কিশোরদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে রাজশাহী নগরীর হেতেম খাঁ সবজিপাড়া এলাকায় এক বন্ধুকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। নিহত কিশোরের নাম সানি (১৭)। বন্ধুদের নিয়ে জন্মদিন পালনের পর পরিকল্পিতভাবে তাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। নিহত সানি রাজশাহী পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি রফিকুল ইসলাম পাখির ছোট ছেলে। সে এবারের এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিলেন। তার বাড়ি নগরীর বোয়ালিয়া থানার দড়িখরবনা এলাকায়। রোববার (৩ জুলাই) রাত সাড়ে ৯টার দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে আহত অপর এক বন্ধুকে দেখতে গেলে সানিকে সেখান থেকে পরিকল্পিতভাবে তুলে নিয়ে গিয়ে সবজিপাড়া এলাকায় কুপিয়ে হত্যা করা হয় বলে জানিয়েছেন সানির বাবা। এ ঘটনায় নিহতের বাবা পাখি বাদী হয়ে নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানায় ৯ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আর ৯/১০ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। তবে এ মামলায় সোমবার বিকেল পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে ফাঁসির দাবি জানিয়ে সোমবার (৪ জুলাই) দুপুর তিনটার দিকে সানির লাশ নিয়ে তার আত্মীয়স্বজন ছাড়াও এলাকাবাসীরা নগরীর রেলগেট শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামান চত্ত্বরে বিক্ষোভ মিছিল করেছে। এ সময় বিক্ষোভকারীরা লাশ নিয়ে মহাসড়কে বসে পড়লে রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও নওগাঁ মহাসড়কের সকল প্রকার যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে লাশ দাফনের জন্য নিয়ে গেলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
হত্যাকান্ডের ঘটনায় বোয়ালিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাজহারুল ইসলাম বলেন, পূর্বশক্রুতার জেরে সানিকে হত্যা করা হয়েছে। আসামীদের গ্রেপ্তারে পুলিশী অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
থানা ও নিহত কিশোরের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, রোববার রাতে সানি তার এক আহত বন্ধুকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে দেখতে গেলে কয়েকজন যুবক সেখান থেকে তাকে তুলে নিয়ে যায়। পরে সবজিপাড়া এলাকার রাস্তার পাশে রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক সানিকে মৃত ঘোষণা করেন।
পুলিশ জানিয়েছে, হেতেমখাঁ সবজিপাড়া এলাকার সমবয়সী কিছু কিশোরদের মধ্যে রেলগেট এলাকার সানিসহ আরও বন্ধুর আধিপত্য বিস্তার নিয়ে কিছুদিন থেকে বিরোধ চলছিল। এর আগেও এই দুই গ্রুপের মধ্যে একাধিকবার মারামারির ঘটনা ঘটেছে। পরে আবার মীমাংসাও হয়। ধারনা করা হচ্ছে, বিরোধের জের ধরেই সানিকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
এটা পরিকল্পিতভাবে করা হয়েছে দাবি করে নিহত সানির বাবা বলেন, রোববার তার ছোট ছেলে সানির ১৭তম জন্মদিন ছিল। জন্মদিন পালন করার জন্য সন্ধ্যায় সাড়ে তিনশ’ টাকা দিয়ে কেকও কিনে দিয়েছিলেন। জন্মদিন পালন শেষে সানি তার এক অসুস্থ বন্ধুকে দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিল। সেখান থেকে সানিকে তুলে নিয়ে গিয়ে হত্যা করা হয়েছে।