ইউপি চেয়ারম্যান ও পরিষদের ১১ জন ইউপি সদস্য তাদের জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত আবেদন করেছেন।
অপরদিকে একই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরী করেছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতির পরিবার। ঘটনাটি জেলার গৌরনদী উপজেলার মাহিলাড়া ইউনিয়নের। বুধবার সকালে আবেদন প্রাপ্তির সত্যতা নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিপিন চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, জীবনের নিরাপত্তা চাওয়া মাহিলাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যদের আবেদনের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করা হয়েছে।
লিখিত আবেদনে জানা গেছে, গত ৮ জুলাই বিকেলে ইউনিয়নের পূর্ব বেজহার গ্রামের মৃত আনোয়ার রাঢ়ীর ছেলে রাসেল রাঢ়ী, একই গ্রামের করিম তালুকদার, আরিফুল ইসলাম রাসেদ, মাসুদ রাঢ়ী, পিঙ্গলাকাঠী গ্রামের জুয়েল হাওলাদার, শরিফাবাদ গ্রামের স্বপন হাওলাদার, পশ্চিম বেজহার গ্রামের সরোয়ার সরদারসহ তাদের ১৫/১৬ জন সহযোগীরা এলাকায় প্রভাব বিস্তারের জন্য মোটরসাইকেল নিয়ে মহরা বের করে এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করে। একপর্যায়ে তারা হাপানিয়া গ্রামে বসে ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সচিব ও বর্তমানে চুক্তিভিক্তিক হিসেবে কর্মরত মাহতাব হোসেনকে এলোপাথারীভাবে পিটিয়ে গুরুত্বর আহত করে হাতের কব্জি ভেঙ্গে দেয়। এ সময় ওই সন্ত্রাসীরা পরিষদের অন্যান্য সদস্যদের নাম উল্লেখ করে প্রাণনাশের হুমকি প্রদর্শন করে।
আবেদনে আরও জানা গেছে, রাসেল রাঢ়ী ও তার উল্লিখিত সহযোগীরা গত ১২ জুন ইউনিয়ন পরিষদের ৬নং ওয়ার্ডের সদস্য জসিম উদ্দিনকে কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে। পরবর্তীতে গত ২৯ জুন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সৈকত গুহ পিকলুর ছোট ভাই যুবলীগ নেতা সলিল গুহ পিন্টুকে হত্যার উদ্দেশ্যে তৃতীয়বারের ন্যায় কুপিয়ে জখম করে। উভয় ঘটনায় মামলা দায়ের করার পর অভিযুক্তরা আরো ক্ষিপ্ত হয়।
অপরদিকে গৌরনদী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা কালিয়া দমন গুহর স্ত্রী তাপসী রানী গুহ তাদের পরিবারের সদস্যদের জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে গত ১০ জুলাই থানায় সাধারণ ডায়েরী করেছেন। ডায়েরী সূত্রে জানা গেছে, গত ৮ জুলাই বিকেলে রাসেল রাঢ়ীর নেতৃত্বে তার ২০/২৫ জন সহযোগীরা মোটরসাইকেল মহড়া নিয়ে তাদের (তাপসী রানী) বাড়িতে গিয়ে পরিবারের সদস্যদের প্রাণনাশের হুমকি প্রদর্শন করে।
উল্লেখ্য, ২০০১ সালের নির্বাচন পরবর্তী সময়ে তৎকালীন বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট ক্যাডারদের একাধিকবার হামলা ও অসংখ্য মামলার স্বীকার হয়েছেন ওইসময়কার উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কালিয়া দমন গুহ ও তার পরিবারের সদস্যরা। সেসময় বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে গুরুত্বর আহত হয়ে চিকিৎসাধীন কালিয়া দমন গুহকে দেখতে গিয়েছিলেন তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
কালিয়া দমন গুহ বলেন, বর্তমানে দল ক্ষমতায় থাকা সত্বেও একাধিকবার আমার পরিবারের সদস্যদের ওপর নৃশংস হামলার ঘটনা ঘটছে। আমার বড় ছেলে প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ন সম্পাদক সৈকত গুহ পিকলুকে পরিকল্পিতভাবে গাড়ি চাঁপা দিয়ে হত্যার চেষ্ঠা করা হয়েছিলো। দীর্ঘদিন থেকে পিকলু শষ্যাশয়ী রয়েছে। এ ছাড়া পর পর তিনবার আমার ছোট ছেলে যুবলীগ নেতা সলিল গুহ পিন্টুকে হত্যার জন্য নৃশংসভাবে কুপিয়ে জখম করা হয়। বর্তমানে পিন্টুও শষ্যাশয়ী। এরপরেও আমার বাড়িতে এসে পরিবারের সদস্যদের বিভিন্ন ধরনের হুমকি প্রদর্শন করা হচ্ছে। এ ঘটনার নেপথ্যে কারা আছে তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার জন্য আমি প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, স্থানীয় সংসদ সদস্য ও প্রধানমন্ত্রীর আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছি।