ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপীর মুখপাত্র নুপুর শর্মাসহ দুই নেতা মহানবী হযরতমুহাম্মদ (সঃ) ও নবীর সহধর্মিণী মা আয়শা (রাঃ)কে নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্যেরপ্রতিবাদে ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈলে রাষ্ট্রীয় ভাবে নিন্দা জানানোর দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভা করা হয়।মুসলিম সমাজের বিভিন্ন সংগঠনের ব্যানারে হাজার হাজার স্থানীয় মুসল্লি এ কর্মসূচি পালন করে। এতে প্রায় ঘন্টা ব্যাপীশহরের সড়কগুলোতে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে। সোমবার (১৩ জুন) বিকাল ৩টার সময় প্রথমে শেখ রাসেল মিনি স্টোডিয়াম হ্যালিপ্যাড মাঠ থেকে মিছিল সহকারে চতুর্দিক থেকে পৌর শহরের অভিমুখে জমায়েত হতে শুরু করে।সকলে একত্র হয়ে রাণীশংকৈল,বালিয়াডাঙ্গী, হরিপুর সম্মিলিত উলামা পরিষদের আহবানে শহরের একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন মুসল্লিরা। প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে বন্দর চৌরাস্তা মোড়ে মানববন্ধনে অংশ নিয়ে এক প্রতিবাদ সমাবেশ করেন। পরে সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে স্থানীয় মুসুল্লিরা বক্তব্য রাখেন। এতে মসজিদের ইমাম ও সম্মিলিত উলামা পরিষদের ওলামাসহ হাজার হাজার মুসুল্লিগণ অংশগ্রহণ করেন। এ সময় তারা ভারতে মহানবী হযরত মোহাম্মাদ (সা:) কে কটূক্তির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ এবং ধিক্কার জানান। নুপুর শর্মা’র বিচারের দাবী জানান তারা। মানববন্ধনে বক্তারা বলেন-
আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানাই আমাদের প্রিয় নবীকে অপমান এর জন্য, তিনি যেন রাষ্ট্রীয় ভাবে এর তীব্র নিন্দা জানান। যখন গোটা বিশ্ব নবীর অবমাননার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে। তখন আমাদের উচিত প্রতিবাদ জানানো। সেই সাথে নুপুর শর্মা ও নাভিন কুমার জিন্দালালের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি করছি। এ সময় মানববন্ধনে বক্তারা আরো বলেন, ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপী সরকারের মুখপাত্র নুপুর শর্মা ও নাভিন কুমার জিন্দালাল মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) সম্পর্কে কটূক্তি করেছে। তাদের এমন কর্মকা-ে আমরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। ভারতের মত একটি সভ্য রাষ্ট্রে দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা মহানবী হযরত মোহাম্মাদ (সা:) কে নিয়ে কুরুচিকর মন্তব্য করে গোটা বিশ্বের মুসলিমকে আঘাত করেছে। যা কোনভাবেই মেনে নেয়া সম্ভব নয়। আজ শুধু বাংলাদেশ নয় গোটা বিশ্বে তাদের প্রতিঘৃণার জন্ম নিয়েছে। এখন পর্যন্ত ভারত সরকার তাদের বিরুদ্ধে কোন প্রদক্ষেপ গ্রহন করেনি। অবিলম্বে তাদের শাস্তি নিশ্চিত করা না হওয়া পর্যন্ত ভারতের সকল পণ্য বয়কট করার আহবান জানান তারা। এ ছাড়া বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে এখনো পর্যন্ত কোন প্রতিবাদ না করায় ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করা হয়। মহানবীকে নিয়ে অবমাননাকারির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া না হলে আরও কঠোরতম কর্মসূচি দেয়ার হুশিয়ারি উচ্চারণ করেন মুসলিম সংগঠনের নেতারা। এসভায় তিন দফা দাবী বাস্তবায়নের জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানানো হয়।
দাবীগুলো হলে, রাসুলে করিম (সঃ) ও মা আয়শা (রাঃ)কে নিয়ে কটূক্তি করার প্রতিবাদে রাস্ট্রীয়ভাবে তিব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করা, ভারতীয় রাষ্ঠ্রীয় দুতকে তলব করে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ জানানো, রাস্টীয়ভাবে ভারতীয় পন্য বর্জন করার ঘোষনা দেয়া হয় ও এ দুই কুলাঙ্গার অপরাধীদের গ্রেফতার পুর্বক দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তির জন্য বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে প্রতিবাদসরুপ ভারত সরকারকে চাপ প্রয়োগ করর আহবান জানানো হয়। পরে মুসল্লিরা মোনাজাতের মাধ্যমে তাদের কর্মসূচি শেষ করেন। প্রসঙ্গত; সম্প্রতি ভারতের একটি টেলিভিশন বিতর্কে অংশ নিয়ে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) ও তাঁর স্ত্রী আয়েশা (রা.) সম্পর্কে অবমাননাকর বক্তব্য দেন নুপুর শর্মা। পরে এই বিষয়ে টুইটারে পোস্ট দেন নাভিন কুমার জিন্দালাল। যা মুসলিম সমাজে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। ইতোমধ্যে এ ঘটনায় বিশ্বের অনেক মুসলিম দেশ প্রতিবাদ জানিয়েছে।