বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহার রক্তদহ বিলের উপর নির্মিত বেইলি ব্রিজের পাটাতন খুলে যাওয়ায় বড় যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেলেও ছোট যানবাহনগুলো চলছে ঝুঁকি নিয়ে।
শনিবার সকালে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, স্থানিয়রা ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজের উপর গাছের ডাল রেখে যানবাহন চালকদের বিপদ সংকেত বুঝানোর চেষ্টা করছেন। ফলে এ সড়ক দিয়ে চলাচল করা বড় যানবহনগুলো ফিরে যাচ্ছে। এখানে স্থায়ী ভাবে সিসি ঢালাই ব্রিজ নির্মানের দাবি এলাকাবাসীর। এদিকে সড়ক বিভাগ বলছে ‘বেইলী ব্রিজের পরিবর্তে তাঁরা শিগরিই ঢালাই সেতু নির্মানের জন্য দরপত্র আহ্বান করবেন। জানা যায়, আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহার ইউনিয়নের ঐতিহাসিক রক্তদহ বিলের মূল খালের ওপড় ২০০৬ সালে সড়ক ও জনপদ বিভাগের তত্বাবধানে ৬০.৯৬ মিটার দৈর্ঘ্য স্ট্রিল ব্রীজ নির্মাণ করা হয়। এতে বিল পাড়ের ১২ গ্রামের মানুষের প্রায় ১০কিলোমিটার পথের দুরত্ব কমে যায়। কৃষিপণ্য ও শষ্য পরিবহন করা ও স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের যাতায়াত সহজ হয়। ফলে বিল পাড়ের কদমা, করজবাড়ি, কাশিমিলা, রামপুরা ও ময়ূর কাশিমালা, পারইলসহ ১২ গ্রামের মানুষের জীবন যাত্রার চিত্র বদলে যায়। কিন্তু উদ্বোধনের পর ১৬ বছর অতিবাহিত হলেও ঝুঁকিপূর্ণ এ ব্রিজটিতে উল্লেখযোগ্য কোনো সংস্কার কাজ করেননি কর্তৃপক্ষ। আর এ কারণেই বেইলি ব্রিজের পাটাতন খুলে যাওয়ায় বড় যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে জীবিকার তাগিদে ছোট যানবাহন যেমন- সিএনজি ও চার্জার চালিত অটোরিকশা, রিকশা, ভ্যান অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে।
সান্তাহার ইউনিয়নের দমদমা গ্রামের অটোরিকশা চালক জনি হোসেন বলেন, গাড়ি নিয়ে ব্রিজে ওঠার পর পুরো ব্রিজের পাটাতন নড়ে ওঠে। প্রচন্ড শব্দ হয়। যাত্রী নিয়ে ভয়ে ভয়ে ব্রিজ পারাপার হতে হয়।
আরেক অটোরিকশা চালক পিন্টু রহমান বলেন, এখন যে অবস্থা তাতে যাত্রী নিয়ে তো দূরের কথা ফাঁকা গাড়ী নিয়েও পার হতে ভয় লাগে।
আদমদীঘি সদর ইউনিয়নের ইউপি সদস্য শহিদুল ইসলাম বলেন, সান্তাহার জংশন স্টেশন থাকায় শহরটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ জায়গা। ব্রীজটি নির্মানের আগে সান্তাহার শহরে পৌঁছাতে আদমদীঘি হয়ে প্রায় ১২ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করতে হতো।
কদমা গ্রামের বাসিন্দা আজিজুল হক বলেন, বর্তমানে ওই ব্রীজটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ার পরও জীবন-জীবিকার তাগীদে ঝুঁকি নিয়েই ছোট ছোট যানবাহনগুলো এর ওপর দিয়ে চলাচল করতে বাধ্য হচ্ছে। দ্রুত ব্রীজটি সংস্কার করা না হলে যে কোনো মুহূর্তে পাটাতন ভেঙ্গে প্রাণহানিসহ বড় ধরনের দূর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা রয়েছে। এমতাবস্থায় আমাদের দাবী এখানে বেইলী ব্রীজের পরিবর্তে ঢালাই ব্রীজ নির্মাণ করা হোক।
এ বিষয়ে বগুড়া সড়ক ও জনপদ বিভাগের উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী আমানুল্লাহ আমান জানান, বেইলি ব্রিজের পরিস্থিতি দেখে আমারা মন্ত্রনালয়ে একটি প্রস্তাব পাঠিয়ে ছিলাম। সে অনুযায়ী অনুমোদন হয়েছে। এখন দরপত্র আহ্বান করে ঠিকাদারের মাধ্যমে বেইলী ব্রিজের স্থলে শিগগিরই ঢালাই সেতু নির্মাণ করা হবে।