থেমে নেই সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু। যখন প্রতিনিয়ত সড়কে দুর্ঘটনা ঘটছে এবং ঝরে যাচ্ছে তরতাজা প্রাণ, তখন পরিস্থিতির ভয়াবহতা অনুধাবন করা জরুরি। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল, দেশের বিভিন্ন জেলায় সড়ক দুর্ঘটনায় একদিনে অন্তত ৩০ জন নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৩৯ জন। তথ্য মতে, শনিবার ভোর থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত এসব দুর্ঘটনা ঘটে। আমরা মনে করি, সড়ক দুর্ঘটনার এমন ভয়াবহ চিত্র যখন সামনে আসছে, তখন তার ভয়াবহতা অনুধাবন করা এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণের বিকল্প নেই। আমরা বলতে চাই, এবারে সড়ক দুর্ঘটনার পর্যবেক্ষণেও এটা সামনে আসছে যে, প্রাইভেটকার ও পিকআপের মুখোমুখি সংঘর্ষ, থেমে থাকা ট্রাকে বাসের ধাক্কা, বাস ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষ, ট্রাকের ধাক্কা, পিকআপ ও সিএনজি অটোরিকশার সংঘর্ষের মতো কারণে দুর্ঘটনা ঘটেছে। আমরা বলতে চাই, যখন প্রতিনিয়ত সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর খবর আসে তখন তার ভয়াবহতা অনুধাবন করার বিকল্প নেই। একইসঙ্গে স্মর্তব্য যে, প্রতিনিয়তই সড়কে ঝরছে লাশ। বারবার সড়কে দানব গতির কাছে পিষে যাচ্ছে জীবন। এভাবে সড়ক দুর্ঘটনায় যখন একের পর এক লাশের সংখ্যা বাড়ছে তখন এমন পরিস্থিতি কতটা মর্মান্তিক এবং ভয়াবহ তা আমলে নিতে হবে। এটাও লক্ষণীয়, একের পর এক ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে। কখনো গাড়ি উল্টে, কখনো মুখোমুখি সংঘর্ষ, আবার কখনো বা অতিরিক্ত গতি, কখনো নিয়ন্ত্রণ হারানোসহ নানা কারণে সড়কে দুর্ঘটনা ঘটছে এবং বাড়ছে লাশের সংখ্যা। সঙ্গত কারণেই সামগ্রিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ জরুরি। আমরা মনে করি, যখন সড়ক নিরাপত্তা নিয়ে নানা উদ্যোগ আর বিধিনিষেধকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে প্রতিদিনই সড়কের বাড়ছে লাশের সংখ্যা। বেপরোয়া গতির যানবাহন হঠাৎ থামিয়ে দিচ্ছে একাধিক জীবনের গতি- তখন এই বিষয়গুলোকে সহজ করে দেখার সুযোগ নেই। কেননা, বিভিন্ন সময়েই সড়ক দুর্ঘটনার ভয়ানক চিত্র পরিলক্ষিত হয়েছে। নসিমন উল্টে, মুখোমুখি সংঘর্ষ, রাস্তা সংস্কার না হওয়াসহ নানা কারণে সড়কে প্রাণ হারাচ্ছে মানুষ। এটাও বিবেচনায় নেওয়া জরুরি যে, সড়ক দুর্ঘটনায় নানা শ্রেণিপেশার মানুষ যেমন প্রতিনিয়ত চলে যাচ্ছে না ফেরার দেশে, তেমনি অনেক সম্ভাবনার মৃত্যু হচ্ছে অকালেই। সঙ্গত কারণেই, যখন সড়কে একের পর এক মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে, তখন সার্বিক পরিস্থিতি আমলে নেওয়ার বিকল্প থাকতে পারে না। মনে রাখতে হবে, বিভিন্ন সময়েই দুর্ঘটনার কারণ আলোচনায় এসেছে। বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালনা; বিপজ্জনক অভারটেকিং; রাস্তাঘাটের ত্রম্নটি; ফিটনেসবিহীন যানবাহন; যাত্রী ও পথচারীদের অসতর্কতা; চালকের অদক্ষতা; চলন্ত অবস্থায় মোবাইল বা হেডফোন ব্যবহার; মাদক সেবন করে ড্রাইভিং; রেলক্রসিং ও মহাসড়কে হঠাৎ ফিডার রোড থেকে যানবাহন উঠে আসা; রাস্তায় ফুটপাত না থাকা বা ফুটপাত বেদখলে থাকা; ট্রাফিক আইনের দুর্বল প্রয়োগ এবং ছোট যানবাহন বৃদ্ধিসহ নানা কারণ উঠে এসেছে। ফলে সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ অপরিহার্য বলেই প্রতীয়মান হয়। সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, একদিনে ঝরল অন্তত ৩০ প্রাণ- এমন মর্মান্তিক ঘটনা আমলে নিয়ে সড়ক নিরাপদ করতে হবে। একইসঙ্গে এটাও মনে রাখা দরকার, প্রতিনিয়ত দেশের কোনো না কোনো অঞ্চলে দুর্ঘটনায় মানুষ মারা যাচ্ছে। বিশেষ করে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর বিভীষিকা থেকে কিছুতেই যেন রক্ষা পাচ্ছে না মানুষ। সঙ্গত কারণেই একের পর এক ভয়াবহ দুর্ঘটনা কেন ঘটছে তা আমলে নিতে হবে এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে দোষীদের শনাক্ত করে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। দেশে সড়ক দুর্ঘটনার প্রধান কারণগুলো বিবেচনায় নিয়ে যত দ্রম্নত সম্ভব সর্বাত্মক উদ্যোগ গ্রহণ ও তার যথাযথ বাস্তবায়নে কাজ করতে হবে। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হয়েছে, কিন্তু যদি যাতায়াতের নিরাপত্তা নিশ্চিত না হয় তবে তার চেয়ে পরিতাপের আর কী হতে পারে! সড়কে মৃত্যুর বিভীষিকা এমন- যেন সড়ক পথ একটা মৃত্যুর ফাঁদ! সঙ্গত কারণেই সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের বিকল্প নেই।