আমরা গরিব মানুষ টাকা পয়সা নাই বলে মেয়ের চিৎিসা করাতে পারি না। বিয়ের পরে সন্তান হবার পরেই মানসিক ভারসাম্যে হিন হয়ে পরে আমাদের মেয়ে রুমা বেগম (৩০)। মেয়ে জামাই (রুমার স্বামী) রুমাকে আমাদের বাড়িতে রেখে যাওয়ার পর আমরা সাধ্যমত চিকিৎসা করিয়েছি। তবে আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারণে উন্নত চিকিৎসা করাতে পারিনাই মেয়েকে। দীর্ঘ এক যুগ শিকলবন্দী করে রেখেছি তাকে। রুমা মাঝে মাঝে হারিয়ে যায়, খুঁজে হয়। আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার মেয়ে রুমার উন্নত চিকিৎসার জন্য দাবি করছি। একথা গুলো বললেন বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার রাজিহার ইউনিয়নের চেঙ্গুটিয়া গ্রামের। দিনমজুর মজিবর হাওলাদার।
স্থানীয়রা জানান, দিনমজুর মজিবর হাওলাদারের প্রথম স্ত্রীর মৃত্যুর পর সৎ মায়ের কাছেই লালিত-পালিত হয় মেয়ে রুমা আক্তার। ১৪ বছর বয়সেই গৌরনদী উপজেলার বাঘমারা গ্রামের সেকেন্দার হাওলাদারের পুত্র সেলিম হাওলাদারের সাথে বিয়ে হয় রুমার। তাদের দাম্পত্য জীবনে প্রথম সন্তান জন্মগ্রহনের পর মারা যায়। এরপর দ্বিতীয় সন্তান জন্ম দেওয়ার পর থেকে অস্বাভাবিক আচরণ করা শুরু করে রুমা।একপর্যায়ে মানসিক ভারসাম্যেহীন হয়ে পরে। পরবর্তীতে স্বামী সেলিম হাওলাদার তার স্ত্রী রুমাকে ডাক্তার-কবিরাজ দেখিয়ে সুস্থ করতে না পেরে পিতা মজিবর হাওলাদারের বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। সেই থেকে বাবার বাড়িতে একটি পরিত্যাক্ত ঘরে ১২ বছর যাবত শিকলবন্দী অবস্থায় রয়েছে এক সন্তানের জননী রুমা।
রুমার পিতা মজিবর হাওলাদার ও সৎ মা সালেহা বেগম জানান, তিনবার বাড়ি থেকে অন্যত্র চলে গিয়েছিলো রুমা। পরে খোঁজাখুজি করে বাড়িতে নিয়ে আসা হয়েছে। মূলত ঘর থেকে বের হয়ে যাতে অন্যত্র হারিয়ে যেতে না পারে সেজন্য পায়ে শিকল বাঁধা হয়েছে। রুমার চিকিৎসার জন্য আমরা প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
এব্যপারে আগৈলঝাড়া উপজেলা সমাজ সেবা অফিসার সুশান্ত বালা বলেন, আগে আামার জানা ছিলোনা, আমাকে কেউ জানায়নি। আমি আজ (সোমবার) জানতে পেয়েছি। সকালে অফিসের কাজে বরিশাল এসেছি। আমি বরিশাল থেকে ফিরে সন্ধ্যায় অথবা আগামীকাল মঙ্গলবার সকালে রুমাদের বাড়ি যাবো। সে সরকারি ভাবে যে সুযোগ-সুবিধা পেতেপারে তার ব্যবস্থা করা হলে আমার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা করে।