যশোরের ঝিকরগাছায় আমন ধান চাষের প্রণোদনা হিসেবে বিনামূল্যে বীজ ও সার বিতরণে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে দুই কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়েছ এবং ঘুষের টাকা ফেরত দেয়া হয়েছে। বুধবার বিকালে কৃষি কর্মকর্তা এ কথা জানিয়েছেন।
অভিযুক্ত উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মফিজুর রহমান ও আবদুল আওয়াল নাভারণ ইউনিয়নে দায়িত্বপ্রাপ্ত ছিলেন। দুর্নীতির সত্যতা পাওয়ায় মফিজুরকে পানিসারা ও আওয়ালকে গদখালী ইউনিয়নে বদলি করা হয়েছে। পাশাপাশি ইউনিয়নে বদলী হওয়ায় কৃষকেরা খুশী হতে পারেননি।
ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে বীজ ও সার সহায়তা প্রদানের দিন ঘটনার সূত্রপাত। এদিন অভিযুক্ত দুই উপসহকারী কর্মকর্তা কার্ড করে দেওয়ার নামে কৃষকের কাছ থেকে ৩০০ টাকা করে আদায় করছিলেন। পরে গণমাধ্যমকর্মীদের উপস্থিতিতে টাকা আদায়ের কথা স্বীকার করলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রত্যেকের টাকা ফেরত দেওয়ার আশ্বাস দেন এবং নাভারণ ইউনিয়নে প্রতিনিধি পাঠিয়ে ঘটনার সত্যতা পেলে অভিযুক্ত দুজনকে বদলি করেন।
তথ্যনুসন্ধ্যানে জানা যায়, সার ও বীজ বিতরণের কৃষিকার্ডের নামে ৩০০ টাকা নেওয়া ছাড়াও নানা অনিয়ম করেছেন ওই দুই কর্তা। কৃষি কার্ড কৃষকদের কাছে থাকার কথা থাকলেও এই ইউনিয়নের অধিকাংশ কার্ড মফিজুর ও আওয়ালের কাছেই থাকে বলে জানিয়েছেন কৃষকেরা। নাভারণ ইউনিয়নের তালিকার ২০ নম্বরে থাকা মোত্তার হোসেনের ছেলে মিলন হোসেনকে দেউলী গ্রামে খুঁজে পাওয়া যায়নি। আবার পাশে ভুল মোবাইল নম্বর দেওয়া হয়েছে।
তালিকার ১৭নম্বরে থাকা কলাগাছি গ্রামের কিতাব আলীর ছেলে হযরত আলী বলেন, আমার নামে সার ও বীজ উঠানো হয়েছে, আমি জানি না। এর কিছুই আমি পাইনি। তারা সব আত্মসাৎ করেছে।
৫০ নম্বরে থাকা কলাগাছি গ্রামের মুক্তার হোসেনের ছেলে মিলন হোসেন বলেন, কৃষিকার্ড করে দিবেন বলে মফিজুর সাহেব আমার কাছ থেকে ৩০০ টাকা নিয়েছেন। টাকা ছাড়া সার-বীজ দিবেন না বললে আমি টাকা দিয়েছি।
নাভারণ মহিলা ইউপি সদস্য পারুল খাতুন বলেন, পাঁচটি কার্ড বাবদ আমার কাছ থেকে ১৫০০ টাকা চেয়েছিলেন। দিতে অপারগতা জানালে তারা আমার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। পরে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার হস্তক্ষেপে আমরা বিনামূল্যে সার-বীজ পেয়েছি।
বুধবার বিকালে ঝিকরগাছা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাসুদ হোসেন পলাশ বলেন - এ ব্যাপারে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে শাস্তি মূলক ব্যবস্থা নিয়ে, কৃষকদের টাকা ফেরত দেয়া হয়েছে।
যশোর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. নূরুজ্জামান বলেন, ঘটনার বিষয়ে খোঁজ-খবর নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।