দীর্ঘ এক যুগ পর নতুন নেতৃত্ব পেলো বগুড়ার শেরপুর উপজেলা বিএনপি। শনিবার (৩০জুলাই) বিকেলে দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে কাউন্সিলরদের সরাসরি ভোটে চারটি পদেই বাবলু-মিন্টু প্যানেলের প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন। এরমধ্যে উপজেলা বিএনপির সভাপতি পদে শহিদুল ইসলাম বাবলু প্রতীক (আনারস) ৩৯০ ভোট পেয়ে জয়ী হন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি শাহ আলম পান্না দেয়ালঘরি প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ২৩৩ ভোট। আর সাধারণ সম্পাদক পদে রফিকুল ইসলাম মিন্টু প্রতীক (ফুটবল) ৪৪৮ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বি শফিকুল ইসলাম আরফান প্রতীক (মোটরসাইকেল) নিয়ে পেয়েছেন ১৬০ ভোট।
এছাড়া সাংগঠনিক সম্পাদক দুইটি পদে ৩৮৮ ভোট পেয়ে আবদুল মোমিন ও শফিকুল ইসলাম ৩৩৮ ভোট পেয়ে জয়ী হন। তাঁদের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি হাসানুল মারুফ শিমুল পান ২১১ ভোট ও আরিফুর রহমান মিলন পেয়েছেন ২০২ ভোট। সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে ভোটগ্রহণ ও গণনা শেষে এই ফলাফল ঘোষণা করেন বগুড়া জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও পৌর মেয়র রেজাউল করিম বাদশা।
এরআগে উপজেলার গাড়ীদহ ইউনিয়নের মহিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্কুল মাঠে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আলহাজ¦ শফিকুল ইসলাম তোতার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওই সম্মেলনে প্রধান বক্তা ছিলেন- জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এড. সাইফুল ইসলাম। বিশেষ বক্তা ছিলেন-জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ফজলুল বারী তালুকদার বেলাল ও মোশরাফ হোসেন এমপি। এ ছাড়া বিশেষ অতিথি ছিলেন- জেলা বিএনপির নেতা আলী আজগর তালুকদার হেনা, জয়নাল আবেদীন চাঁন, মিসেস লাভলী রহমান, এমআর ইসলাম স্বাধীন, হামিদুল হক চৌধুরী হিরু, কেএম তৌহিদুল আলম মামুন, মাফতুন আহমেদ খান রুবেল, কেএম খায়রুল বাশার, তাহাউদ্দিন নাহিন, সহিদ-উন-নবী সালাম ও মনিরুজ্জামান মনি।
সম্মেলন আয়োজক কমিটি জানায়, উপজেলার নয়টি ইউনিয়নে মোট কাউন্সিলর রয়েছেন ৬শ’ ৩৯জন। এরমধ্যে ৬৩০জন কাউন্সিলর গোপন ব্যালটের মাধ্যমে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। উপজেলার বিএনপির চারটি পদে দুই প্যানেলের মোট আটজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন বলে সূত্রটি জানিয়েছেন। এই প্রথম বিএনপির কোনো সম্মেলনে নির্বাচনে সব প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়। যেখানে দলের সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া থেকে শুরু করে গোপন ব্যালটে ভোট দিয়ে নেতা নির্বাচনের ব্যবস্থা রাখা হয়। আর দলের কাউন্সিলররা সরাসরি ভোট দিয়ে নেতা নির্বাচন করেন।
দলীয় সূত্র জানান, এই উপজেলায় বিএনপির সর্বশেষ সম্মেলন হয়েছিল বিগত ২০০৯সালে। ওই সম্মেলনে আবদুল মান্নানকে সভাপতি ও শহিদুল ইসলাম বাবলু সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে ২০১১সালে উপজেলা বিএনপির কমিটি ভেঙে দিয়ে আহ্বায়ক কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়। এরপর আর কোনো সম্মেলন হয়নি।
এদিকে উপজেলা বিএনপির সম্মেলনকে ঘিরে নেতৃত্ব নিয়ে প্রকাশ্যে দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েন নেতাকর্মীরা। এরই ধারাবাহিকতায় পৃথক প্যানেল তৈরী করেন তারা। বগুড়া জেলা বিএনপি’র সাবেক আহ্বায়ক গোলাম মোহাম্মাদ সিরাজ এমপি সমর্থিত বাবলু-মিন্টু প্যানেল ও উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি (বর্তমানে বহিস্কৃত নেতা) পৌর মেয়র আলহাজ¦ জানে আলম খোকা সমর্থিত পান্না-আরফান প্যানেলে বিভক্ত হয়ে দুই পক্ষ কাউন্সিলে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।