ঈদণ্ডউল আযহা পরবর্তী বরিশাল থেকে কর্মস্থলমুখী জনস্রােতে তীল ধারনের ঠাঁই নেই ঢাকাগামী পরিবহনগুলোর। পদ্মা সেতুর বদৌলতে এবার সড়কপথে যাত্রীদের চাঁপ সবচেয়ে বেশি। রোববার ঈদ উদযাপনের পর মঙ্গলবার প্রথম কর্মদিবস শুরু হলেও কর্মস্থলমুখী মূল জনস্রােত দেখা গেছে শুক্রবার সকাল থেকে।
কর্মস্থলমুখীদের ভীড় সামাল দেয়ার মধ্যেই এবার সড়ক পথে প্রতিদিন দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্নস্থান থেকে পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা প্রায় দুই শতাধিক পরিবহনে টিকিটের জন্য হাহাকার শুরু হয়েছে। অধিকাংশ টিকিট কাউন্টার থেকে স্রফে জানিয়ে দেয়া হয়েছে, আগামী ২০ জুলাই পর্যন্ত কোন টিকিট নেই। তবে যাত্রীরা অভিযোগ করেন, কালোবাজারে দালালদের মাধ্যমে অধিকমূল্যে কিছু টিকিট পাওয়া যাচ্ছে। এমনকি যাত্রীদের চাঁপ সামাল দেওয়ার জন্য বেশ কয়েকটি পরিবহনের মাঝের অংশে কাঠের টুল ও মড়া বসিয়ে যাত্রী পরিবহন করা হচ্ছে।
তবে এবার নৌ-পথে কোন রুটের নৌযানের কেবিনসহ যেকোন টিকিট পাওয়া তুলনামূলকভাবে অনেকটা সহজ। পাশাপাশি এবার ঈদের আগে পদ্মা সেতু হয়ে দক্ষিণাঞ্চলমুখী সড়ক পথের বিভিন্ন এলাকায় তীব্র যানযটসহ পরিবহনে টিকিটের ভোগান্তির কারণে বিপন্ন নৌ-পরিবহন সেক্টর কিছুটা সতেজ হলেও তার স্থায়ীত্ব নিয়েও সংশয় রয়েছে।
ঈদের আগের চার দিন থেকে ঈদের দিন ভোর পর্যন্ত নৌপথে দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন গন্তব্যে কয়েক লাখ মানুষ নারীর টানে বাড়ি ফিরেছেন। ঈদের পর বৃহস্পতিবার (১৪ জুলাই) থেকে বরিশাল নৌ-বন্দরে যাত্রীদের পদচারনা ছিলো বিগত দিনের ঈদের মতোই। ওইদিন ১৫টি বিলাস বহুল লঞ্চ ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রী নিয়ে ছেড়ে গেছেন। প্রতিটি লঞ্চেই ছিলো যাত্রীদের উপচে পরা ভিড়। পদ্মা সেতু চালুর পর দক্ষিণাঞ্চলের নৌ-পরিবহন সেক্টরে মারাত্মক বিপর্যয় নেমে আসলেও ঈদকে কেন্দ্র করে তা কিছুটা কাটিয়ে উঠেছে। তবে এর স্থায়ীত্ব নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন নৌযান মালিকদের।
একাধিক নৌ-যানের মালিকরা বলেছেন, বিগত দুইবছর করোনা মহামারীতে ঈদের সময়ে ঘরমুখী যাত্রী সংকটে দক্ষিণাঞ্চলের অন্যতম বৃহত বিনিয়োগের নৌ-পরিবহনখাতে চরম অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়। সে পরিস্থিতি কাটিয়ে ওঠার আগেই পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় নৌ-বাণিজ্যে মারাত্মক বিপর্যয় নেমে আসে। তারা আরও বলেন, অন্যান্য বছরগুলোতে ঈদের সময় দক্ষিণাঞ্চলের প্রায় ৮০ ভাগ ঘরমুখী মানুষ নৌপথে যাতায়াত করেছেন। এবার পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর নৌপথের বৃহত অংশের ঘরমুখী মানুষ সড়কমুখী হয়েছেন।