জমাজমি নিয়ে দ্বন্দে পথে বসতে চলেছেন বগুড়া সারিয়াকান্দির সুলতান সরকার। পাচ্ছেন না কোন পুলিশি সহযোগীতা। পরিপক্ক পাটগাছ জমিতেই নষ্ট হচ্ছে।
সুলতান সরকার উপজেলার কুতুবপুর ইউপির বড়ইকান্দি গ্রামর মৃত হযরত আলীর একমাত্র পুত্র। তার বাবা হযরত আলীও মৃত আবুল হোসেনের একমাত্র পুত্র ছিলেন।
২০২০ সালের দিকে সুলতানের ৭ ফুফুর ওয়ারিশদের সাথে জমাজমি নিয়ে বিবাদ শুরু হলে সে ঢাকার একটি কোম্পানির চাকুরী ছেড়ে বাড়ীতে চলে আসেন।
২০২১ সালের ২৪ জানুয়ারি তিনি বগুড়া জজ আদালতে তার দাদার জমির বণ্টন মামলা দায়ের করেন। তার প্রতিপক্ষ জোড়পূর্বক জমি দখলের চেষ্টা করায় ২০২১ সালের ৮ জুন বগুড়া প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন। ২০২১ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর বন্টন মামলার পরিপ্রেক্ষিতে আদালত উভয়পক্ষকে স্হিতিবস্হা বজায় রাখতে নির্দেশ দেয়। এবং সারিয়াকান্দি থানার ওসিকে ২০২১ সালের ১৮ অক্টোবর স্হিতিবস্হা বজায় রাখতে আদেশ প্রদান করে বগুড়া জজ আদালত। ২০২১ সালের ২১ অক্টোবর জমিতে সাইনবোর্ড লাগানোকে কেন্দ্র করে সুলতানের স্ত্রী লাকী বেগম এবং তার মা ফেরদৌসি বেগমকে বেধড়ক মারপিট করে আহত করেন তার প্রতিপক্ষ। পরে তাদের মুমূর্ষু অবস্হায় সারিয়াকান্দি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় আরও একটি মামলা দায়ের করেন সুলতান। আদালতের নির্দেশমতো সারিয়াকান্দি পুলিশের প্রয়োজনীয় সহযোগীতা না পাওয়ার অভিযোগে গত ২০২১ সালের ২২ নভেম্বর পুনরায় বগুড়া প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন সুলতান সরকার। চলতি বছরের ২ ফেব্রুয়ারি তার প্রতিপক্ষ জোড়পূর্বক তার বোরোধানে পানি দেয়ার শ্যালো মেশিন ভাংচুর করে। এতে তার শ্যলো মেশিনের আওতাধীন প্রায় ১২ বিঘা জমির ধান নষ্ট হয়। এ বিষয়ে তিনি সারিয়াকান্দি থানায় অভিযোগ করেও কোন সুরাহা পাননি। প্রশাসনের পক্ষ হতে শ্যালো মেশিন চালুর কোন ব্যবস্হা গ্রহণ করা হয়নি। পরে কৃষকরা গত ২১ মার্চ সকালে একজোট হয়ে মানববন্ধন করলেও প্রশাসনিক কোন সুফল পাননি তারা। গত ২৯ এপ্রিল তার প্রতিপক্ষ জোড়পূর্বক তার জমির ধান কেটে নিয়ে যায়। এ বিষয়ে স্হানীয় চেয়ারম্যানের কাছে অভিযোগ করেন সুলতান। গত ১৫ জুন রাতের আঁধারে তার জমির পাটগাছ আংশিক কর্তন করে নষ্ট করে তার প্রতিপক্ষ। এ বিষয়ে তিনি সারিয়াকান্দি থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। তবে এতদিনে ওসির রোষানলে পতিত হওয়ায় এ অভিযোগের তদন্ত আজ পর্যন্তও তিনি পাননি। সর্বশেষ গত ১৬ জুলাই সারিয়াকান্দি থানায় জীবননাশের হুমকিতে তিনি সাধারণ ডায়েরী করেন।
এদিকে তার জমিতে পরিপক্ক হওয়া দেড় বিঘা জমির পাট তিনি কর্তন করতে পারছেন না। পাট কর্তন করতে গেলে তার প্রতিপক্ষরা তাকে বাঁধা দিচ্ছেন। পাটগাছ কর্তন বিষয়েও তিনি প্রশাসনিক কোন সহযোগীতা পাননি বলে তার অভিযোগ।
সুলতান বলেন, গত দুই বছরে জমিজমা নিয়ে দৌড়াতে দৌড়াতে আমি প্রায় পথে বসতে চলেছি। আদালতের নির্দেশ থাকার সত্ত্বেও সারিয়াকান্দি থানা আমাকে কোনরুপ সহযোগীতা করছে না। বরং উল্টো আমাকে হুমকি ধামকিতে রেখেছেন। গরীব মানুষ বলে আমি কোন সুবিচার পাচ্ছি না। এদিকে পরিপক্ক পাটগাছগুলো জমিতেই নষ্ট হচ্ছে। কাগজপত্র অনুযায়ী আমার প্রতিপক্ষরা কোন জমি আমার কাছে পাবেনা।
সুলতানের প্রতিপক্ষ একই গ্রামের রাজা প্রধান বলেন, আমার শশুর সুলতানের বাবাকে জমি লিখে দিলেও কিছু জমি আমরা পাব। বিষয়টি নিয়ে কোর্টে বেশ কয়েকটি মোকর্দমা চলমান রয়েছে।
সারিয়াকান্দি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বলেন, কোর্টের আদেশ পালন করতে আমি সদা সর্বদা প্রস্তুত। কোর্টের আদেশের জবাব আমি কোর্টেই দেব। সুলতান সরকার একজন গ্রাম্য দালাল শ্রেণির লোক।