ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সীমান্তবর্তী আখাউড়া উপজেলা। এ উপজেলার মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে প্রতিষ্ঠা করা হয় ২৫ শয্যা বিষিষ্ট একটি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। পরে আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসহ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিকে ৫০ শয্যায় উন্নত করা হয়। এখানে রোগীদের জন্য বর্তমানে রয়েছে দুটি অ্যাম্বুলেন্স। তবে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চালক না থাকায় উপজেলার প্রায় এক লাখ ৪৫ হাজার ২১৫ জন মানুষ অ্যাম্বুলেন্স সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মোট অ্যাম্বুলেন্সের সংখ্যা চারটি। যান্ত্রিক ক্রটির কারণে অচল হয়ে পড়লে অনেক আগেই দুটি অ্যাম্বুলেন্সকে গ্যারেজ বন্দী করা হয়।২০ ২১ সালের ৩১ অক্টোবর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একটি লাইফ সাপোর্ট অ্যাম্বুলেন্স হস্তান্তর করে ভারতীয় হাই কমিশন। পরে স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে দেওয়া হয় আরো একটি অ্যাম্বুলেন্স। ২০২১ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাম্বুলেন্স চালক তাজুল ইসলাম পেনশনে গেলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তার গাড়ি চালক আবু বকরকে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়। তবে বকর যখনই মূল দায়িত্বে ফিরে যায় তখনই শুরু হয় জটিলতা। পৌরশহরের শান্তিনগর গ্রামের জলিল মিয়া জানান, গত কয়েকদিন আগে অসুস্থ ভাইকে নিয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যায়। অবস্থার অবনতি হলে রাতে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে প্রেরণ করে। কিন্তু ব্রাহ্মণবাড়িয়া যাওয়ার জন্য সরকারি অ্যাম্বুলেন্সের চালক না থাকায় বেশি ভাড়া দিয়ে একটি মাইক্রোবাস দিয়ে যেতে হয়।
উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাখায়াত হোসেন নয়ন জানান, রাতে আমার এক নিকট প্রতিবেশী গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তার পরিবারের লোকজন আমাকে একটি অ্যাম্বলেন্সের ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করে। একটি অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্যস্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অনেক চেষ্টা তদবির করি। হাসপাতালে কোনো চালক না থাকায় কর্তৃপক্ষ রোগীর জন্য অ্যাম্বলেন্সের ব্যবস্থা করে দিতে পারেনি। আবুল কালাম নামের এক ব্যবসায়ি জানায়, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের গুরুতর রোগীদের ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালসহ ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।এ অবস্থায় সরকারি অ্যাম্বুলেন্স না পেয়ে জরুরি চিকিৎসাসেবা নিতে স্থানান্তরিত রোগীদের ভরসা করতে হয় বেসরকারি অ্যাম্বলেন্স, মাইক্রোবাস ও সিএনজি চালিত অটে রিকশার ওপর। এতে বাড়তি ভাড়া ও চরম দুর্ভোগের শিকার হতে হয় এ উপজেলার রোগীদের।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার -পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.মোঃ হিমেল খান বলেন, আমি যোগদানের পর পরেই অ্যাম্বুলেন্সের চালক নিয়োগের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানিয়েছি। বিষয়টি স্থানীয় সংসদ সদস্য ও মেয়রকেও অবগত করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন দ্রুত সময়ে শূন্যপদে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অ্যাম্বুলেন্স চালক পদায়ন হলে উপজেলাবাসীর স্বাস্থ্যসেবারমান আরো বৃদ্ধি পাবে।