রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলায় গত বছর দাম ভালো পাওয়ায় এবার রেকর্ড পরিমাণ জমিতে পাটের আবাদ করা হয়েছে। সঠিক পরিচর্যা ও আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় পাটের ফলনও অনেক ভালো হয়েছে। তবে শেষ মুহূর্তে বৃষ্টি না হওয়ায় ক্ষেতেই পাট মরে যেতে শুরু করেছে। শুধু তাই নয় পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ায় খালবিলের পানি শুকিয়ে গেছে। এতে চাষিরা পাট পঁচাতে ও আঁশ ছাড়াতে পারছে না।
উপজেলা কৃষি বিভাগ জানায়, পীরগঞ্জে চলতি মওসুমে ২ হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে কয়েকটি জাতের পাট চাষ করা হয়েছে। চাষিরা বলছেন, সনাতন পদ্ধতীতে পাট জাগ দিতে এখন পুকুর নদীর উপর নির্ভর করতে হয়। যে এলাকায় নদী রয়েছে সেই এলাকার পাট চাষিদের কোন সমস্যা নইে। যাঁরা পুকুর বা ডোবা জলাশয়ে জাগ দিয়ে থাকেন তাদের অনেকটা হয়রানির মধ্যে পড়েছে। টুকুরিয়া ইউনিয়নের মোনাইল গ্রামের চাষি শাহেদ আলী বলেন, গত বছর দাম ভালো পেয়ে এবার চাষিরা অনেক বেশি জমিতে পাট আবাদ করেছেন। উৎপাদনও ভালো হয়েছে। তবে শেষ মুহূর্তে অতিরিক্ত তাপমাত্রা ও খরার কারণে ক্ষেতেই পাটগাছ মরে যেতে শুরু করেছে। অন্যদিকে, পানির সংকটে চাষিরা পাট জাগ দেওয়া নিয়ে বিপাকে পড়েছেন অনেকেই। তাই অনেক চাষি এখন
পাট জাগ দিতে পারেননি। কাবিলপুর ইউনিয়নের বড় করিমপুর গ্রামের পাট চাষি শামসুল আলম বলেন প্রচন্ড দাবদাহে পাটের জমিতে রস নেই তাই পাট খেতে পানি সেচ দিয়ে আবাদ করা হয়েছে। আগাম পাট জাগ দেয়া নিয়ে বিপদে আছেন এলাকার চাষিরা। স্থানীয় পুকুরগুলোতে মাছের চাষ করা হচ্ছে। সেই পুকুরে কি ভাবে পাট জাগ দেই। এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাদেকুজ্জামান সরকার বলেন, উন্মুক্ত জলাশয়ে পাট জাগ দেওয়া চাষিদের জন্য সবচেয়ে সহজ মাধ্যম। তবে এবার বৃষ্টিপাত কম হয়েছে, যার কারণে পাট জাগ দেওয়া নিয়ে চাষিরা কিছুটা সমস্যায় পড়তে পারেন। তবে রিবন রেটিং পদ্ধতিতে পাট প্রক্রিয়া করা যায়। এতে অল্প পানি ও জায়গায় বেশি পরিমাণ পাট জাগ দেওয়া সম্ভব। সাধারণত পাট জাগের প্রক্রিয়া করতে সময় লাগে ২০-২৫ দিন। আর রিবন রেটিং পদ্ধতিতে ১০-১২ দিনে হয়ে যায়। এতে পাটের রং ও মান অনেক ভালো হয়। অবশ্য এ উপজেলার কৃষকদের রিবন রেটিং সম্পর্কে কোন ধারনা নেই। এ ব্যাপারে কোন উদ্যোগও পরিলক্ষিত হচ্ছে না।