আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগরে প্রলংকরী ঘুর্নিঝড় আম্ফান ও দু'বছর পূর্ণ হলো। দু’বছরে মানুষের কষ্টকর জীবন যাপন ও অসহনীয় পরিবেশ এবং দুর্গতি লাঘবে করনীয়তা নিয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (২১ মে) বিকাল ৫ টায় নাগরিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন “বাঁচাও উপকূল” এর উদ্যোগে তালতলা বাজার চৌরাস্তায় এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন, ইউপি চেয়ারম্যান আবু দাউদ ঢালী। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, অধ্যক্ষ মাওঃ মাসুম বিল্লাহ, প্রভাষক মাওঃ শফিকুল ইসলাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা সন্তান নূরী আযম সিদ্দিকী প্রমুখ। বক্তারা ২০২০ সালের ২০ মে সাতক্ষীরা উপকূলে আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড় আম্পানের স্মৃতি চারণ করে বলেন, দীর্ঘ ৮ থেকে কোথাও কোথাও ২৮ ঘন্টা পর্যন্ত তান্ডবে প্রতাপনগর, শ্রীউলা, পদ্মপুকুর, গাবুরা, কয়রা, বেদকাশি ইউনিয়নসহ উপকূলের কয়েক লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ে। হাজারো পরিবার ঝড়ের ক্ষত আজো বয়ে বেড়াচ্ছে। সীমাহীন সেই ক্ষতি আজও কাটিয়ে উঠতে পারেনি প্রতাপনগরের মানুষ। আম্পান বির্দ্ধস্ত এ জনপদে এখনে অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান ও সুপেয় পানির তীব্র হাহাকার বিরাজ করছে। নাজুক ও সংস্কারের অপেক্ষায় থাকা বিভিন্ন বেড়িবাঁধে ঝুঁকিপূর্ণ পয়েন্টে দ্রুত মাটি দিয়ে উঁচু করা না হলে বর্ষা মৌসুমে আবারও ভাঙ্গনের সৃষ্টি হতে পারে শঙ্কা প্রকাশ করে সাতক্ষীরা জেলাকে ডিজেস্টার জোন তথা দুর্যোগ প্রবন এলাকা ঘোষণা করার দাবী জানান বক্তাগণ। প্রযুক্তি নির্ভর স্থায়ী ও টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মান করা, লবনাক্ততা হ্রাসে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা, মরুভূমিতে রূপনেয়া উপকূলের এ বিস্তীর্ণ অঞ্চলে বনায়ন ও সবুজায়ন করতে দীর্ঘমেয়াদী রূপরেখা গ্রহণ করা, নিয়মিত খননের মাধ্যমে নদী শাসন, দূর্যোগের কারণে সৃষ্ট অভিবাসন সংকট ঠেকাতে ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে সাতক্ষীরা ও খুলনার উপকূলীয় উপজেলাগুলো নিয়ে আলাদা অর্থনৈতিক জোন ঘোষণা করা এবং উৎপাদনমূখী কলকারখানা স্থাপন করা, পানিউন্নয়ন বোর্ডসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোকে কঠোর জবাব দিহিতার আওতায় আনার দাবি উত্থাপন করেন বক্তাগণ।
সভায় বাঁচাও উপকূল এর অন্যতম সমন্বয়ক ও দৈনিক দৃষ্টিপাত সাংবাদিক মাছুম বিল্লাহ এর সঞ্চালনায় এবং বাঁচাও উপকূল এর অন্যতম সমন্বয়ক সাংবাদিক আবু ছালেহ ও সাইদুল ইসলামের সার্বিক পরিচালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলাম, ইউপি সদস্য সোহরাব হোসেন, আবদুস সবুর, যুবলীগ নেতা তৌষিকে কাইফু, মাষ্টার আলমগীর হোসেন, আতিয়ার রহমানসহ ভাঙ্গন কবলিত ভূক্তভোগী বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।