জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে লক্ষ্মীপুরে বাসভাড়া বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। লক্ষ্মীপুর থেকে দূরপাল্লার বাস এবং লক্ষ্মীপুর-ঢাকা ও লক্ষ্মীপুর-চট্রগ্রাম সড়কে চলাচলকারী বাসগুলোর ভাড়া বাড়িয়ে দিয়েছেন মালিকেরা। তাই শনিবার সকাল থেকে বাড়তি ভাড়া দিতে হচ্ছে যাত্রীদের। এতে যাত্রীদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
সরেজমিন পরিদর্শন করে দেখা যায়, শনিবার (৬ আগস্ট) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত জেলার ঝুমুর সিনেমা হল, উত্তর তেমুহনী, দক্ষিণ তেমুহনী ও বাস টার্মিনাল এলাকায় দূরপাল্লার বাস বন্ধ থাকে। এতে যাত্রীদের সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
তবে বাস মালিক-শ্রমিক ও যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে,ডিজেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় তাৎক্ষণিক প্রভাব পড়েছে সড়কে। লক্ষ্মীপুর-রামগতি সড়কে (আন্তঃজেলা) গ্যাসচালিত ৩২টির লোকাল বাসের মধ্যে ৩০টিই বন্ধ রয়েছে।
লক্ষ্মীপুর-ঢাকা বাসভাড়া ছিল ৪৫০ টাকা, সকাল থেকে যাত্রীদের কাছ থেকে নেওয়া হচ্ছে ৫০০ শত টাকা। একই রুটে এসি বাসের ভাড়া ছিল ৫০০ টাকা সেটা করা হয়েছে ৬০০ টাকা। এ ছাড়া লক্ষ্মীপুর থেকে চট্র্রগ্রামের বাসের ভাড়া ছিল ৩৫০ টাকা এখন থেকে ১০০ টাকা বেশি নেওয়া হচ্ছে যাত্রীদের কাছ থেকে।
এছাড়া লক্ষ্মীপুর পৌর শহরের বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা যায়, যাত্রীদের কাছ থেকে বাড়তি ভাড়া নিচ্ছেন বাস কাউন্টারে থাকা কর্মীরা। ঢাকা এক্য্রপ্রেস এর কাউন্ডার ইনচাজং জাহাঙ্গীর আলম বলেন, মালিকপক্ষ থেকে বাড়তি ভাড়ার বিষয়ে তাঁদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ কারণেই তাঁরা বাড়তি ভাড়া নিচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘যে হারে তেলের দাম বেড়েছে, তাতে পুরোনো ভাড়ায় যাত্রী নিয়ে পোষাবে না।
সদর উপজেলার তাজল ইসলাম বলেন,লক্ষ্মীপুর থেকে ঢাকা যাওয়ার জন্য বাস টার্মিনালের কাউন্টারে এসেই শুনি বাসভাড়া বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। সরকার জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে বাসভাড়া বাড়িয়ে দেওয়া হলো। আসলে সব চাপ তো যাচ্ছে সাধারণ মানুষের ওপরে। মানুষ এখন বড় অসহায় অবস্থায় আছে।’ তাজল ইসলাম আরো বলেন, ‘মাত্র তো কয়দিন আগে একবার বাসভাড়া বাড়ল। এখন আবার বাড়িয়ে দেওয়া হলো। ইচ্ছামতো বাড়ায়। কোথাও কোনো নিয়ন্ত্রণ নাই।
লক্ষ্মীপুর থেকে চট্রগ্রাম গামী শাহী পরিবহনের ভাড়া ছিল ৩৫০ টাকা। শনিবার সকালে যে বাস চট্রগ্রামে ছেড়ে গেছে সেটিতে যাত্রীরা ভাড়া দিয়েছেন ৪৫০ টাকা। অন্যান্য পরিবহনেও একইভাবে ১০০ টাকা বাড়তি ভাড়া নিচ্ছে। তবে দূরপাল্লার বাস সকাল থেকে কম যাচ্ছে। জানতে চাইলে ইকোনো পরিবহন এর ব্যবস্থাপক ইব্রাহিম বলেন, ‘ঢাকা থেকে কোনো বাস আসছে না। যেহেতু জ্বালানির দাম বেড়েছে, তাই আমরা যাত্রীপ্রতি ১০০ টাকা ভাড়া বেশি নিয়েছি। ঢাকা থেকে পরবর্তী সিদ্ধান্ত এলে সেটি অনুযায়ী ভাড়া নেওয়া হবে। লক্ষ্মীপুর বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো: শাহজাহান বলেন, ‘ভাড়া বাড়ানো ছাড়া আমাদের তো আর কোনো উপায় নেই। তারপরও আমরা কম বাড়িয়েছি। সরকার জ্বালানির দাম পুনর্বিবেচনা করলে বাসভাড়াও কম-বেশি হবে।
অতিরিক্ত বাস ভাড়া আদায়ের বিষয়ে জেলা প্রশাসক মোঃ আনোয়ার হোছাইন আখন্দ জানান,যাত্রীদের থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হলে ভ্রাম্যমান আদালত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবে।