বিয়ের ২৩ বছর সংসার করার পর স্ত্রীকে অস্বীকার করছেন স্বামী। এরপ্রেক্ষিতে স্ত্রী হিসেবে স্বীকৃতি পেতে স্বামীর বাড়িতে অনশন শুরু করেছেন এক গৃহবধূ। মঙ্গলবার সকাল থেকে জেলার আগৈলঝাড়া উপজেলার রাজিহার ইউনিয়নের চেঙ্গুটিয়া গ্রামের স্বামীর বাড়িতে অনশন শুরু করেছেন মুনা আক্তার মুক্তা।
একই ইউনিয়নের ভাল্লুকসী গ্রামের কাজী এনামুল হকের মেয়ে ভূক্তভোগী মুনা আক্তার মুক্তা বলেন, পূর্ব পরিচয়ের সুবাদে ১৯৯৯ সালের ২০ জানুয়ারি বরিশাল আদালতের মাধ্যমে তাকে বিয়ে করেন চেঙ্গুটিয়া গ্রামের মৃত নুর মোহাম্মদ তালুকদারের ছেলে কবির তালুকদার। বিয়ের কিছুদিন পর কর্মের সুবাদে কবির দুবাই গমন করেন। দুইবছর পর তাকে (মুনা) তার স্বামী কবির তালুকদার দুবাই নিয়ে যান। তার (মুনা) পাসপোর্টে স্বামী হিসেবে কবির তালুকদারের নাম ব্যবহার করা হয়।
মুনা আক্তার মুক্তা আরও বলেন, দেশে ফিরে ধুমধাম করে বিয়ের আয়োজন করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে কবির দুবাইতে বাসা ভাড়া করে প্রায় ২০ বছর যাবৎ একসাথেই বসবাস করে আসছিলেন। তারই ধারাবাহিকতায় গৃহবধূ মুনা তার উপার্জিত টাকা স্বামী কবির তালুকদারের ব্যাংক এ্যাকাউন্টে জমা রাখতেন।
মুনা আক্তার জানান, তার উপার্জিত প্রায় অর্ধকোটি টাকা আত্মসাৎ করে কবির গত চার মাস পূর্বে গোপনে বিদেশ থাকাকালীন ফোনের মাধ্যমে গৌরনদী উপজেলার এক নারীকে দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবে বিয়ে করেন। যে কারণে গত একসপ্তাহ পূর্বে কাউকে কিছু না জানিয়ে কবির বাংলাদেশে চলে আসেন। বিষয়টি জানার পরে তিনিও (মুনা) গত ছয়দিন পূর্বে দেশে আসেন। পরবর্তীতে স্বজনদের নিয়ে স্বামীর বাড়িতে আসলে অভিযুক্ত কবির তাকে আশ্রয় না দিয়ে উল্টো স্ত্রী হিসেবেও অস্বীকার করেন।
উপায়অন্তুর না পেয়ে মঙ্গলবার সকাল থেকে মুনা তার স্বামীর বাড়িতে আসলে ঘরে তালা ঝুঁলিয়ে পালিয়ে যায় অভিযুক্ত কবির ও তার পরিবারের সদস্যরা। এ ঘটনার পর স্ত্রী হিসেবে স্বীকৃতি পেতে গৃহবধূ মুনা তার স্বামী কবিরের বাড়িতে অনশন শুরু করেছেন।
এ ব্যাপারে ওই এলাকার বাসিন্দা উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম তালুকদার বলেন, কবিরের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের বিষয়টি শুনে ওই গৃহবধূকে বিয়ের সমস্ত প্রমানাদি আনতে বলা হয়েছে। সঠিক তথ্য প্রমান পাওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বুধবার সকালে আগৈলঝাড়া থানার এসআই মিল্টন মন্ডল জানান, বিষয়টি ৯৯৯ এর মাধ্যমে আমরা জানতে পেরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। গৃহবধূকে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।