গারো পাহাড় শেরপুর জেলার উত্তর সীমান্তজুড়ে বিস্তৃত। ঈদের আনন্দ একটু আলাদাভাবে উপভোগ করতে গারো পাহাড়ের পর্যটন
কেন্দ্রগুলোতে পর্যটকদের ঢল নেমেছে। দীর্ঘ দুই বছর খোলামেলা ভাবে এসে আনন্দ উপভোগ করতে পারেনি পর্যটকরা। এবার ঈদে কোন বিধিনিষেধ না থাকায় মানুষ এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য সারাদেশ থেকে গারো পাহাড়ের গজনী অবকাশ ও মধুটিলা ইকোপার্কে দলে দলে ছুটে আসছেন সববয়সীরা। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ঈদের অন্যরকম আনন্দ উপভোগ করতে নয়নাভিরাম গারো পাহাড়ের নৈসর্গিক সৌন্দর্য দেখতে নতুন করে ছুটেছেন পর্যটকরা। গজনী অবকাশ কেন্দ্রে নতুন করে ঝুলন্ত ব্রীজ, রুফওয়ে, ক্যাবলকার, প্যাডেল
বোর্ড, সাম্পান নৌকা সংযোগসহ সৌন্দর্য বৃদ্ধি করায় এখানে দর্শনার্থীদের আকর্ষণ বেশী। বিশেষ করে শিশু ও মহিলারা অনেক আনন্দ পান এখানে এসে। গারো পাহাড়ের সৌন্দর্য দেখাতে শেরপুর জেলা প্রশাসন গজনী অবকাশ ও বন বিভাগ গড়ে তুলেছেন মধুটিলা ইকোপার্ক নামে দুটি পর্যটন কেন্দ্র। পাশাপাশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠােনের পক্ষ থেকে তৈরি করা হয়েছে বিভিন্ন রিসোর্ট ও ক্যাফে।
গারো পাহাড়ের গজনি পর্যটন কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায় বিভিন্ন রাইডস হওয়ায় সারা পড়েছে দর্শনার্থীদের মনে। বিভিন্ন ধরনের যানবাহনে চড়ে ভিড় করছে পর্যটন কেন্দ্রে। বাস, লেগুনা, অটো, প্রাইভেটকার ও মটরসাইকেলে করে আসতে দেখা যায় দর্শনার্থীদের। আর এ যানবাহনের জ্যাম লেগে যায় পর্যটন কেন্দ্রের বাইরের ২ কিলোমিটার রাস্তা। ভিতরে ঢুকতে হিমসিম খাই পর্যটকরা। আর পর্যটন কেন্দ্রটি গাড়িতে ভরা ছিলো। এর মধ্যে মটরসাইকেলের চাপ বেশি ছিলো। সকলের গাড়িতে সাউন্ড সিস্টেম নিয়ে নাচানাচি করে পর্যটন কেন্দ্রে ঢুকতে দেখা যায়। মুন্সিগন্জ থেকে আসা মোছা: নিপা আক্তার বলেন, আমি শুধু শুনেছিলাম গৎনির কথা। কিন্তু কোন সময় আসা হয়নি। এবার আসলাম ঘুরে দেখলাম। খুব ভালো লাগলো।
এবারের ঈদটাকে এখানে এসে কাটাতে পেরে আরোও প্রাণবন্ত লাগলো। হেপি ঈদ মোবারক সবাইকে। ময়মনসিংহ থেকে আসা মো: কামরুজ্জামান বলেন, গত দুইবছর ঘর বন্দী জীবন কাটিয়েছি। আর দুইবছরে চারটি ঈদ গেছে কোন ঈদেই করোনার কারণে কোন জায়গায়
যেতে পারি নাই। এবার যখন পৃথিবি আগের মত হয়েছে তখন আর মনকে ধরে রাখতে পারি নাই। ছুটে এসেছি ময়মনসিংহ থেকে পরিবারের সবাইকে নিয়ে। আর এখন এসে দেখি সবুজে সবুজে ছেয়ে গেছে গোটা গারো পাহাড়, নানা গাছে ফুটেছে বিভিন্ন ধরনের ফুল। খুব ভালো লাগছে এসে।
পর্যটন কেন্দ্রের গারো মা ভিলেজ (রাইডস) ব্যবসায়ী আতিকুর রহমান আতিক বলেন, এবারের ঈদে লোকজনের পরিমান ভালো আসতাছে। গত দুইবছর তো করোনার কারণে বন্ধ ছিলো। এভাবে লোকজন আসলে আমাদের জন্য ভালো। আমরা কিছুটা লাভের মুখ
দেখতে পারবো।
শেরপুর জেলা প্রশাসক মোঃ মোমিনুর রশিদ বলেন, আমরা গজনী অবকাশ কেন্দ্রকে অনেকটাই উন্নয়ন করেছি। নতুন নতুন রাইডস সংযোজন করেছি। গজনী অবকাশ কেন্দ্রকে অনেকটাই উন্নয়ন করার ফলে এবারের ঈদে অনেক দর্শনার্থীর সমাগম হয়েছে। এখানে সারাবছর যেন দর্শনার্থীর সমাগম থাকে এজন্য আলাদা কিছু রাইডস করা হচ্ছে। পর্যটন মোটেল করা হবে। পর্যটন পুলিশ চাওয়া হয়েছে, আশা করি আমরা তা পাবো। ফলে নিরাপত্তা আরো জোরদার হবে। বর্তমানেও পুলিশ মোতায়েন আছে। নিরাপত্তার কোন সমস্যা নাই। অন্য পর্যটন কেন্দ্রগুলোর উন্নয়ন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।