থেকে গরীব হয়ে যাচ্ছে। অথচ শেখ হাসিনা’র দূরদর্শি ও সাহসী নেতৃত্বের কারণে আমরা আমাদের অর্থনীতিকে ধরে রাখতে পেরেছিলাম। জীবন এবং জীবিকা একসাথে চলবে। পৃথিবীর কোন সরকার প্রধান বা রাষ্ট্র প্রধান জীবন এবং জীবিকা এই ধরণের জীবন দর্শন দিতে পারেন নাই। আমাদের শ্রমিকেরা এবং আমরা সেদিন আমাদের রাষ্ট্রপ্রধান শেখ হাসিনার আহ্বানে মৃত্যু ঝুঁকি নিয়েও বাংলাদেশের অর্থনীতিকে ধরে রাখতে শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো খোলা রেখেছিলাম। জীবন এবং জীবিকার কথা চিন্তা করেই সারা বাংলাদেশের লক্ষ লক্ষ শ্রমিক সেদিন শেখ হাসিনার আহ্বানে সাড়া দিয়েছিলাম। আমাদের মাঝ থেকে এই কোভিড-১৯ কালীন সময়ে প্রায় ২৮ হাজার মানুষ হারিয়ে গেছে। অনেক বরণ্যে ব্যক্তিত্বকেও আমরা ধরে রাখতে পারিনি। অনেক শ্রমিক মারা গেছে। কিন্তু আমরা দেশ মাতৃকার প্রয়োজনে ঝুঁকি নিয়েছি। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় আমরা ঝুঁকি নিয়ে বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা সংগ্রাম করেছে, ৩০ লক্ষ মানুষ জীবন বিলিয়ে দিয়েছে, যেভাবে আমাদের মা ও বোনেরা আত্মত্যাগ স্বীকার করেছে, একইভাবে বাংলার মানুষ দেশরতœ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এই কোভিডকালীন সময়ে দেশমাতৃকার জন্য বিলিয়ে দিয়েছে। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ আজকে সেই অর্থনীতি ধরে রাখতে পেরেছিলাম।
শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এই এনালগ বাংলাদেশকে আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশে পরিণত করেছি। শেখ হাসিনা’র নেতৃত্বে আজকে বাংলাদেশ বিশ্বে মাথা উঁচু করে দাড়িয়েছে। এই বাংলাদেশকে আমাদেরকে ধরে রাখতে হবে এবং এটা ধরে রাখার জন্য আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। অনেক রাজনীতি হবে, গুজব রটানো হবে, কিন্তু দিন শেষে আমাদেরকে ভাবতে হবে, আমি ভালো আছি কি-না, আমার পরিবার ভালো আছে কি-না, বাংলাদেশ ভালো আছে কি-না! এই সংগ্রাম অবশ্যই শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা ধরে রাখতে পারবো।
রবিবার সকালে স্থানীয় বকুলতলা মোড়ে বিরল উপজেলার সকল শ্রমিক সংগঠনের আয়োজনে ১ মে মহান আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথি’র বক্তব্যে উপরোক্ত কথাগুলো বলেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি।
উপজেলা কুলি শ্রমিক ইউনিয়ন (রেজিঃ নং রাজ-১৩৪৩) এর সভাপতি শফিকুল ইসলাম শফিক এর সভাপতিত্বে ও বাংলাদেশ অটোবাইক শ্রমিক কল্যাণ সোসাইটির সভাপতি হাসান ফরিদ বিদ্যুৎ এর সঞ্চালনায় সমাবেশে বিশেষ অতিথিৎর বক্তব্য রাখেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও পৌরমেয়র আলহাজ্ব সবুজার সিদ্দিক সাগর, সাধারণ সম্পাদক রমাকান্ত রায়, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছাঃ আফছানা কাওছার। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন সিএনজি চালিত ইজিবাইক এর সাধারণ সম্পাদক তানজিউল ইসলাম লাবু, উপজেলা কুলি শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক কামুরজ্জামান ভোলা, বাংলাদেশ অটোবাইক শ্রমিক কল্যাণ সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক আবু কালাম, উপজেলা আওয়ামী লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক সাজ্জাদ আলী, জেলা ট্রাক ও ট্যাংকলরী শ্রমিক ইউনিয়ন (রেজিঃ নং রাজ-২৪৫) এর সভাপতি আব্দুল মোতালেব, সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, দিনাজপুর জেলা ট্রাক ও ট্যাংকলরী শ্রমিক ইউনিয়ন (রেজিঃ ন রাজ-২৬৬৮) এর সভাপতি বাবু, সাধারণ সম্পাদক জানে আলম, সহ সকল শ্রমিক সংগঠনের সভাপতি/সম্পাদক গণ।