স্মরন কালের ভয়াবহ বন্যায় প্লাবিত সিলেটের বেশির ভাগ এলাকা।এরই মধ্যে জুড়ী উপজেলার দুই ইউনিয়নের বেশির ভাগ মানুষ সহ কয়েকটি গ্রাম পুরো প্লাবিত হয়েছে।আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে আশ্রয় নিয়েছে প্রায় হাজার প্রায় ৪০হাজার মানুষ।গত দুইদিন থেকে পানি কমতে শুরু করেছে।
ক্ষতিগ্রস্থের তালিকায় রয়েছে প্রায় তিন হাজার পরিবার, এসব পরিবারের তালিকা বাড়তে পারে।পাশাপাশি সড়ক,স্থাপনা ও হয়েছে ক্ষতিগ্রস্থ। বন্যার কারণে সব চেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে শিক্ষাব্যবস্থা। উপজেলার প্রাথমিক,মাধ্যমিক,কলেজ,কিন্ডারগার্টেন সহ প্রায় ৮০ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে।
২২টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পানি থাকায় পাঠদান বন্ধ রয়েছে,পাঠদানের পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে এসব বিদ্যালয়ের আসবাবপত্র। বন্যা চলে গেলে এসব ক্ষতি কাটিয়ে উটতে দীর্ঘ সময় লাগতে পারে।বন্যার্ত এসব মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে সহমর্মিতা, সহযোগিতা করেছে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ। বেশির ভাগ পাশে দাড়িয়েছে যুব সমাজ।তরুন প্রজন্মের এই সাড়া জাগানোকে সাধুবাদ জানাচ্ছেন জুড়ীর আপামর জনসাধারন। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে জানা যায়,আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে কখনও অভাব পড়েনি খাবারের।প্রতিদিন ৩-৪ টি টিম খাদ্য প্রদান করছে।বিভক্ত হয়ে কেউ কেউ নিয়ে যাচ্ছে ত্রান, আবার কেউ নিয়ে যাচ্ছেন শুকনো খাবার।বন্যা শুরু হওয়ার পর থেকে প্রায় সপ্তাহ খানেক থেকে দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন এই এলাকার বাসিন্দা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন।তিনি জুড়ী,বড়লেখা উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে বানভাসী মানুষের জন্য খাদ্য নিয়ে ছুটে বেড়াচ্ছেন।পাশাপাশি আশ্রয় কেন্দ্র গুলোতে ও দিয়েছেন রান্না করা খাদ্য।১৫ জন যুবকদের নিয়ে টিম ১৫ নামের একটি যুব সংগঠন প্রায় ৩ লক্ষ টাকা তুলে ত্রান বিতরন করছে উপজেলা ব্যাপী। গোয়ালবাড়ী এলাকার প্রায় ২০ জন তরুন তাদের ব্যক্তিগত পক্ষ থেকে খাদ্য দিয়েছে বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে।জায়ফর নগর উচ্চবিদ্যালয় আশ্রয় কেন্দ্রের মানুষের ১০ দিনের খাদ্য দিচ্ছে এলাকার প্রবাসীদের সংগঠন প্রবাসী সমাজ কল্যাণ তহবিল। পাশাপাশি বিতরন করা হচ্ছে পানি বন্ধি মানুষের বাড়িতে। তরুন নেতা,ইউপি সদস্য জাহেদ হোসেন তাজিন তার ওয়ার্ডের আশ্রয় কেন্দ্রে ব্যক্তিগত পক্ষ থেকে ১সপ্তাহের খাদ্য দিয়েছেন।মরহুম আবদুল খালিক চেয়ারম্যানের পরিবারের পক্ষ থেকে তার ছেলে তরুন আওয়ামী লীগ নেতা জায়েদ আনোয়ার চৌধুরী,গোলাম রব্বানী চৌধুরী,জেরিন চৌধুরী প্রায় ৩০০ প্যাকেট খাদ্য বিতরনের পাশাপাশি রান্না করা খাদ্য ও দিচ্ছেন বন্যার্ত মানুষের বাড়ি বাড়ি নিয়ে। সাগরনাল এলাকার তরুন ব্যবসায়ী আব্দুশ শুকুর উপজেলা ব্যাপী বিতরন করছেন খাদ্য সামগ্রী।এছাড়া ও তরুন ব্যবসায়ী, ইবনে সিনা ফার্মেসীর মালিক শাহরিয়ার ইমন ৫০ প্যাকেট খাদ্য বিতরন করেছেন,কাতার প্রবাসী ভোগতেরা এলাকার মোহাম্মদ মাছুম আহমদ তার কোম্পানীর মানুষদের কাছ এনে দেড় লক্ষ টাকার ত্রান সামগ্রী বিতরন করেছেন এলাকায়।উপজেলা যুবলীগ নেতা শাহ আলম ও আবুল খায়ের সাইমনের পক্ষ থেকে ইউনিয়ন ব্যাপী বিতরন করা হচ্ছে ত্রান সামগ্রী।
আওয়ামী লীগের যুব সংগঠন যুবলীগ,সেচ্ছাসেবকলীগ,ছাত্রলীগের পাশাপাশি বিএনপির ছাত্রসংগঠন ছাত্রদল ও ত্রান বিতরন করছে।পিছিয়ে নেই সিলেট ব্যাপী ব্যাপক পরিচিত মরহুম ফুলতলী পীর ছাহেবের সংগঠন তালামিযে ইসলামিয়া।তাদের পাশাপাশি ত্রান বিতরন করেছে টিএসএস নামের হিন্দু যুবকদের সংগঠন।
যুবকদের সংগঠনের পাশাপাশি জায়ফর নগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হাজী মাছুম রেজার ব্যক্তিগত অর্থায়নে ইউনিয়ন ব্যাপী আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে খাদ্য প্রদানের পাশাপাশি বিতরন করছেন ত্রানের প্যাকেট।সাবেক ছাত্রনেতা জাহাঙ্গীর আলম বিভিন্ন এলাকা ঘুরে অসহায় অনেক মানুষকে নগদ টাকা বিতরন করছেন। জাতীয় পার্টির নেতা আবদুল মালিক সাচ্চু জুড়ী বড়লেখার বিভিন্ন অঞ্চল ঘুরে খাদ্য সামগ্রী বিতরন করতে দেখা যায়। হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের নেতারা শুকনো খাবার বিতরন করছেন বিভিন্ন এলাকায়।