গত বৃহস্পতিবার ২৩ জুন বগুড়ার সারিয়াকান্দি থানার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালতে মামলাটি করেন আ. ফ. ম হানযালা নামের এক কাপড় ব্যবসায়ী।
মামলায় অভিযুক্তরা হলেন, সারিয়াকান্দি থানার ওসি মো. মিজানুর রহমান, উপপরিদর্শক (এসআই) রবিউল করিম, মাহবুব হাসান ও সারিয়াকান্দি চন্দনবাইশা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে ওই সময়ে কর্মরত এসআই রবিউল ইসলাম। তাদের মধ্যে এসআই রবিউল ইসলাম বর্তমানে রাজশাহীর বাঘা থানায় কর্মরত আছেন। তার সংগে বাদীর সাবেক স্ত্রী শাকিলা আকতারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কথা এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে। এই সম্পর্ক নিয়েই পুলিশ কর্মকর্তাদের রোষাণলে পড়েন হানযালা। হানযালার সাবেক স্ত্রী ২৬ বছর বয়সী শাকিলা ওই উপজেলার দেবডাঙ্গা কাজলপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। মামলার বাদী হানযালা সারিয়াকান্দির দিঘলকান্দি উত্তরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। সারিয়াকান্দি সদরের তরফদার মার্কেটের কাপড় ব্যবসায়ী তিনি। মামলা করার পর থেকেই হানযালা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে জানান তার আইনজীবী জাকিউল আলম সোহেল। জাকিউল আলম সোহেল জানান, হানযালার সাবেক স্ত্রী শাকিলার সঙ্গে এসআই রবিউল ইসলামের প্রেম ছিল। গত ১৭ জানুয়ারি রাতে আপত্তিকর অবস্থায় রবিউল ও শাকিলাকে গ্রামবাসী আটক করে। ওই সময় গ্রামবাসীর হামলার শিকার হন রবিউল। এ ঘটনার মাস খানেক আগেই শাকিলার সঙ্গে ব্যবসায়ী হানযালার বৈবাহিক সম্পর্কের ছাড়াছাড়ি হয়। তিনি আরও জানান, রবিউল স্থানীয়দের হামলার শিকার হওয়ার পর ধারণা করেন যে হানযালাই ঘটনাটি ঘটিয়েছেন। ফলে হানযালাকে বিভিন্ন ধরণের ভয় দেখিয়ে আসছিলেন চন্দনবাইশা তদন্ত কেন্দ্রের এসআই রবিউল ইসলাম। পরবর্তীতে এ ঘটনায় সহকর্মী ঘটনার শিকার এসআই রবিউল ইসলামকে অপরাধের হাত থেকে বাচানোর জন্য অন্য পুলিশ কর্মকর্তারাও জড়িয়ে যান।
ব্যবসায়ী হানযালা এজাহারে উল্লেখ করেছেন, স্থানীয়রা রবিউলকে তার সাবেক স্ত্রীর সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় আটক করেন। ওই সময় গ্রামবাসীর মারধরের শিকার হন রবিউল ইসলাম। এরপর থেকেই এসআই রবিউল তাকে বিভিন্নভাবে হয়রানি করা শুরু করেন। পরবর্তী সারিয়াকান্দি থানার ওসি মো. মিজানুর রহমান তার কাছে তিন লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। শুধু তা-ই নয়, চাঁদা না দিলে হানযালার ব্যবসা বন্ধ করে দেয়া হবে বলে হুমকিও দেন ওসি মিজানুর রহমান। এমনকি হানযালা কোথাও বেড় হতে না পারে সে জন্য তার মোটরসাইকেল থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে। মামলায় তিনি আরও উল্লেখ করেছেন, গত ২৫ মে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে সারিয়াকান্দির গোল্ডেন চাইনিজ রেস্টুরেন্টে বসে নাশতা করছিলেন তিনি। এমন ভিত্তিহীন অভিযোগ এনে ওই সময় সারিয়াকান্দি থানার এসআই রবিউল করিম ও মাহবুব হাসান এসে তাকে আটক করে থানায় নিয়ে যান। থানায় ওসি বলেন তিন লাখ না দেওয়ায় তাকে ধরে নিয়ে আসা হয়েছে। তার মোটরসাইকেলও থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে। এ সময় তিনি (হানযালা) ওসির কথার প্রতিবাদ করেন। এতে এসআই রবিউল করিম ও মাহবুব ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে থানা হাজতে আটকে রাখেন। হানযালা মামলায় বলেন, ঘটনার দিন মধ্যরাতে তাকে হাজত থেকে বের করে থানার এসআইদের রুমে নিয়ে গিয়ে বাঁশের লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধর করা হয়। মারধর করার আগে গামছা দিয়ে তার চোঁখ বাঁধা হয়েছিল। মারধর শেষে তার চোখের বাধন খুলে দেওয়া হয়। ওই সময় ওসি মিজানুর বলেন চাহিদার টাকা না দিলে এবং এসব বিষয়ে মুখ খুললে ক্রসফায়ারে তাকে মেরে ফেলা হবে। পরে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে চিকিৎসা দেয়া হয়। পরের দিন ২৬ মে বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে তাকে আদালতে পাঠানো হয়। আইনজীবী জাকিউল আলম সোহেল জানান, হানযালাকে দুইটি মিথ্যা মামলা দিয়ে আদালতে পাঠানো হয়। দুই মামলার একটি হলো মাদকসেবনের অন্যটি পুলিশের ওপর হামলা ঘটনায়।তবে মামলায় উঠে আসা সারিয়াকান্দি থানার বর্তমানে দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তা রবিউল করিম দাবি করে বলেন, ‘মামলা যে কেউ করতে পারেন। তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, বিষয়টি তিনি আইনিভাবে মোকাবেলা করবেন। হানযালার বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ আর মামলা রয়েছে উল্লেখ করে রবিউল করিম আরও বলেন, ‘মামলার বাদী হানযালার বিরুদ্ধে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় মামলা আছে। এ ছাড়া সন্ত্রাস বিরোধী ও বালুমহাল আইনেও তার বিরুদেদ্ধে মামলা আছে। তিনি আরও বলেন, ‘আর আরেক ঘটনা ক্লিয়ার হতে হবে সেটা হলো যাকে নিয়ে এই ঘটনা শুরু তিনি (রবিউল ইসলাম) রাজশাহীর বাঘায় থানায় কর্মরত রয়েছেন। ওই রবিউল আমি নই। হানযালার সাথে পুলিশের বিরোধের সূত্রপাত তৈরি হয় তার সাবেক স্ত্রী শাকিলাকে কেন্দ্র করেই। হানযালা জানতেন শাকিলার সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল এসআই রবিউল ইসলামের। তিনি বর্তমানে রাজশাহীর বাঘা থানায় কর্মরত আছেন। মুঠোফোনে কথা হয় রবিউল ইসলামের সঙ্গে। তার বিরুদ্ধে ওঠা সকল অভিযোগ তিনি অস্বীকার করেন।
এই পুলিশ কর্মকর্তার ভাষ্য, ‘ওই রবিউল আমি নই (শাকিলার সাথে সম্পর্ক ছিল যার)। ঘটনার সূত্রপাত যাকে নিয়ে তার নাম রবিউল করিম। তবে বর্তমানে বাঘায় কর্মরত রয়েছেন। ওই রবিউল আমি নই।হানযালার সাথে পুলিশের বিরোধের সূত্রপাত তৈরি হয় তার সাবেক স্ত্রী শাকিলাকে কেন্দ্র করেই। হানযালা জানতেন শাকিলার সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল এসআই রবিউল ইসলামের। তিনি বর্তমানে রাজশাহীর বাঘা থানায় কর্মরত আছেন। মুঠোফোনে কথা হয় রবিউল ইসলামের সঙ্গে। তার বিরুদ্ধে উঠা সকল অভিযোগ তিনি অস্বীকার করেন।
এই পুলিশ কর্মকর্তার ভাষ্য, ‘ওই রবিউল আমি নই (শাকিলার সাথে সম্পর্ক ছিল যার)। ঘটনার সূত্রপাত যাকে নিয়ে তার নাম রবিউল করিম। তবে বর্তমানে বাঘায় কর্মরত রবিউল ইসলাম সারিয়াকান্দি থানার চন্দনবাইশা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে ছিলেন।