বগুড়ার গাবতলীতে মুক্তিযোদ্ধা টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজের শিক্ষক ও অধ্যক্ষ’র মধ্য মারপিটের ঘটনা ঘটেছে। অধ্যক্ষ’র ও সভাপতির কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে বিক্ষুদ্ধ শিক্ষকরা। এ ঘটনায় ৩ জন আহত হয়েছে। থানায় পাল্টাপাল্টি অভিযোগ দেয়া হয়েছে।
একাধিক সুত্র থেকে জানাযায়, গাবতলী পুরানবন্দনে অবস্থিত মুক্তিযোদ্ধা টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ ২০০৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। সেখানে প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হিসাবে খাজানাজিম উদ্দীন খাজা দায়িত্ব পালন করে আসছেন। প্রথমে অধ্যক্ষ হিসাবে মোঃ আশাফুদ্দৌলা রুবেলকে দায়িত্ব প্রদান করা হয়। পরবর্তীতে তাকে অপসারন করে সভাপতির মেয়ে মোছাঃ রোজিনা আকতার নাইসকে দায়িত্বদেয়া হয়। অপরদিকে শুরু থেকে ওই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের মসিক কোন ভাতা বা সম্মানি দেয়া হয়নি। শিক্ষকদের অভিযোগ, সভাপতি তাদেরকে চাকুরী দেয়ার নামে প্রত্যেক শিক্ষকের কাছ থেকে ৪.৫.৬ লাখ করে টাকাসহ, যার কাছ থেকে যেভাবে সুযোগ পেয়েছেন, লাখ লাখ টাকা নিয়েছেন। প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত না হওয়ায় শিক্ষকরা কোন বেতনভাতা পান না। এনিয়ে একাধিকবার উপজেলা নির্বাহী অফিসার, উপজেলা চেয়ারম্যাসহ থানায় ভুক্তভোগি শিক্ষকগন নালিশ দিয়েছেন। সভাপতির মেয়েকে দায়িত্ব দেয়ার পর হতে ওই প্রতিষ্ঠানে জটিলতা আরো বেড়ে যায়। শিক্ষকদের অভিযোগ, সভাপতির মেয়ের কোন অভিজ্ঞতা না থাকলেও তাকে অধ্যক্ষ’র দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে। তার সার্টিফিকেট প্রতিষ্ঠানের ক্যাটাগরি হিসাবে গ্রহনযোগ্য নয়। প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের মাষিক বেতন, পরীক্ষার ফি বাবদ আদায়কৃত টাকা শিক্ষকদের বেতনভাতা না দিয়ে অধ্যক্ষ ও সভাপতি নিয়ে যায় বলে গুরুতর অভিযোগ তোলেন তারা। অধ্যক্ষের অপসারনের দাবিতে ওই প্রতিষ্ঠানের কয়েকজন শিক্ষকবাদে, সকল শিক্ষক একজোট হয়েছেন। ২৫ জুন শনিবার দুপুরে অধ্যক্ষের কাছে শিক্ষকগন বেতনভাতা চাইতে গেলে হট্টগোলের সৃষ্টি হয়। অধ্যক্ষ রোজিনা আক্তার নাইসের সাথে শিক্ষকদের মারামারির ঘটনা ঘটে। এসয় বিক্ষুদ্ধ শিক্ষকরা অথ্যক্ষ ও সভাপতির কক্ষে তালা লাগিয়ে দেয়। মারামারিতে শিক্ষিকা নাজমুন নাহার, শিক্ষক হাবিব হাসান বিবেক ও অধ্যক্ষ রোজিনা আকতার নাইস আহত হয় বলে জানাগেছে। আহতরা গাবতলী হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। এ ঘটনায় অধ্যক্ষ রোজিনা আকতার নাইস ও সভাপতি খাজা নাজিম উদ্দীন একত্রে ও আহত শিক্ষক নাজমুন নাহার এবং হাবিব হাসান বিবেক থানায় অভিযোগ দিয়েছেন। এব্যপারে গাবতলী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ সিরাজুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, উভয়পক্ষ থানায় মৌখিকভাবে জানিয়েছেন। অভিযোগ দিলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। মুক্তিযোদ্ধা টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজের অধ্যক্ষ রোজিনা আকতার নাইস ও সভাপতি খাজা নাজিম উদ্দীনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা জাজান, শিক্ষকরা ও কিছু বহিরাগত ব্যাক্তি প্রতিষ্ঠানে ডুকে, অন্যায়ভাবে আমাদের উপর হামলা চালিয়েছেন ও কক্ষে তালা দিয়েছেন। বিক্ষুদ্ধ শিক্ষকরা জানান, চাকুরীর দেয়ার কথা বলে তাদের কাছ থেকে সভাপতি লাখ লাখ টাকা দীর্ঘদিন ধরে নিয়ে রেখেছে। এখন পর্যন্ত কোন বেতনভাতা দেয়া হয়নি। এমপিও হওয়ার ব্যবস্থা সভাপতি করেনি। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বেতন ও ফি বাবদ আদায়কৃত টাকা হতে কোন সম্মানী দেয়া হয়না। চাকুরীর আশায় সেখানে লাখ লাখ টাকা দিয়ে রেখেছেন। তারা এখন বেতনভাতা না পেয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন বলে অভিযোগ করেন। এ ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছাঃ রওনক জাহান, গাবতলী মুক্তিযোদ্ধা টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজে গিয়ে সরজমিনে পরিদর্শন করেছেন বলে জানাগেছে।