গত কয়েকদিনের ধারাবাহিক লোডশেডিং-এ মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া বাসীর জনজীবন রীতিমতো অতিষ্ঠ। সরকার থেকে দৈনিক এক ঘণ্টা লোডশেডিং করার কথা বলা হলেও গজারিয়া উপজেলায় এলাকা দৈনিক ৪/৫ দৈনিক ঘণ্টা করে লোডশেডিং দেওয়া হচ্ছে। এদিকে বিদ্যুতের অভাবে উৎপাদন কমে গেছে গজারিয়ার বেশ কিছু শিল্প কারখানায়।
বিভিন্ন ইউনিয়নের বেশ কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী দৈনিক এক ঘন্টা করে লোডশেডিং দেওয়ার কথা থাকলেও এলাকাভেদে দৈনিক ৪/৫ ঘন্টা পর্যন্ত লোডশেডিং দেওয়া হচ্ছে। তীব্র গরমে বিদ্যুৎ না থাকায় ভোগান্তি চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন শিশু ও বৃদ্ধরা। হঠাৎ করে লোডশেডিং বেড়ে যাওয়ায় বাজারে তীব্র সংকট সৃষ্টি হয়েছে চার্জার লাইট ও ব্যাটারি চালিত ফ্যানের। ভবেরচর বাসস্ট্যান্ডের অধিকাংশ দোকানে খোঁজ নিয়ে জানা যায় ব্যাটারি চালিত চার্জার ফ্যানের ব্যাপক চাহিদা থাকলেও সেই পরিমাণ সরবরাহ নেই।
বিদ্যুতের অভাবে উৎপাদন কমে গেছে গজারিয়ার বেশ কিছু শিল্প কারখানায়, জেএমআই ভ্যাকসিন ইন্ডাস্ট্রি, বসুন্ধরা সহ কয়েকটি শিল্প কারখানায় খবর নিয়ে জানা গেছে গত কয়েকদিনে দৈনিক ৪/৫ ঘণ্টা লোডশেডিং থাকায় তাদের উৎপাদন উল্লেখযোগ্য হারে কমে গেছে। বিকল্প পদ্ধতিতে তেল অথবা গ্যাস পুড়িয়ে জেনারেটরের মাধ্যমে কোম্পানি চালু রাখতে গেলে খরচ বেড়ে যায়। এমতাবস্থায় বেড়ে যেতে পারে এ সকল শিল্প কারখানায় উৎপাদিত পণ্যের দাম।
বিষয়টি সম্পর্কে কুমিল্লা পল্লী বিদ্যুৎ সমিত-৩ এর গজারিয়া জোনাল অফিসের জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার (ওএন্ডএম) আবদুল হাকিমের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, গজারিয়া জোনাল অফিসের তাওতাধীন এলাকায় দৈনিক বিদ্যুতের চাহিদা প্রায় ৫০মেগাওয়াট যার ৮০ শতাংশ বিভিন্ন কারখানায় দেওয়া হয়। তবে জ¦ালানী সংকটের কারণে এখন তারা বিদ্যুৎ পাচ্ছেন মাত্র ৪৪-৪৬ মেগাওয়াট। সাধারণ গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের চাহিদা ২২/২৩ মেগাওয়াট তবে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী শিল্প কারখানায় বেশী বিদ্যুৎ দিতে গিয়ে সাধারণ গ্রাহক পর্যায়ে বেশী সময় লোডশেডিং দিতে হচ্ছে। এছাড়াও সরকারি কিছু জনগুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা যেমন, হাসপাতাল,থানা এসব জায়গায় বিদ্যুৎ বেশি দেওয়া হচ্ছে যার ফলে অন্য এলাকায় লোডশেডিং বেশি হচ্ছে।
লোডশেডিং এর কারণে শিল্প কারখানার উৎপাদনে প্রভাব পড়বে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কিছুকিছু এলাকায় সাধারণ গ্রাহকদের সাথে কিছু ইন্ডাস্ট্রির যৌথ সংযোগ রয়েছে যেমন,বসুন্ধরা টিস্যু পেপার ইন্ড্রাস্ট্রি,জেএমআই ভ্যাকসিন ইন্ডাস্ট্রি,সিনো বাংলা,প্যারাগন ইন্ডাস্ট্রি। লোডশেডিং এর ফলে এসব কারখানার উৎপাদন কিছুটা কমে যেতে পারে। তবে সুপারস্টার,স্কয়ারসহ কিছু কোম্পানিতে আলাদা করে লাইন দেওয়া হয়েছে সেখানে কোন লোডশেডিং হবে না। জ¦ালানি তেল ও এলএনজির দাম না কমলে বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো তাদের সক্ষমতা অনুযায়ী বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারবে না। পিডিবি থেকে পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ না পাওয়া পর্যন্ত এ সমস্যার কোন সমাধান নেই। সরকারি পরিকল্পনা মাফিক এ লোডশেডিং সবাইকে মেনে নিতে হবে।